ওলী উল্লাহ আরমান::
ব্যস্ততম একটি দিন কাটিয়েছি আজ৷ ভিন্ন ভিন্ন স্থানে প্রতিষ্ঠিত কিছু তরুণ আলেমের সাথে মতবিনিময়ের মওকা হয়েছে৷ অনেকে তার নামে উচ্ছ্বাস ব্যক্ত করেন এমন এক মুহতারাম রাত সাড়ে তিনটায় একটি কাজে শামিল হবার জন্য মোবাইলে মেসেজ দিয়েছেন৷ আমিও ইতিবাচক জবাব দিয়েছি৷ টেবিলটক এবং আকর্ষণীয় বয়ানে অনেকের মনযোগ কেড়েছেন, এমন একজনের সাথে বেশ কয়েকদিনের ধারাবাহিকতায় আজও মতবিনিময় হয়েছে৷
একটি প্রতিষ্ঠিত দাওরায়ে হাদীস মাদরাসার মুহতামিম সাহেবের আমন্ত্রণে দুপুরের খাবার খেয়েছি তার সাথে৷ গভীর হৃদ্যতাপূর্ণ পরিবেশে খানপিনা এবং মতবিনিময়ে তার নায়েবে মুহতামিম এবং নাজিমে তালীমাত সাহেবও ছিলেন৷ তাদের ভাবনা মাদরাসার চৌহদ্দীর বাইরে এখনো যেতে চায় না৷ আসরের পর দু’জন ব্যবসায়ী আলেমের সাথে চায়ের টেবিলে বসেছি৷ টাকার বান্ডিল বড় করার বাইরে তারা কিছুই ভাবছে না৷
বাদ মাগরিব আরেকটি মতবিনিময়ের অংশ হয়েছি৷ একাধিক মাদরাসায় বুখারীর দরস দেন এমন একজন শায়খুল হাদীস, একটি আলিয়া মাদরাসার অধ্যক্ষ এবং লেখালেখি করেন এমন আরেকজন সেখানে ছিলেন৷ সবার ভাবনা দেখে আমার মনে জোরেসোরে একটা প্রশ্ন উঠেছে, অবশ্য প্রশ্নটি ইদানীং মাঝেমাঝেই মনের কোনে ভেসে উঠছে৷ প্রশ্নটি হচ্ছে; সময়ের চাহিদা থেকে আমরা স্রেফ মাদরাসা-মসজিদ ওয়ালারা দূরেই থেকে যাচ্ছি না তো?
তীব্রবেগে ধেয়ে আসা আগুন সম্পর্কে আমরা চোখকান বন্ধ রেখে উদাসীন থাকতেই কি নিরাপদ বোধ করছি?
এখানটাতেই মাদরাসাওয়ালাদের সাথে আমার ভাবনা মিলতে চাইছে না৷ প্রবল বৈপরীত্য টের পাচ্ছি৷ আখেরে আমিও তো একজন মাদরাসা সংশ্লিষ্ট, সে কারণে নিমরাজি হয়েও শেষ পর্যন্ত চুপ থাকাটাই হয়তো নিজের নিয়তি হিসেবে মেনে নিচ্ছি৷ কিন্তু বেচাইন মন তবু জানতে চায়, যারা ভাগ্যনিয়ন্তার ভূমিকায় রয়েছেন, তারা সজাগ-সচেতন আছেন তো?