বৃহস্পতিবার, ২১শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং
কমাশিসা পরিবারবিজ্ঞাপন কর্নারযোগাযোগ । সময়ঃ রাত ৯:০১
Home / অনুসন্ধান / একগুচ্ছ কমাশিসা পরতে পরতে হৃদয়ে হৃদয়ে হাওয়ায় হাওয়ায় !

একগুচ্ছ কমাশিসা পরতে পরতে হৃদয়ে হৃদয়ে হাওয়ায় হাওয়ায় !

৭পর্বে ৭টি গল্প ৭টি উপন্যাস ৭টি উপখ্যান !!!

 

1618613_122781111432688_7536788871473299666_n

শাহ আব্দুস সালাম ছালিক::

(১ম পর্ব)

তিনি কওমি মাদরাসায় সংস্কার চান ঃ আমি মাঝে মধ্যে হাসি

তিনি আসলে কি চান?
১) নাস্তিক্যবাদী শিখর উপড়ে ফেলতে হলে কওমি পড়ুয়ার একদলকে স্কুল কলেজে পাঠিয়ে সেখানে দীন ইসলাম প্রতিষ্ঠা করতে চান ।
২) একদলকে বিভিন্ন শিল্প ও কারীগরী শিক্ষা দিয়ে হালাল কওমি দাতা তৈরী করতে চান । এতে হারামিদের প্রভাব হ্রাস পাবে ।
৩) একদল কওমি ডাক্তার চান যারা সমাজে মানব সেবা করবে। চিকিতসার নামে অপচিকিতসা, ধর্ষণ ঘটাবে না ।
৪) একদল কওমি বিজ্ঞানী চান যারা পারমানবিক অস্ত্র বানাবে । যার দ্বারা আমরা লড়াই করব কাফিরদের বিরুদ্ধে ।
৫) একদল কওমি পুলিশ, কওমি সেনা, কওমি র‍্যাব চান যাতে বার বার শাপলা না ঘটে ।
৬) একদল কওমি সাংবাদিক চান যাতে আমরা মিডিয়া সন্ত্রাসের শিকার না হই ।
৭) একদল কওমি বুদ্ধিজীবী, কওমি মুহাদ্দিস, কওমি মুফাসসির চান যাদের রুটি রুজির দায়িত্ব থাকবে উম্মাহর উপর । উনার শুধু দিনের তরে বিলিয়েই যাবেন ।
৮) কওমি মাদরাসা ভাই ভাই এই হিসেবে এক বোর্ড, একক সিলেবাস চান । তার সাথে শ্রেণির নাম ও এক চান যাতে কওমি মাদরসায় জাতি আরো মুগ্ধ হয়ে উঠে ।

আর এ সবের জন্য সব কওমি পড়ুয়াকে তিনি চান না । তিনির কথা হল, মুতাওয়াসসিতাহ চতুর্থ বর্ষের পরে উত্তীর্ণদের মেধা যাচাইয়ের পর যারা যে বিভাগের যোগ্য তাদেরকে সেভাবে বিন্যস্ত করা ।

কিন্তু তার জন্য পূর্ব শর্ত হল, মেট্রিক মানের সরকারি সনদের মান থাকা চাই ।

তখন কি হবে ,
তখন আর রাজপথে আমাদেরকে আন্দোলন করতে হবে না । কওমিদের কলমের কুচায়ই নাস্তিকরা দিশেহারা হয়ে ঘুরবে ।

পাঠক,
এ পর্যন্ত যা লিখলাম বিচার বিশ্লেষণ আপনাদের । এ নিয়ে আমার বলা কোন সুযোগ নেই । আমি বলতে চাচ্ছি, উনি ত গরীব না । টাকা পয়সার ও অভাব না । কওমি বোর্ডের ও কেউ না । কওমির কেউ উনাকে সংস্কারের কথা ও বলছে না । উনার কোন বেতন ও বাকি না । তারপর ও উনি কওমি মাদরাসাকে নিয়ে চিন্তা করেন । কওমি জাতির অগ্রগতি ও সাফল্য চান । ঠিক তখনি আমার হাসি পায় ।

আমার হাসি পাওয়া কি অন্যায় ?

(২য় পর্ব)

Khatib Tajul Islam এর সাথে Billah Abujarah ‘র যখন প্রথম দেখা হয় তখন কি আলোচনা হয়ে ছিল তা তোমাকে আজ রাতই উদ্ধার করতে হবে

রাবিশ বাবুর কথা শোনে বোগাস বাবুর কথা মনে পড়ল নিশিতা ইসলামের । মন মন একটা জবাব রেডি করল সে । তারপর বলল স্যার আমি বহু আগেই উদ্ধার করেছি ।

রাবিশ বাবু একটু নড়েচড়ে বসলেন । নিশিতা ইসলামকে একটু আদর যত্ন করতে চাইলেন । একটু কাছে ডাকলেন ।

নিশিতা একটা শর্ত মনে করে দিল,
স্যার, আমি আগেই তো বলে ছিলাম আপনাদের মিশন সফল হওয়ার আগ পর্যন্ত আমাকে কাছে না ডাকতে ।

সরি নিশিতা সরি,
ত বলুন উনাদের মধ্যে কি আলাপ হয়ে ছিল ।

…………………………

যেই দূর্বলতার সুযোগ নিয়ে আমরা ইসলামের উপর আঘাত করতাম খতিব তাজুল ইসলামের চোখে তা ধরা পড়ে যায় । তিনি ডাকদেন কমাশিসার ।

কমাশিসার ? আঁতকে উঠলেন রাবিশ বাবু ।

জ্বি, স্যার জ্বি । কমাশিসার ডাকে সাড়া দিয়ে কওমি পড়ুয়ারা এক সাথে কুর-আন হাদিসের পান্ডিত্যের সাথে সাথে স্কুল কলেজে তাদের আধিপত্য বিস্তার করতে লাগল । এ দিকে বিল্লাহ আবু যারাহ আনসারুল উলামা নিয়ে এগিয়ে আসলেন ।

আনসারুল উলামা ? রাবিশ বাবু অস্থির হয়ে উঠলেন ।

একি বলছ নিশিতা ? আমাকে এক গ্লাস মদ দাও ।

দুঃখিত স্যার আমি মদ সহ্য করতে পারি না । তবে এই নেন এক গ্লাস পানি খান ।

তারপর কি হয়ে ছিল ? রাবিশ বাবু জানতে চাইল ।

নিশিতা বলতে লাগল, এই দুই স্বপ্ন নিয়ে দৌড়াদৌড়ি করতে গিয়েই একে অন্যকে জানেন । যদিও নদীর এপার আর ওপারে তাদের বসবাস । প্রথম সাক্ষাতে চোখ বিনিময় হয়েছে আর হালকা বাতচিত । কিন্তু তাদের মরণের পরই স্বপ্ন ফল ধরতে শুরু করেছে স্যার ।

উনাদের স্বপ্ন মজলিসের চেতনায় আগুন ধরিয়ে দিয়েছে স্যার । মজলিসের কর্মীদের আর কোন ভাবেই দমন করা যাবে না । ওরা আমাদের রাজ মহলে প্রবেশ করে গেছে । লক্ষ লক্ষ আলিম হত্যার প্রতিশোধ নেবেই নেবে ।

চিতকার দিয়ে উঠলেন রাবিশ বাবু,
একি বলছ নিশিতা তুমি ? তা হতে দেয়া যায় না । আমি কালই তাহমিদকে রাজপথে ফাঁসি দিয়ে মজলিসের কর্মীদের অন্তরে ভয় ঢুকিয়ে দেব ।

স্যার,
আপনি তাদের ইতিহাস জানেন না । ওরা দেওবন্দের সন্তান । ব্রিটিশরা ওদের গাছের ডালে ডালে ঝুলিয়ে ও এদেশে ঠিকে থাকতে পারেনি । মুজিব কন্যা বাতি নিভিয়ে শাপলা ঘটিয়ে ও ওদের দমন করতে পারেনি । এই তো আপনারা ওদের হত্যা করে ও ভয়ে কাঁপছেন । একজন তাহমিদের কাছে সবাই পরাজিত হতে যাচ্ছেন ।

রাবিশ বাবু ভাবলেন,
নিশিতা ত ঠিকই বলছ । এর কারণ কি জানতে চাইলেন ?

নিশিতা বলল,
স্যার, কারণ ; একটাই ওরা কওমির সন্তান । আর মজলিসের চেতনায় বলিয়ান ।

মজলিসের চেতনা ?

জ্বি, স্যার ! মজলিসের চেতনা । এটা মারাত্মক । কত ষড়যন্ত্র করে , র জ’র মাধ্যমে মজলিসকে দ্বিখন্ডিত করা হল । কিন্তু এক সময় আবার দুই মজলিসের মিলন হয়ে গেল । শক্তি বেড়ে গেল জমিয়তের ও । পীর সাহেব চরমুনাই ও যোগ দিলেন । ভাগ্যিস ভারত রাতের অন্ধকারে আক্রমন করে উলামা নিধন না করলে বাংলাদেশের ইতিহাস অন্যভাবে লেখা হত ।

কিন্তু স্যার,
সেই উলামা নিধনের দিন রাত ও স্বামীরা তাদের প্রিয়তমাদের বলে গেছেন, ছেলে হউক মেয়ে হউক ওদেরকে মজলিসের চেতনায় জাগিয়ে দিও । আজকের তাহমিদ সেই চেতনার ফসল ।

রাবিশ বাবু দিশেহারা হয়ে গেলেন,
মজলিসের চেতনা, কমাশিসার প্রেরণা, আনসারুল উলামার নমুনা, জমিয়তের এগিয়ে চলা, পীর সাহেবের বাবারা কি করবেন ভেবে উঠতে পারলেন না ।

(৩য় পর্ব)

একটা ইসলামী পত্রিকা অফিসে বসে আছি । সম্পাদক সাহেব আমার সামনে বসা । নিজ থেকেই বলে যাচ্ছি আপনাদের সাথে সৌজন্য সাক্ষাত করতে সিলেট থেকে এসেছি । সম্পাদক সাহেব মাথা নিচু করেই আছেন । উপরের দিকে চোখ তুলার গরজ নেই । ভুলে একবার হু হা করেছেন । একটু বসে আমি বেরিয়ে পড়লাম । এই হল মেহমানের সাথে আচরণ ।

দর্শক এবার গন্তব্য পুরানা পল্টন ……

ঃ)
তিনি ওয়াজ করেন । বর্তমান রেইট ৩০-৫০ হাজার । ৭ তলা উপরে উঠলাম । না, এখানেও চা নাস্তা নসিব হল না । এই হল, মেহমানের সাথে আচরণ ।

দর্শক গন্তব্য এবার গল্লা বাবার দরবার ………।।

ঃ)
তারিখ কন ফারম হল কিন্তু চা নাস্তা নসিব হল না । এই হল মেহমানের সাথে আচরন ৷

দর্শক গন্তব্য এবার আশিকুর রাহমান কাসিমীর দরবার …..

ঃ)
আপনারা হোটেলে ছিলেন ! ইন্নালিল্লাহ , আমার এখানে আসলেন না কেন ?
মাশা আল্লাহ, কিছুক্ষণের মধ্যেই শুরু হল আক্কালিয়্যত । নানান জাতের খাবারের খাঞ্চা । কোনটা খাবো আর কোনটা ছাড়ব হিসাব মিলাতে পারলাম না । এই হল, মেহমানের সাথে আচরণ ।

দর্শক চলুন আমরা বিশ্লেষণে যাই ………..

ঃ) খুঁজ নিয়ে দেখা গেল একজন সিলেটি বাকিরা অন্যটি । আচ্ছা, মেহমান্দারীর সাথে ত সিলেটি অসিলেটির সম্পর্ক নাই তাহলে এমন হলো কেন ?

এরপর থেকে আমি আর কোন অদেখা পরিচয়ের সাথে সাক্ষাতে আগ্রহী হইনা । এমন কি বায়তুল মুকাররমে ঘন্টাকে ঘন্টা বসে থাকি তারপর ও সাদী ভাই সিলেটির অফিসেও যাই না । সেই ভয় এখনো আমাকে তাড়ায় ।

ঃ) “বাংলা হবে সমরকন্দ” বইর ৩৩ নাম্বার পৃষ্ঠা পড়ে নিশিতা হাসতে হাসতে শেষ । একজন মানুষ কত বড় আক্কাল হলে কথাগুলা বইয়ে লিখে যেতে পারে ভাবতেই অবাক লাগে । এ কেমন মানসিকতা মেজবানের বদনাম করে ?

তাহমিদ নিজ থেকেই বলা শুরু করল,
নিশিতা ইসলাম তুমি যা বুঝেছ তা নয় । উনারা একজন হলেন মুহতামিম আরেকজন হলেন নাযিম । অনেক কষ্ট করে উনারা ঢাকায় এসেছেন মাহফিলের দাওয়াত দিতে । উনারা ওয়াজে গেলে কমে ৮-১০ তরকারী দিয়ে আপ্যায়ন করায় । আঙ্গুর আপেল কত কিছু খাওয়ায় । আসার সময় পকেট ভর্তি করে টাকা নিয়ে আসেন । বাদ ফজর তহবিল গণে দেখা যায় অনেক সময় তহবিল শূন্য । শিক্ষকরা অনেক সময় হৃদয়ে হৃদয়ে অশ্রুপাত করে বাড়িতে যান ।

বেচারার অবস্থা দেখেই গিন্নিরা এগিয়ে আসে । আরে এতো চিন্তা কেন? ডিম বিক্রি করে আমি অনেক টাকা জমা করেছি । যাও চলে যাও বাজারো ।

এই উনাদের সাথে যখন ঢাকায় আসলে চলে এই ব্যবহার । বলেন, কিভাবে সহ্য করা যায় । নিশিতা ইসলাম ওমাই গড বলে বসে পড়ে যায় ।

রাবিশ বাবু এগিয়ে আসতে দেখে নিশিতা কথার মোড় ঘুরিয়ে দেয় । তুমাকে বলতেই হবে কে কোথায় আমাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছ ? কমাশিসার বইটা তুমাকে বের করে দিতেই হবে । মজলিসের মিলন কিভাবে হল বইটি ও চাই । বল বল আনসারুল উলামা এখনো সক্রিয় না নিস্ক্রিয় ?

রাবিশ বাবু বললেন থামো নিশিতা থামো । আমরা সবি পেয়ে গেছি ।

সবি পেয়ে গেছেন ?

হ্যা, হ্যা, সবি পেয়ে গেছি ।
নিশিতাকে একটু আড়ালে নিলেন রাবিশ বাবু । খুব ভয়ে আছি নিশিতা । ওরা কমাশিসার শিক্ষানীতি বাস্তবায়ন শুরু করে দিছে । একবার কমাশিসা বাস্তবায়ন হলে ধ্বর্মহীন শিক্ষানীতির সাথে সাথে নাস্তিকরা ও হয়ে যাবে বিলীন । এক কাজ করতে হবে । ওদের কিছু কর্মীকে টাকা দ্বারা কিনতে হবে আর সেটা করতে হবে তুমাকেই । আর প্রথম টার্গেট করতে হবে তাহমিদকেই ।

নিশিতা লাফ দিয়ে উঠল,
কোন চিন্তা করবেন না স্যার , সবি আমি করব ……

(৪র্থ পর্ব)

যারা লেখক তারা জাতির সম্পদ ঃ প্লিজ সম্পদ নষ্ট করবেন না

………………

সবাই লেখতে পারে না । যারা পারে তারা খুবি ভাগ্যবান । তারা জাতির প্রাণ । নির্মল ও সচ্চ সমাজ বিনির্মাণে লেখকদের ভূমিকা অগ্রগণ্য ।

আপনার প্রতিষ্ঠানে, অফিস আদালতে, বাসা বাড়িতে একজন লেখক পেয়েছেন খুশির কথা । আপনার দলে লেখকের আগমন আনন্দের কথা । তার কদর করুন ।

একজন লেখক আপনার কর্মী বা কর্মচারী যাই হোন না কেন লেখার সময় তাকে লেখক ভাববেন । প্লিজ, তার কলমে হাত দেবেন না ।

লেখকরা সমালোচনা করবেই । সমালোচনা না করলে সমাজ সপ্নিল হয় না । মেধার বিস্ফুরন ঘটেনা । সরকার সুন্দরভাবে চলে না ।

মনে রাখবেন লেখকের সমালোচনা আর অলেখকের সমালোচনা এক না । লেখককে লেখক হিসেবে বাঁচতে দিন ।

একজন লেখক সব ত্যাগ করতে পারে কিন্তু লেখা ছাড়তে পারে না । মাহমুদুর রাহমান তার এক প্রমাণ ।

লেখক মরতে রাজি, লড়তে রাজি তবু ও লেখলেখি থেকে পিছপা হয় না । তিনি ইসলামী লেখক হন আর অনৈসলামিক হন ।

একজন লেখক কে হুমকি দিয়ে, কুৎসা রটিয়ে, মুখোশ উম্মোচনের ভয় দেখিয়ে, যারাবার গরম দেখিয়ে লেখা থেকে বারণ করা যায় না । গেলে কওমি মাদরাসায় এতো লেখক সাহিত্যিকে জন্ম হল কিভাবে ? নাস্তিকরা তার পরে ও লেখে কিভাবে ?

লেখকের সব লেখার সাথেই আপনার মতের মিল হবে এমন না । মতের অমিল হলেই চক্রবদ্ধ আক্রমণ , লেখকের নাম্বারে হুমকি ধমকি এটা সভ্য সমাজের পরিচয় বহন করেনা ।

একটা সমাজ কতটুকু ভদ্র, সভ্য একজন লেখকের মূল্যায়ন থেকেই বুঝা যায় । একটা সমাজ কত নোংরা লেখকদের হুমকি ধমকি দিলেই বুঝা যায় ।

প্লিজ,
লেখকদের ছাড় দিতে হবে অন্যথা জাতি যাবে রসাতলে । জাতির স্বার্থে লেখকদের পাশে দাঁড়ান ।

শোনে খুশি হবেন,
আপনাদেরই এক সন্তান খতিব তাজুল ইসলাম কমাশিসা অন লাইন মিডিয়া চালু করে লেখকদের পাশে দাঁড়িয়েছেন । তাহলে আর চিন্তা কি আপনার সুন্দর লেখাটা কমাশিসা মিডিয়ায় পাঠিয়ে দিন ।

শোনে আত্মহারা হয়ে যাবেন,
খতিব তাজুল ইসলামের পরিকল্পনায় রশীদ জামীলের বুদ্ধিয়ানার অপূর্ব আবিষ্কার কমাশিসা শিক্ষা সিলেবাস কওমি জাতির মেঘ না চাইতেই বৃষ্টি । কমাশিসা বাস্তবায়ন হলে কি হবে –
১) রাষ্ট্র ক্ষমতায় কওমি থাকবে ।
২) শিক্ষানীতি কওমিরা প্রণয়ন করবে ।
৩) আদালতে কওমিরা বিচার করবে ।
৪) কলেজে কওমিরা লেকচার দেবে ।
৫) সুদ মুক্ত ব্যাংক হবে ।
৬) রাষ্ট্র থেকে ইমাম মুয়াজ্জিন, ছাত্র শিক্ষক ভাতা পাবে ।
৭) নারী পুরুষের আলাদা শিক্ষা , আলাদা কর্ম সংস্থান হবে ।
৮) কওমি শিল্পী, কওমি ডাক্তার, কওমি ইঞ্জিনিয়ার তৈরী হবে ।
৯) আল্লামা তাকি উসমানীর জন্ম হবে ।
১০) স্বাধীন অর্থ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হবে ।

আসুন,
হাতে হাত মিলিয়ে লেখক, গবেষক, কমাশিসাকে এগিয়ে নেই ।

(৫ম পর্ব)

এই মুহুর্তে বায়তুল মুকাররমের উত্তর গেইটের ডান সাইটে সাইমুম সাদী ভাইর সাথে বসে ফালুদা খাচ্ছি

আচ্ছা একদিনের জন্য যদি তুমাকে বাংলাদেশের হাসিনা বানিয়ে দেয়া হয় তুমি কি করবে ?

এতো বড় প্রশ্ন তা ও ছাত্র মজলিসের সাবেক সভাপতির । কি জবাব দেই । ফালুদা খাওয়ার স্বাদটাই মাটি করে দিলেন তিনি ।

কিছু বলছ না যে ?

জ্বি, সাদী ভাই! এই তো বলা শুরু করে দিলাম ,

হুজুর সময় খুব কম । আর মাত্র ৮ ঘন্টা বাকি । বাংলাদেশের একদিনের প্রাধান্মন্ত্রীর পক্ষ থেকে লাল গোলাপ ও বঙ্গ ভবনে নিমন্ত্রণ ।

বাংলার সিংহ পুরুষ, জামেয়া মাদানিয়ার প্রিন্সিপাল, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মুহতারাম প্রিন্সিপাল হাবিবুর রাহমানকে নিয়ে গাড়ি এখন বঙ্গভবের উদ্দেশ্যে ।

সাবেক মন্ত্রী, খেলাফত মজলিসের আমির মুহতারাম ইসহাক সাহেব, ১৬ কোটি মানুষের হৃদয়ের ভালবাসা শাইখুল হাদিস রাহ এর সুযোগ্য সন্তান মামুনুল হক সাহেব আগেই পৌঁছে গেছেন ।

প্রায় কাছাকাছি সময় প্রিন্সিপাল সাহেব ও ইসলামী রাজের স্বপ্নীল শিল্পী জনাব আহমদ আব্দুল কাদির সাহেব ও বঙ্গভবনে পৌঁছে গেলেন ।

খবর ছড়িয়ে পড়ল টেকনাফ থেকে তেতুলিয়া । মজলিসের হাজার হাজার কর্মী বঙ্গভবনের সামনে । মিছিল আর শ্লোগানে মুখরিত রাজধানী ঢাকা । মিছিলের শ্রোত বঙ্গ ভবনের দিকে । কি হচ্ছে ? কি হতে যাচ্ছে ?

আর মাত্র ১ ঘন্টা । ১ দিনের ক্ষমতা শেষের পথে,
বের হয়ে আসছেন তারা । বিপ্লবের শ্লোগানে প্রকম্পিত রাজধানী ঢাকা । সাংবাদিকরা ও ক্লিক ক্লিক । টিভি চ্যানেলে লাইভ সমাচার । উত্তেজনায় কাঁপছে দেশ থেকে দেশান্তর ।

স্বাগত বক্তব্য শুরু করলেন ইসহাক সাহেব । কি হতে যাচ্ছে কেউ জানেনা । একটু পিছিয়ে গেলেন তিনি । প্রিন্সিপাল সাহেবের একটা হাত ধরলেন , আরেকটা হাত ধরলেন আহমদ আব্দুল কাদির সাহেবের । মধ্যখানে দাঁড়িয়ে আছেন তিনি । এক মিনিট মাত্র এক মিনিট । কান্নার রোল পড়ে গেল বাংলায় । বহু দিনের লালিত স্বপ্ন আজ বাস্তবায়ন হল । কর্মীরা আবার মজলিসের চেতনায় জেগে উঠল ।

সবখানী ফালুদা সাদী ভাইর উপরে । কাপড় চোপড় সব নষ্ট হয়ে গেল । সাদী ভাই শুধু হাসলেন । আর বললেন, প্রশ্ন করাটাই ভুল ছিল ।

রাবিশ বাবু বললেন, নিশিতা আমরা একদিনের ক্ষমতা পেলে রিজাভে হাত দিতাম, শত্রুর কাছ থেকে প্রতিশোধ নিতাম, বিমান বন্দর পারলে দেশটার নামই বদলে দিতাম কিন্তু ছেলেটা কিই না করল । সত্যি মজলিসের চেতনা মারা যেতে পারেনা ।

‘বাংলা হবে সমরকন্দ’ বইটি যতই পড়ি ততই ভাল লাগে । এ যেন আরেক আহাফি ।

(৬ষ্ট পর্ব)

দেখতে দেখতে কমাশিসা আন্দোলনের এক বছর ঃ হিসাবের খাতায় অনেক সফলতা

গত বছর এই বৈশাখ মাস থেকে কমাশিসার জোরদার আন্দোলন শুরু । যদি ও মূল শুরু বহু বছর আগেই ।

বিদায়ী সভার দিন । শুরু হয়ে গেছে অনুষ্ঠান । ইনবক্সে খতিব সাহেব ফোন নাম্বার চাইলেন । বললাম এখন সম্ভব না পরে । তখন উনাকে একদম চিনতাম না । চিনতাম শুধু ফেবু বন্ধু হিসেবেই ।

তিনি আমাদের সংস্কারের লেখার প্রশংসা করলেন । বললেন এভাবে হবে না । এক হয়ে করতে হবে । আসুন আমার সাথে । চলুন কমাশিসায় । রশীদ জামীল আমেরিকা থেকে । মাহমুদি হবিগঞ্জ থেকে । শুরু হল ।

শুরু হল পাল্টাপাল্টি । জামেয়া মাদানিয়ার ছেলে, প্রিন্সিপালের রক্তে হলেই বিরুধীতা করা যাদের কাজ তারা ঝাপিয়ে পড়ল । থামিয়ে দিতে দিতে চাইল ।

কিন্তু আল্লাহ কবুল করে নিলেন খতিব সাহেবের মন । কবুল করে নিলেন কমাশিসা । ছড়িয়ে পড়ল ঘ্রাণ বাংলা থেকে ইউরোপ আমেরিকা । ঘটে গেল সুরায়ে কাওসার ।

আজ মনে অনেক খুশি । কিছুক্ষণ পর বিদায়ী সভা শুরু হবে । তাই মনে পড়ে গেল কমাশিসার শুরুর কাহিনী ।

কমাশিসা জিন্দাবাদ কওমি মাদরাসা জিন্দাবাদ।

(৭ম পর্ব)

আঁকাবাঁকা পথ, দু’পাশে গাছের সারি, চোখ জোড়ানো প্রকৃতির রুপে মুগ্ধ হয়ে চলছি আমি

ঘড়ির কাঁটা দশ’টা ছুঁয় ছুঁয় । ক্লাস শুরু হয়ে গেছে । আমাদেরকে মেহমানখানায় নেয়া হল । পরিচয় পর্ব শেষে চা নাস্তার এক বিশাল খাঞ্চা হাজির হল ।

অভিনব পাঠদান ঃ
প্রতি ক্লাসে টিচারদের জন্য একটা করে কম্পিউটার । ক্লাসের ওয়ালে জায়ান্ট স্ক্রীন । ৫০ মিনিটের ক্লাস । ৩০ মিনিট লেকচার ৷ ২০ মিনিট প্রশ্ন পর্ব ।

শিশু শ্রেণীর পাঠদান ঃ
জায়ান্ট স্ক্রীনে একটা চিত্র ভাসে আর সবাই চিৎকার করে উঠে , উনি আহমদ শফি, এটা কৈ মাছ, ওটা তালব্যশ, এটা গোলাপ । এক আনন্দ মুখর পরিবেশে পাঠদান ।

লেখালেখির নিয়ম ঃ
সবার হাতে হাতে খাতা কলম । চোখ বড় পর্দায় । বার বার ভেসে উঠছে লেখার চিত্র । মজা করে করে শিখে নিচ্ছে লেখার নিত্য নতুন নমুনা ।

পাঠদানের ফাঁকে ঃ
ক্লাসের বিরক্তি দূর করতে কম্পিউটারে ভেসে উঠে ইসলামী গান, নাটক, কৌতুক । কখনো ছাত্র শিক্ষক মিলে সঙ্গীত সুর ধরেন ।

দারসে হাদিস ঃ
টিচার শোনে যাচ্ছেন ছাত্ররা পাঠ করছে । কখনো ছাত্ররা শোনে যাচ্ছে টিচার পাঠ করছেন ।

শুধু দারসে হাদিস না দারসে কুর-আন, দারসে নাহু, দারসে ফিকাহ’র একই চিত্র ।

শিক্ষা বর্ষ ঃ
এখানে শিক্ষা বর্ষ নাই । এখানে ব্যক্তি বর্ষ । সারা বছর চলে পাঠদান আবার সারা বছর ছুটি ও । কেউ না কেউ ছুটিতে আছেন আবার কেউ না কেউ পঠন পাঠনে মগ্ন ।

শ্রেণী বিন্যাস ঃ
এখানে জীবনে একবারই ভর্তি হতে হয় । বার বার ভর্তি হওয়া লাগেনা । তা ও ভর্তি হওয়ার সুযোগ শিশু শ্রেণীতে । শিশু শ্রেণীর পরে কোন নতুন ছাত্র ভর্তির সুযোগ নেই ।

শিশু শ্রেণির শিক্ষা ঃ
ক)
এখানে অক্ষর জ্ঞান, রেডিং পড়া ক্লিয়ার, লেখালেখির নিয়ম কানুন শিখানো হয় । এই শ্রেণীতে প্রায় সময়ই ২-৩ শ’র মত ছাত্র-ছাত্রী থাকে । যত দিন অক্ষর জ্ঞান, রেডিং পড়া, লেখা লেখি ক্লিয়ার হচ্ছে না উপরের শ্রেণিতে উঠার সুযোগ নেই । কিন্তু দেখা গেছে মাস দু’এক পরে ৪০-৫০ জন ঠিকই যোগ্যতা অর্জন করে উপরের শ্রেণিতে পা রাখছে ।

খ) এই শ্রেণীতে বাংলা আর আরবি গুরুত্বের সাথে শিখানো হয় । শরয়িতের বিভিন্ন বিষয় সুন্দর ও সাবলিল ভাষায় দীক্ষা দেয়া হয় । এখানে ও প্রচুর ছাত্র । মাস দু’এক পর ২০-৩০ জন উপরের শ্রেণিতে পা রাখছে ।

প্রথম শ্রেণী ঃ
শিশু শ্রেণির ক, খ, শাখা শেষ করে এ শাখায় উত্তীর্ণ হতে হয় । এ শাখায় ৩ টা ভাষাকে গুরুত্ব দেয়া হয় । বাংলা, আরবী, ইংলিশ । সাহিত্যে সাহিত্য প্রয়োজন পরিমাণ ইলমেদ্বীন এখানে শিখানো হয় । সাহিত্যে সাহিত্যে ভূগোল, ইতিহাস, কুর-আনের অনুবাদ, হাদিসের তরজমা শিখানো হয় ।

দেখা যায় কেউ বছরে, কেউ দু বছরে, কেউ ৩ বছরে সব আত্মস্ত করে নেয় । যার যে সময় পূর্ণ যোগ্যতা অর্জিত হয় তাকে তখন উপরের শ্রেণীতে তুলে দেয়া হয় ।

২য় শ্রেণী ঃ
এই শ্রেণীতে আরবী, বাংলা, ইংলিশ শিখানো হয় । কুর-আন, হাদিস, নাহু সরফ, বাংলা ইংলিশের উন্নত মানের ব্যাকরন ভাল ভাবেই শিখতে হয় ।

৩য় শ্রেণী ঃ
এখানে এসে ছাত্রদের স্বাধীনতা দেয়া হয় । কেউ ফিকাহ নিয়ে পড়ে, কেউ কেউ হাদিস নিয়ে, কেউ তাফসীর নিয়ে, কেউ কলেজে , কেউ কারীগরীতে, কেউ বাড়িতে ।

এখানে ভাষা শিখাকে গুরুত্ব দেয়া হয় । তাদের যুক্তি হল, ভাষা আয়ত্ব করলে, শব্দে শব্দে তারজমা বলতে হয় না । ছাত্ররা নিজেই অনেক কিছু বুঝে নেয় । কিছু জাগায় সমস্যা হলে টিচার ত আছেনই । এতে মাত্র ১৬-১৭ বছর বয়সে ডক্টর হয়ে যাচ্ছে । জীবনের আসল সময়টা সেইভ হচ্ছে ।

আর বছর ভিত্তিক ক্লাস ওই কারণে তুলে দেয়া হয়েছে , দেখা যায়, বছর শেষ কিতাব শেষ না, কিতাব শেষ কিন্তু ছাত্ররা অনেক পাঠেই ছিল অনুপস্থিত । অথবা কোন ধরণের যোগ্যতাই অর্জন হচ্ছে না কিন্তু ঠিকই উপরের শ্রেণীতে চলে যাচ্ছে ।

ব্যাকরণ শিখার আগে ভাষা শিখানো হয় কারণ ভাষাই আসল । পূর্ণ পান্ডিত্বের জন্য ব্যাকরণ তাই আগে ভাষা ।

পশ্চিম পার্শে ৩ তলা বিল্ডিং যেখানে কারীগরী, এল, এম, এফ শিখানো হয় । একদল নিয়মিত কাজ করে মাদরাসার ফান্ড ভালই সচল রাখছেন ।

মাদরাসার সামনের জমিনে বিভিন্ন ফল মূলের চাষ হয় । এ থেকে বোর্ডিং ফান্ড ভালই চলে । পুকুরে মাষ চাষ করা হয় । এ সব করে মাদরাসার ছাত্ররাই । ফলে কর্ম জীবনে এই মাদরাসার ছাত্ররা প্রতিষ্ঠিত । সমাজ সেবায় এগিয়ে । মেম্বার চেয়ারম্যান ত অহরহ। কলেজ ভার্সিটির প্রফেসার শত শত । মন্ত্রী এম, পি ও আছেন ।

তবে প্রতি ক্লাসের জন্য খেলাধোলা, শরীর চর্চার সু ব্যবস্থা ভালই আছে । যারা কিছু দিন পড়া লেখা করে ইতি নিয়েছে তাদের অনেকই জাতীয় দলে খেলাধুলা করে । এতে দেখা গেছে জাতীয় দলের সবাই জামাতে নামায পড়ে, নারী ও মদ থেকে দূরে থাকে, রোযা ছাড়ে না ।

এবার বিদায়ের পালা । প্রিন্সিপাল সাহেব একটি খাতা এগিয়ে দিলেন । এখানে কিছু লিখে যান, কি কি ত্রুটি ধড়া পড়েছে । আমি ত অবাক , জীবনে এরকম এই প্রথম দেখলাম । কলম হাতে নিয়ে লিখলাম , আপনাদের কাছে আমরা পরাজিত ।

তাহমিদ কেঁদে দিল , এর সম্পূর্ণ অবদান কমাশিসার ।
কমাশিসার ?
জ্বি, কমাশিসার । আজ থেকে ৫০ বছর আগে এক চিন্তার রূপরেখা আবিষ্কার করেন কিছু ভাই তার বাস্তবতা হল, আজকের জামেয়া বোয়ালজোড় ।

Khatib Tajul Islam সাহেব Rashid Jamil নামের সুনিপুণ শিল্পী কে সাথে নিয়ে যে চিন্তার খুরাক রেখে গেছেন আমরা একটু এদিক সেদিক করেছি মাত্র । আমি চিন্তা করলাম, জঙ্গী যুগে ও আল্লাহ এমন চিন্তাবীদের জন্ম দিছিলেন ।

লেখক পরিচিতি: চিন্তক গবেষক মুহাদ্দিস সমাজ সংস্কারক।

 

About Islam Tajul

mm

এটাও পড়তে পারেন

কওমি মাদরাসা কল্যাণ ট্রাস্ট, বাংলাদেশ

খতিব তাজুল ইসলাম ট্রাস্টের প্রয়োজনীয়তাঃ কওমি অংগন একটি স্বীকৃত ও তৃণমূল প্লাটফর্ম। দেশ ও জাতির ...