মাদারাসা ছাত্রদের সম্পর্কে কেবল নেতিবাচক কথাই আমরা শুনে আসছি৷ কিন্তু এমন তরুণও আছে, যাঁদের জন্য গর্ব করতে পারে বাংলাদেশ৷
ওসামা বিন নূর ও ‘ইয়ুথ অপরচুনিটিস’
শৈশব কৈশোর কেটেছে গ্রাম ও শহরে৷ দ্বিতীয় শ্রেণি পর্যন্ত গ্রামের মাদ্রাসায় পড়েছেন তিনি৷ ভীষণ দুরুন্ত আর ক্রিকেট পাগল৷ দাখিল এবং আলিম পাস করে ব্যাচেলর অফ ডেন্টাল সার্জারিতে পড়া৷ পরিবার থেকে বরাবরই নৈতিক শিক্ষা পেয়েছেন নূর, শিক্ষা পেয়েছেন সেবামূলক কাজ করার৷ আর তাই স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘ভলান্টিয়ার ফর বাংলাদেশ’-এর সাথে সম্পৃক্ত হন তিনি৷ ঢাকা জেলার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়ে কাজ শুরু করেন৷ বন্ধু মানিককে নিয়ে তরুণদের জন্য কিছু করার ভাবনা শুরু করেন৷ তরুণদের জন্য কোথায় কী সুযোগ অপেক্ষা করছে, তা জানানোর জন্য দু’জনে মিলে তৈরি করেন ফেসবুক পেজ ‘ইয়ুথ অপরচুনিটিস‘৷
এরপর এই ফেসবুক পেজটির মাধ্যমেই তাঁরা স্কলারশিপ, প্রতিযোগিতা, সম্মেলন, এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রাম, ফেলোশিপ, ইন্টার্নশিপ ইত্যাদি জানিয়ে বেড়াচ্ছেন ১৯২টি দেশের তরুণদের৷ প্রতিদিন গড়ে ২০ হাজার তরুণ তাঁদের এই পাতায় ঢুঁ মারেন৷ কিছুদিন ইয়ুথ অপর্চুনিটিস ফ্রিবেসিক্স ডটকম-এর সাথে পার্টনারশিপ করে, যার ফলে বাংলাদেশের যেসব তরুণ রবি এবং গ্রামীণফোন ব্যবহার করেন, তাঁরা ফ্রিবেসিক্স ডটকম-এর অ্যাপ্লিকেশনের মাধ্যমে ইউথঅপ ডটকম ওয়েবসাইটটি ‘ফ্রি’, অর্থাৎ কোনো ডেটা চার্জ ছাড়াই ব্যবহার করতে পারছেন৷ শুধু বাংলাদেশ নয়, জাম্বিয়া, কেনিয়া, ঘানা, মালাউই, তানজানিয়া থেকে ‘এয়ারটেল’ ব্যবহারকারী, কলম্বিয়া, সেনেগাল থেকে ‘টিগো’ ব্যবহারকারী, ফিলিপাইনেস থেকে ‘স্মার্ট কমিউনিকেশন’ ব্যবহারকারী, ইন্দোনেশিয়া থেকে ‘ইন্দোস্যাট’ ব্যবহারকারী, পাকিস্তান থেকে ‘টেলিনর’ ব্যবহারকারী, দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে ‘সেল সি’ এবং বলিভিয়া থেকে ‘ভিভা’ ব্যবহারকারীরাও ইউথঅপ ডটকম ওয়েবসাইটটি ‘ফ্রি’ ব্রাউজ করতে পারছেন৷
এখানেই শেষ নয়৷ নূরের আরো বড় পরিকল্পনা রয়েছে, যা বাস্তবায়ন করাই তাঁর মূল লক্ষ্য৷ এ বছর ফোর্বস-এর এশিয়ার সামাজিক উদ্যোক্তা তালিকার শীর্ষ ৩০ জনের একজন মনোনীত হন তিনি৷ এছাড়া মানুষের জীবন মান উন্নয়নে দীর্ঘস্থায়ী ভূমিকা রাখায় ২০১৬ সালের ‘দ্য কুইন্স ইয়াং লিডার্স’ অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন ওসামা বিন নূর৷ তাঁর হাতে এই সম্মাননা তুলে দেন রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথ৷
সৌজন্যে : ডয়েচে ভেলে