لعنة الله علي الكاذيبين মিথ্যাবাদীদের উপর আল্লাহর লা’নত। (Al Imran/61)
রশীদ জামীল::
মুনকিরীনে কোরআন এবং গোস্তাখে রাসূল আহাফি শায়খদের মলূঊনিয়্যাত
—লাউয়া’দের আমরা লাউয়াই বলব
আমার নবীকে উলঙ্গ করবে আর আমি তাকে সম্মান করে কথা বলব! কোরআনে কারীমের আয়াতকে বিকৃত করে যেমন খুশি বকবে, তবুও তাদের সম্মান করে কথা বলব, অত্যন্ত দুঃখিত, ততটা ভদ্র আমি হতে পারিনি। কখনো হতেও চাইব না। থাকুন আপনারা আপনাদের মুসলিহত নিয়ে। করুন আচরণ ইলমি ব্যাকরণে। গোস্তাখে রাসূল আর মুনকিরীনে কোরআনের সাথে আমরা আর শালীনতা প্রদর্শনে রাজি নই।
কেনো তারা ‘লাউয়া?
”বিশ্বনবী উলঙ্গ হয়ে গোসল করতেন”!
__________ আব্দুর রাজ্জাক বিন ইউসুফ (লাউয়া)
ইবরাহীম আলাইহিস সালাম মুসলিম জাতির পিতা নন!
__________ মতিউর রহমান মাদানি (লাউয়া)
‘কা-ত্বাইয়িস সিজিল্লিলিল কুতুব’ বাক্যে ব্যবহৃত ‘ত্বাই’ শব্দটিরই ইরেজিতে রূপ হচ্ছে ‘টাই’!
__________ কাজী ইবরাহীম (লাউয়া)
পাগড়ী শিখদের পোশাক, টুপি হল গান্ধির পোশাক।
__________ আমানুল্লাহ বিন ইসমাইল (লাউয়া)
এদের এই কথাগুলো যদি কোরআন-হাদিসের বিকৃতি হয়ে থাকে, তাহলে অবশ্যই তারা লাউয়া। আর লাউয়াদের লাউয়া বলতে আমাদের কোনো সীমাবদ্ধতা নেই।
দুই
বড়ভাইদের কেউ কেউ লাউয়া শব্দটির প্রয়োগ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। বলবার চেষ্টা করছেন, ”মুমিনের উপর ( সে যত বড় অন্যায় কারীই হোক না কেন) লা’নত করা কেয়ামত ঘটে যাওয়ার মত ব্যপার! কোনো কাফেরের উপরও তো সুনির্দিষ্টভাবে লা’নত দেয়া জায়েয নেই যতক্ষন পর্যন্ত তার কুফরের হালতে মৃত্যুর বিষয়ে অহীর মাধ্যমে নিশ্চিত না জানা যাবে ৷ সেখানে ঈমানদারের উপর লা’নত!!”
তাহলে এতদিন আমরা কিসের ভিত্তিতে চিল্লাফাল্লা করলাম? নাস্তিক-মুর্তাদদের বিরুদ্ধে এত আন্দোলনের উৎস কোথায়? শরয়ী উসূল কী? শাহবাগের কতিপয় বখাটে মুসলমান কোরআন এবং নবীকে নিয়ে উলটাপালটা বকেছিল। কত কাহিনি করলাম আমরা। এরা যে এখন কোরআনকে নিয়ে উলটাপালটা বকে চলেছে, এখানে আমরা নীরব কেন? নাকি নামের সাথে মাওলানা-মুফতি অথবা শায়খ যুক্ত করে ফেললে যা খুশি করার লাইসেন্স মিলে যায়? তাদের বিরুদ্ধে আর কথা বলার থাকে না।
আবুল আ’লা মওদুদি বলেছিলেন, রাসূলকে সিওয়া আওর কায়ী মে’ইয়ারে হাক্ব নেহি। রাসূল ছাড়া আর কেউই সত্যের মাপকাটি নন। প্রতিবাদে ফেটে পড়লাম আমরা। উলামায়ে কেরামের নেতৃত্বে। আর এখন যে খোদ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে নিয়ে ফাইজলামো টাইপ কথাবার্তা বলছে নামের সাথে শায়খ জুড়ে দেয়া যামানার দাজ্জালরা, উলামায়ে কেরাম নীরব কেনো? নামকাওয়াস্তে প্রতিবাদ কেনো? এভাবে চলতে দিলে ভবিষ্যত কী? ভাবনায় আছে আমাদের?
সমস্যা হচ্ছে, ওহীর দরজা বন্ধ। আর কারো ব্যাপারে নতুন করে ওহী আসবে না। এখন কথা ও কাজের উপর ভিত্তি করেই শরীয়তের হুকুম লাগাতে হবে আর না হয় চুপ করে বসে থাকতে হবে। ফারীকুন ফিল জান্নাতি ওয়া ফারীকুন ফিস-সাঈর। অবস্থান পরিষ্কার। রাস্তা ক্লিয়ার।
তিন
কোরআনে কারীমকে অস্বীকার করলে সে আর মুসলমান থাকতে পারে না। কোরআন অস্বীকার কাকে বলে? কীভাবে হয়? কোরআন কাকে বলে?
কোরআন কি শুধুই হরফের নাম? নাকি অর্থও?
আমরা তো জানি এবং সম্ভবত সঠিকভাবেই জানি, আল-কোরআনু হুয়া ইসমুন-লিল আলফাজ ওয়াল মায়ানি।’ শব্দ এবং অর্থ, দুটো মিলেই কোরআন। তার মানে, কোরআনের একটি শব্দ অস্বীকার করলে সে যেমন ইসলাম থেকে খারিজ, কোরআনের একটি শব্দের অর্থ অস্বীকার করলে সেও আর ইসলামের দায়েরার ভেতরে থাকে না।
মতিউর রহমান মাদানি ‘মিল্লাতা আবীকুম ইবরাহীম’ আয়াতের প্রকৃত অর্থকে অস্বীকার করছেন! কাজি ইবরাহী, ‘কা-ত্বাইয়িস-সিজিল্লিলিল কুতুব’ আয়াতের অর্থ অস্বীকার করছেন। আব্দুর রাজ্জাক বিন ইউসুস হাদিসের অর্থ বিকৃতি ঘটিয়ে বলছেন, বিশ্ব উলঙ্গ হয়ে গোসল করতেন! জানতে চাই এরা মুনকিরীনে কোরআন এবং মুনকিরীনে হাদিসের ক্যাটাগরিতে পড়ে কিনা? যদি পড়ে, তাহলে আমাদের ব্যবহৃত শব্দ ‘লাউয়া’ বা লা’নাত উল্লাহি আলাইহি’ পারফেক্ট ম্যাচ করছে। আর তারা যদি সঠিক বলে থাকেন, তাহলে উলামায়ে কেরামের উচিত তাদের ডিফেন্স করে বিবৃতি দেয়া। আল্লাহকো রাজি করনা, শয়তানকোভি নারাজ না করনা, এটা তো হয় না।
চার
সম্মানিত উলামায়ে কেরাম!
শ্রদ্ধেয় বড়ভাইগণ!
আপনারা বড়রা আপনাদের অবস্থান থেকে এভাবেই সহনশীল এবং শালীনতা দেখিয়ে আসছেন। জানি না আপনারা লক্ষ্য করছেন কিনা, আপনাদের এই সহজিয়া সারল্যকে দুর্বলতা ভেবে দিনকে দিন তারা তাদের বকওয়াসের মাত্রা বাড়িয়ে দিচ্ছে। প্রথম প্রথম তারা দারুল উলুম দেওবন্দের উলামায়ে কেরামকে কাফির-মুশরিক বলছিল। আপনারা শালীনভাবে জবাব দিলেন। ভাবলেন, এটা উলামায়ে কেরামের আপোসের এখতেলাফ। রয়ে-সয়ে কথা বলা দরকার।
অতঃপর তারা উলামায়ে কেরামকে বাদ দিয়ে সাহাবায়ে কেরামকে ধরল। সাহাবায়ে কেরামকে নজর-আন্দাজ করে ইচ্ছামত মাস’আলা-মাসাঈল মার্কেটিং করা শুরু করল। আপনারা শালীনতার বাউন্ডারি থেকে বেরুলেন না। কারণ, উলামাদের অভ্যন্তরীন এখতেলাফ! ঘরোয়া ব্যাপার। আওয়ামুন-নাসের সামনে নিয়ে যাওয়া ঠিক হবে না।
জিহবা লম্বা হতে শুরু করল তাদের। আগাতে লাগল টার্গেট পয়েন্টের দিকে। মুসলমানের মূল পয়েন্ট ‘কালিমা’। তারা জানালো, ‘কালিমার ‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ ঠিকাছে। এর সাথে একই সারিতে ‘মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ’ যুক্ত করা যাবে না, তাহলে শিরক হয়ে যাবে। তবুও আপনারা নড়েচড়ে উঠলেন না। ভাবলেন না কলিজায় হাত ঢুকিয়ে দিয়েছে।
ফলাফল কী হল? এই যে আপনারা আদব-লেহাজ আর তমীযের নজরানা পেশ করলেন, ফলাফলটা কী হল? এখন তারা আর রাসূলের হাদিসকে দুর্বল বানাচ্ছে না, খোদ রাসূলের চাদর ধরে টানাটানি করার দুঃসাহস দেখাচ্ছে! তবুও আপনারা আমাদের বলছেন, সীমালঙ্গন না করতে! আমাদের সামনে এখন আর কোনো সীমারেখা নেই। যেয়সা কুকুর, ওয়সা মুগুর। আপনারা বড়রা, থাকুন আপনারা আপনাদের শালীনতা আর মুসলিহত নিয়ে। আমরা জানি কোন বেমারের কেমন দাওয়াই!
পাঁচ
গতকাল তিনজন মুনকিরে কোরআন ওয়াল হাদিসের নামের সাথে
লাউয়া’ শব্দ জুড়ে দিয়েছিলাম। লাউয়া মানে বলেছিলাম, লা’নাত উল্লাহি আলাইহি। দু-একজন বড়ভাই পরামর্শ দিয়েছেন কথাটি ফিরিয়ে নিতে। বলেছেন, কথাটি অনেক বড় হয়েগেছে। বলেছেন তওবাহ করতে। আমি খুশি হতাম আমার শ্রদ্ধেয় বড়ভাইরা যদি সংশ্লিষ্ট লোকগুলোকেও, যখন তারা এসব বকওয়াস করছিল, তওবাহ করার আহবান জানাতেন!
গতকাল ‘লাউয়া’ বা লা’নাত উল্লাহি আলাইহি বলেছিলাম। এখন মনেহচ্ছে, যারা কোরআন অস্বীকারকারী, যারা রাসূলের ইজ্জতের দুশমন, তাদের জন্য শব্দটি আরো ওয়াইড হওয়া উচিত ছিল। বলা উচিত ছিল, লা’নাত উল্লাহি আলাইহি ওয়াল মালাঈকাতি ওয়ান না-সী আযমাঈন।
আগের কলাম পড়ুন এই লিংকে-http://komashisha.com/files/?p=8939