কাজি মুহাম্মাদ হানিফ:
ইসলাম সন্ত্রাসীর ধর্ম ! মুসলমান মাত্রই সন্ত্রাসী ! তাহলে বাকিগুলো কি ? “….লাদেন মানুষ হত্যা করেছে, আইএস মানুষ হত্যা করেছে, তালেবান মানুষ হত্যা করেছে, বোকো হারাম মানুষ হত্যা করেছে, যেহেতু তারা ইসলাম ধর্মের অনুসারি, তাই ইসলাম একটি সন্ত্রাসী ধর্ম।….” আজকাল অনেকেই এ ধরনের উদ্ভট যুক্তি উপস্থাপন করে ইসলাম ধর্মকে সন্ত্রাসীর ধর্ম এবং মুসলমান মাত্রই সন্ত্রাসী বলে আখ্যা দিতে চায়। যারা এ ধরনের উদ্ভট যুক্তি ব্যাবহার করে থাকে, তাদের কাছে আমার প্রশ্ন- লাদেন, আইএস, তালেবান, বোকো হারাম ইসলামী নামধারী হওয়ায় তার দায় যদি ইসলাম ধর্ম ও সকল মুসলমানকে নিতে হয়, তবে অন্যান্য সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোর দায় কেন তাদের ধর্ম বা মতাদর্শী কেন্দ্রীয় অংশকে নিতে হবে না ? যেমন:
১) কমিউনিস্ট তথা নাস্তিকরা চীনে সাড়ে ৬ কোটি, সোভিয়েত রাশিয়ায় ২ কোটি, কম্বোডিয়ায় ২০ লক্ষ, উত্তর কোরিয়ায় ২০ লক্ষ, আফ্রিকায় ১৭ লক্ষ, আফগানিস্তানে ১৫ লক্ষ, পূর্ব ইউরোপে ১০ লক্ষ, ভিয়েতনামে ১০ লক্ষ, ল্যাটিন আমেরিকায় ১.৫ লোককে হত্যা করেছে। এ দ্বারা প্রমাণিত হয় কমিউনিজম তথা নাস্তিকতা একটি সন্ত্রাসী মতবাদ এবং যারা নাস্তিক তারা প্রত্যেকেই টেরোরিস্ট। ২) খ্রিস্টানরা প্রথম বিশ্বযুদ্ধে প্রায় ২কোটি মানুষ হত্যা করেছে। এশিয়া আফ্রিকার মুসলিম জনপদে দখলদারিত্বের জন্য গণহত্যার শিকার হয়েছে প্রায় ১কোটি নিরীহ মানুষ। জার্মানির খৃষ্টার হিটলার ৫০ লক্ষ ইহুদীকে হত্যা করেছে। আমেরিকা ১৯৪৭ সালে ২য় মহাযুদ্ধে জাপানে আনিবক বোমা মেরে হত্যা করেছে প্রায় ৬০ লাখ মানুষ। ইরাক-আফগানিস্তান-ভিয়েতনামে কয়েক কোটি লোককে হত্যা করেছে। এ দ্বারা প্রমাণিত হয় খ্রিস্টান ধর্ম একটি সন্ত্রাসী ধর্ম এবং সকল খ্রিস্টানই টেরোরিস্ট। ৩) ইহুদীরা ফিলিস্তিনে লক্ষ লক্ষ মানুষকে হত্যা করছে। এরদ্বারা প্রমাণ হয় ইহুদী ধর্মই সন্ত্রাসী ধর্ম এবং ইহুদী মাত্রই সন্ত্রাসী। ৪) হিন্দুরা ১৯৬১ তে আলিগড়ে, ১৯৬২-তে মধ্যপ্রদেশে, ১৯৬৪ তে মহারাষ্ট্রে, ১৯৬৭-তে বিহারে, ১৯৬৯-তে গুজরাটে, ১৯৭০-এ মহারাষ্ট্রে, ১৯৭১-এ বিহারে, ১৯৭৮-এ আলিগড়ে, ১৯৭৮-৮০ পর্যন্ত বিহারের জামশেদপুর ও উত্তর প্রদেশের ভানারসিতে, ১৯৮০ তে উত্তর প্রদেশে, ১৯৮১- তে আলিগড়ের মিনাকশিপুরাম ও বিহারশরীফে, ১৯৮২-তে উত্তরপ্রদেশে মিরাটে, ১৯৮৩-তে আসামে, ১৯৮৩-তে কর্নাটে, ১৯৮৬ তে বিহারে, ১৯৮৭-তে, ১৯৮৯-তে বিহারে, ১৯৯০-৯১-এ আলিগড়ে, ১৯৯২-৯৩-এ মুম্বাই, সুরাট, আহমেদাবাদ, কানপুর, দিল্লিসহ সমগ্র ভারতে, ১৯৯৭-এ তামিলনাড়ুতে, ২০০০-এ আহমেদাবাদে, ২০০১-এ কানপুরে, ২০০২ গুজরাটে দাঙ্গা করে কয়েক কোটি মানুষকে হত্যা করেছে।
এর দ্বারা প্রমাণ হয় হিন্দুধর্ম একটি সন্ত্রাসী ধর্ম এবং হিন্দুমাত্রই সন্ত্রাসী। ৫) বৌদ্ধরা মায়ানমারে, থাইল্যান্ডে, ফিলিপাইনে লক্ষ লক্ষ মানুষকে হত্যা করেছে। এ দ্বারা প্রমাণ হয় বৌদ্ধ ধর্ম একটি সন্ত্রাসী ধর্ম এবং বৌদ্ধ মাত্রই সন্ত্রাসী। সোজা ভাষায় আইএস, তালেবান আর আল কায়েদার দায় যদি সকল মুসলমান এবং পুরো ইসলাম ধর্মকে নিতে হয়, তবে নাস্তিক, ইহুদী, খ্রিস্টান, বৌদ্ধ, ইহুদীদের সন্ত্রাসীপনার দায়ও তাদের মতবাদ বা ধর্মগুলোকে নিতে হবে। এবং সেই মতবাদ ও ধর্মের সকল অনুসারীকেই সন্ত্রাসী বা টেরেরিস্ট নামে ডাকতে হবে।
সংগৃহীত।