ফেলানী হত্যাকাণ্ডের জন্য তার পিতা নুরুল ইসলামকে দায়ী করেছে ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ফেলানী হত্যার ঘটনায় ভারতীয় মানবাধিকার কমিশনের পক্ষ থেকে দেশটির কেন্দ্রীয় সরকারকে দেয়া এক চিঠির জবাবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ মন্তব্য করে।
ভারতের জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চিঠির জবাবে দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বুধবার জানায়, ফেলানীর প্রাণহানির জন্য তার পিতা নুরুল ইসলাম দায়ী। ফেলানীকে নিয়ে অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রম করার সময় এ ঘটনা ঘটেছে।
এর আগে ৩১ আগস্ট ভারতের জাতীয় মানবাধিকার কমিশন ফেলানী হত্যাকাণ্ডে তার পরিবারকে পাঁচ লাখ রুপি ক্ষতিপূরণ দিতে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারকে নির্দেশ দেয়। এ অর্থ বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনের মাধ্যমে ফেলানীর পরিবারকে প্রদানের নির্দেশ দেয়া হয়।
ফেলানীর বাবার আইনজীবী ও কুড়িগ্রামের পাবলিক প্রসিকিউটর আব্রাহাম লিংকন বলেন, ভারতের ন্যাশনাল হিউম্যান রাইটস কমিশনের ওয়েব পেজে ফেলানীর পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দিতে ভারতের জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের দেয়া নির্দেশের জবাবেব বিষয়টি শুনেছেন। সেখানে ফেলানী হত্যাকান্ডে তার বাবা নুর ইসলামকে দায়ী করেছে সে দেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। বিএসএফ সদস্য অমিয় ঘোষকে অভিযোগ থেকে আড়াল করার জন্য এ কাজটি করা হয়েছে, যা পুরোপুরি অগ্রহনযোগ্য।
ফেলানীর বাবা নূর ইসলাম বলেন, আমি সাংবাদিকদের মাধ্যমে জানতে পেরেছি ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণায়ল ফেলানী হত্যাকাণ্ডের জন্য দোষী বিএসএফ সদস্য অমিয় ঘোষকে বাদ দিয়ে আমাকে দায়ী করেছে। অবৈধভাবে সীমান্ত পার হওয়ার অপরাধে আমাকে আইনের মাধ্যমে শাস্তি দিতে পারত। এ জন্য আমার নিষ্পাপ মেয়ে ফেলানীকে তারা নির্মমভাবে গুলি করে হত্যা করতে পারে না। এ সময় তিনি ভারত সরকারের কাছে ফেলানী হত্যার সুষ্ঠু বিচার চেয়ে বলেন, আমি হত্যাকারী বিএসএফ সদস্য অমিয় ঘোষের ফাঁসি চাই।
অন্যদিকে ফেলানী হত্যাকাণ্ডে ন্যায়বিচার ও ক্ষতিপুরণ চেয়ে ভারতের মানবাধিকার সংগঠন মানবাধিকার সুরক্ষা মঞ্চ (মাসুম) দেশটির সুপ্রিম কোর্টে রিট পিটিশন করেছে। আগামী ৬ অক্টোবর রিটের শুনানির দিন ধার্য করেছেন আদালত।
২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার অনন্তপুর সীমান্তে বিএসএফ সদস্য অমিয় ঘোষের গুলিতে নির্মমভাবে নিহত হয় বাংলাদেশি কিশোরী ফেলানী। এ ঘটনায় বিএসএফ’র বিশেষ আদালতে অমিয় ঘোষের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়। ২০১৩ সালের ৬ সেপ্টেম্বর অমিয় ঘোষকে নির্দোষ বলে রায় দেন বিএসএফ’র বিশেষ আদালত। সেই রায় যর্থাথ মনে করেননি বিএসএফ মহাপরিচালক। তিনি রায় পুর্নবিবেচনার আহবান জানান। কিন্তু দ্বিতীয় দফায় ২ জুলাই ২০১৫ বিএসএফ’র বিশেষ আদালত অমিয় ঘোষকে নির্দোষ ঘোষণা করে রায় দেন।
এটাও পড়তে পারেন
কওমি মাদরাসা কল্যাণ ট্রাস্ট, বাংলাদেশ
খতিব তাজুল ইসলাম ট্রাস্টের প্রয়োজনীয়তাঃ কওমি অংগন একটি স্বীকৃত ও তৃণমূল প্লাটফর্ম। দেশ ও জাতির ...