শনিবার, ২৩শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং
কমাশিসা পরিবারবিজ্ঞাপন কর্নারযোগাযোগ । সময়ঃ রাত ২:১২
Home / শ্যামল কান্তি দাস ও আমাদের রাষ্ট্রীয় সামাজিক বৈকল্যতার এক নিকৃষ্ট উদাহরণ !

শ্যামল কান্তি দাস ও আমাদের রাষ্ট্রীয় সামাজিক বৈকল্যতার এক নিকৃষ্ট উদাহরণ !

খতিব তাজুল ইসলাম::
 
court orderআমরা একটি দেশে বসবাস করি । মারামারি খুন চুরিচামারী ডাকাতি এক্সিডেন্ট সবই হয়। মতের অমিলও আছে। আস্তিক নাস্তিকও আছে। যে কোন দুর্ঘটনায় স্থানীয় প্রশাসন সক্রিয় হয়ে উঠে। পুলিশ এম্বুলেন্স ফায়ার ব্রিগেড দমকলকর্মী যেখানে যা প্রয়োজন উপস্থিত । একটি রাষ্ট্রের কাছে জনগণের এমন পাওনা স্বাভাবিক । জনগণের জান মাল ইজ্জত আবরুর হেফাজতের গ্যারান্টি সরকারকে দিতেই হবে। ধর্মীয় সামাজিক উস্কানি মূলক কথা বলার সংগে সংগে প্রশাসনের একশ্যান শুরু । তাই এখানে আইন কেউ হাতে তুলে নেওয়ার চিন্তাই করতে পারেনা। বৃটেনের কথা বলছিলাম।
প্রশ্ন হলো বাংলাদেশর পরিস্থিতি নিয়ে ?
শ্যামল কান্তির কথাই ধরি ….
তিনি ছাত্রকে মারছেন ! এভাবে মরামারি কি বৈধ ? মারের চুটে সে আল্লাহ আল্লাহ বলছে ! তিনি গালিগালাজ করলেন যে, তুমি নাপাক তোমার আল্লাহ নাপাক !? আমি ভেবে পাইনা উনি হেডটিচার হলেন কেমনে? এমন সাম্প্রদায়িক উক্তি একজন হেডটিচারের মূখদিয়ে বেরুল কেমনে?
দুর্ঘটনা হলো তাহলে এর সমাধান কি?
স্কুল কর্তৃপক্ষ তাকে বরখাস্ত করবে সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে ইহা একটি স্বাভাবিক ব্যাপার । যেহেতু বিষয়টি ধর্মীয় তাকে পুলিশে দেয়া। আদালত তার বিচার করবে। বিচার যেভাবে হয়েছে তা সভ্যতার বাহিরে । তারপর যা হয়েছে এর চেয়েও মারাত্মক !
শাহবাগীরা এরপুর্বে আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে মাঠে নেমে যাবজ্জীবন দন্ডপ্রাপ্ত কাদের মুল্লাকে ফাসির রায়ের দিকে মোড় নিতে বাধ্য করেছে। যেখানে স্বয়ং সাংসদ সংসদ মন্ত্রী এমপি সবাই জড়িত। রাস্তার মিছিলে দেশের আইন আদালতে বিভ্রাট সৃষ্টির জঘন্য এক ইতিহাস তারা গড়লো।
আইন আদালতের তোয়াক্কা না করে সেলিম ওসমান তাকে জনতার রোষানলে পড়ার অজুহাতে কান ধরার শাস্তি দিয়ে প্রাণে বাঁচিয়েছেন।ফলে শাহবাগীদের টনক নড়েছে। শাহবাগীরা কেন এর আগে কয়েক ডজন শিক্ষকের আত্মসম্মান রক্ষার জন্য আন্দোলনে নামলোনা? শিক্ষকের শার্ট ছিড়ে ফেলা হলো, জুতা দিয়ে পেটানো হলো, মহিলা শিক্ষিকাকে লাঞ্চিত করাহলো, একজন হিন্দু শিক্ষক এর আগে এক ছাত্রীকে ধর্ষণ করেছে অথচ তখন শাহবাগীদের চেতনায় আঘাত লাগেনি। এই শিক্ষক এবং ছাত্রীর জন্য তারা কাঁদেনি। এখন কেন? একটি বিশেষ গোষ্ঠীর জন্য তাহলে শাহবাগীদের মায়া কান্না? শাহবাগীরা তাহলে কারো পেইড এজেন্ট? তাদের কুটচাল এখন আর গোপন নয়। মুসলমান ইসলাম আর আল্লাহ ও তার রাসুল বিরোধী এই শাহবাগীদের আসল চরিত্র এখন সুর্যালোকের ন্যায় পরিষ্কার। অতএব শাহবাগীরা ইনিবিনিয়ে আর যাই বলুক তারা বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংস্কৃতি মুসলিম জাতীয়তার একনম্বর দুশমন।13220860_483313555212992_5213062632535468210_n
আর এই ইশ্যুকে সামনে নিয়ে তারা আপন আপন কান মলছে। তাদের কাল মলা উচিত। দেশ এবং জাতির বিরুদ্ধে তারা যে অপরাধ করেছে সেই অপরাধের শাস্তি হিসাবে শুধু কান ধরলে হবেনা তাদের কানে গরম শীশা ঢেলে চিততরে বধীর বানানো প্রয়োজন।
এবার মাননীয় মন্ত্রী জনাব নুরুল ইসলাম নাহিদ সাহেবের উদ্যোগ নিয়ে আমার বক্তব্য। তিনির কাছে আমার জিজ্ঞাসা যে তিনি কোন আদালতের বিচারপতি? যে কাজ পুলিশের এবং আদালতের সেই কাজ তিনি কলমের খোঁচায় কেন করতে যাবেন? এমন অদক্ষ অযোগ্য মুর্খ মুসলমান বিদ্বেষী সাম্প্রদায়ীক শিক্ষামন্ত্রী বাংলাদেশ চায়না। দয়া করে পদত্যাগ করুন। আপনি শোনা মাত্র পুলিশ ও আদালতকে একটিভ করতে পারতেন। প্রেসকন্ফারেন্স করে বলতে পারতেন- পুলিশ অপরাধের তদন্ত করবে। আদালত অপরাধের বিচার করবে।কোন প্রকার যৌক্তিক কাজ না করে শ্যামল কান্তি দাসকে পুর্ণবহাল করা কতটুকু যৌক্তিক? অভিযোগ তদন্ত হওয়া দরকার। তদন্ত কমিটি গঠনের উদ্যোগ নিতে পারতেন। তিনি কিছুই না করে কিছু রাস্তার কুকুরের ঘেউ ঘেউ শোনে বিচার করে ফেললেন। এমন এক বিচার করলেন যা তাকে ইসলাম ও মুসলমানেদর বিরুদ্ধে দাঁড় করিয়ে নিলো।
আমার প্রশ্ন এদেশে কি কোন আইন আদালত নেই? কেন জনগণ আইন হাতে নিবে? কেন শিক্ষামন্ত্রী নিজের হাতে বোকার মতো আইন হাতে তুলে নিলেন। তাকে অবশ্যই পদত্যাগ করা উচিত। এমন কান্ডজ্ঞানহীন ব্যক্তি কি করে শিক্ষা বিভাগের দায়ীত্ব নিতে পারে?
শ্যামল কান্তি একটি সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের লোক। সে হিসাবে খুব সর্তকতার সাথে বিষয়টি ডীল করা, যাতে সংখ্যালঘু হিসাবে তার উপর যেন কোন অন্যায় আচরণ করা না হয়। যদি সে ভুল করে রাগের মাথায় বলে আর ক্ষমা চায় তাকে ক্ষমা করে দেয়া উচিত। তবে মারামারি, ছাত্রদের শারিরীক আঘাতের জন্য আদালত তাকে শাস্তি দিতে পারে। কেননা এভাবে মারমারি কোন ক্রমেই গ্রহনযোগ্য নয়।
স্কুল কর্তৃপক্ষ যথার্থ কাজ করেছে তাকে বরখাস্ত করে। কারণ তাকে স্বপদে বহাল রাখা অনৈতিক। তাকে তার অবস্থান পরিষ্কার করেই স্বপদে বহাল হতে পারেন তার আগে নয়। তাই আমি বলবো, সেলিম উসমান যেভাবে ভুল পদ্ধতিতে বিচার করেছেন তার চেয়ে বড় ভুল করেছেন নুরুল ইসরাল নাহিদ। তিনির নামের অর্থ হলো ইসলামের আলো। আমি বলি তার নাম হওয়া উচিত ছিলো জুলুমুল ইসলাম বা ইসলামের অন্ধকার। লোকটির পুরো জীবন ধরেই আমরা দেখছি অন্ধকারের সাথে মিতালি।13239902_982316495198365_288237658834857894_n
বার বার একই চিত্র যে মানুষ আইন তার নিজের হাতে তুলে নিচ্ছে।আগে এই পথ বন্ধ করতে হবে। পুলিশ বিচার বিভাগ সক্রিয় হতে হবে। শুধু হিন্দু বিচারপতি হওয়ার কারণে শ্যামল কান্তির দুখ বুঝে স্বপ্রণোদিত হয়ে কোর্টরুল জারি করলে চলবেনা। দেশের আরো চলমান বিচার বহির্ভুত ঘটনাগুলোকেও সামনে রাখতে হবে।
ইনসাফ সমতা ন্যায় বিচার সকলের জন্য সমান ভাবে প্রযোজ্য হতে হবে। পুলিশ বিচার বিভাগ প্রশাসন যখন সঠিক ভাবে সকল নাগরিকের জন্য ইনসাফের বর্তাও নিশ্চিত করবে তখন মানুষ আর নিজের হাতে আইন তুলে নেওয়ার প্রয়োজন দেখা দিবেনা।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও সংশ্লীষ্ট সকলের কাছে বিনীত অনুরোধ দেশটাকে জংলিপনা থেকে বাঁচান। একটি সভ্য সুশীল সমাজের দিকে আগাইয়া নিতে উদ্যোগী হন। একজন ধর্মের বিরুদ্ধে কথা বলবে তারপর সবাই রাস্তায় নামবে এ কেমন কথা? শুধু ধর্ম কেন সামাজিক শান্তি ও শৃংখলার বিরুদ্ধে যে যাই করবে পুলিশ ও আদালতকে সক্রিয় করুন। নতুবা আমরা যে তিমীরে আছি সেই তিমীরেই থেকে যাবো।

About Islam Tajul

mm

এটাও পড়তে পারেন

কওমি মাদরাসা কল্যাণ ট্রাস্ট, বাংলাদেশ

খতিব তাজুল ইসলাম ট্রাস্টের প্রয়োজনীয়তাঃ কওমি অংগন একটি স্বীকৃত ও তৃণমূল প্লাটফর্ম। দেশ ও জাতির ...