ফয়জুল আল আমীন : রমজান মাস ইসলামের ইতিহাসে বহু গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার সাক্ষী। এ মাসেই পবিত্র কোরআন নাজিল হয়েছে। এ মাসে লাইলাতুল কদর নামে এমন একটি রাত রয়েছে, যার ইবাদত হাজার মাসের ইবাদতের চেয়েও উত্তম। এ মাসের ১৭ রমজানে মক্কার কাফের ও মুশরিকরা মদিনায় নতুন মুসলমানদের নিশ্চিহ্ন করতে তাদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েছিল বদর নামক প্রান্তরে। প্রিয় মহানবী (সা.) মাত্র ৩১৩ জন সাহাবি নিয়ে তাদের মোকাবিলা করে বিজয়ী হয়েছিলেন। এখানে রমজান মাসের দিবস পরিচিতিগুলো সংক্ষেপে উল্লেখ করা হলো।
লাইলাতুল কদর : এ রাতকে বলা হয় বছরের সেরা রাত। এ রাতে পরম করুণাময় আল্লাহ তায়ালার কাছে প্রার্থনা করা হাজার মাসের প্রার্থনার চেয়ে উত্তম। এই রাতে আল্লাহর নির্দেশে ফেরেশতাগণ পৃথিবীতে নেমে আসেন। বিভিন্ন বর্ণনা অনুযায়ী, রমজান মাসের বিশেষ করে ১৯, ২১, ২৩ ও ২৭তম রাতসহ শেষ দশ দিনের বেজোড় রাতের মাঝেই লাইলাতুল কদর রয়েছে।
আল-কুদস দিবস : রমজান মাসের শেষ শুক্রবার নবী দাউদ (আ.)-এর পুত্র নবী সোলায়মান (আ.) জেরুজালেম নগরী প্রতিষ্ঠিত করেন এবং মহান আল্লাহর মহিমা তুলে ধরতে সেখানে গড়ে তোলেন মসজিদ আল-আকসা। বায়তুল্লাহ ও মদিনার মসজিদে নববীর পর তৃতীয় পবিত্রতম স্থান হচ্ছে মসজিদুল আকসা। ১৯৪৫ সালের তৎকালীন ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদী চক্র ফিলিস্তিনের পবিত্র ভূমিকে অন্যায়ভাবে জবরদখল করে প্রতিষ্ঠিত করে নতুন রাষ্ট্র ইসরাইল। অধিকার হারা এই ফিলিস্তিনি নাগরিকগণ সেই থেকে ইসরাইলের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে যাচ্ছে। রমজান মাসের শেষ শুক্রবার বিশ্বের মুসলমান ইহুদিদের অবৈধ দখলের বিরুদ্বে ঘৃণা প্রকাশ করে এবং ইহুদি রাষ্ট্র ইসরাইলের কবল থেকে ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রকে মুক্ত করার জন্য পুনরায় শপথগ্রহণ করে। তাই রমজানের শেষ শুক্রবারকে ‘আল-কুদস দিবস’ বলা হয়।
১০ রমজান : এদিন নবী (সা.) পরিবারে ইমাম হাসান (রা.) জন্ম গ্রহণ করেন।
১২ রমজান : হজরত ঈসা (আ.)-এর কাছে ইঞ্জিল শরীফ নাজিল হয়।
১৭ রমজান : বদরের যুদ্ধ সংগঠিত হয়। হিজরি ২য় সালে।
১৯ রমজান : এদিন আমিরুল মোমেনিন ইমাম আলী (রা.) শহীদ হন।
ঈদুল ফিতর : ঈদের চাঁদ দেখার মধ্য দিয়ে শেষ হয় সংযমের মাস রমজান। শুরু হয় শাওয়াল মাস। প্রতি বছর শাওয়াল মাসের ১ তারিখ বিশে^র মুসলমানরা পালন করেন- ঈদুল ফিতর। ঈদের চাঁদ দেখা থেকে ঈদের সকাল হওয়ার মাঝে আমরা একটি রাত পাই। এই রাতের গুরুত্ব অনেক। এ প্রসঙ্গে নবী (দ.) পরিবারের চতুর্থ ইমাম জয়নুল আবেদীন (রা.) বলেন, ‘রমজান মাসের শেষে এবং ঈদের দিনের সকালে আগের রাতের গুরুত্ব লাইলাতুল কদর রাতের মতোই।’
মহান রাব্বুল আলামীন আমাদেরকে রমজানের দিবসগুলো পালন করার তৌফিক দান করুন।
সৌজন্যে : প্রিয় ইসলাম, প্রিয়.কম