![14512_108243](http://komashisha.com/files/asset/uploads/2016/04/14512_108243-300x200.jpg)
বৈঠক শেষে জোটের একজন নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে ঢাকাটাইমসকে বলেন, “জামায়াত না এলেও ২০ দলের মিটিং হয়েছে। আবার বিএনপি-জামায়াতের লোক ছাড়াই ১৯ জন নেতা বৈঠকে ছিলেন। কারণ জমিয়ত থেকে মুফতি ওয়াক্কাস ছাড়াও আরেকজন ছিলেন। তার পরিচয় কেউ জানে না। তিনি জমিয়তের সম্পাদক পর্যায়ের নেতা বলে জানা গেছে। জোট প্রধানের সঙ্গে বৈঠকে এ পর্যায়ের নেতার উপস্থিতি হাস্যকর।”
সোমবার রাতে খালেদা জিয়ার সভাপতিত্বে তার গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত ২০ দলীয় জোটের বৈঠকে ছিলেন জেপির আন্দালিব রহমান পার্থ, এলডিপির ড. রেদোয়ান আহমেদ, জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) মোস্তফা জামাল হায়দার, খেলাফত মজলিসের আহমদ আবদুল কাদের, ইসলামী ঐক্যজোটের আবদুর রকীব, জাগপার শফিউল আলম প্রধান, এনডিপির খন্দকার গোলাম মূর্তজা, এনপিপির ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, লেবার পার্টির মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মুফতি মুহাম্মদ ওয়াক্কাস ও মনির হোসেন, পিপলস লীগের গরীবে নেওয়াজ, সাম্যবাদী দলের সাঈদ আহমেদ, ভাসানী ন্যাপের আজহারুল ইসলাম, ডিএলের সাইফুদ্দিন আহমেদ মনি, ইসলামিক পার্টির আবু তাহের চৌধুরী, মুসলিম লীগের শেখ জুলফিকার আলী বুলবুল, কল্যাণ পার্টির এম এম আমিনুর রহমান, ন্যাপের নুরুল আমান চৌধুরী টিটো। এছাড়াও বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও যুগ্ম মহাসচিব মো. শাহজাহানও বৈঠকে ছিলেন।
জমিয়ত সূত্রে জানা গেছে, মনির হোসেন বারিধারা মাদরাসার শিক্ষক। তিনি ওই মাদরাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা নূর হোসাইন কাসেমীর প্রতিনিধি হিসেবে জোটের বৈঠকে অংশ নেন।
জোট সূত্রে জানা যায়, জমিয়তের বিষয়টি নিয়ে বৈঠক শুরুর আগে জোটের একজন শীর্ষ নেতা ক্ষোভ প্রকাশ করে ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকা বিএনপি নেতাদের কাছে ব্যাখ্যা চান। একইসঙ্গে ওই নেতা তার দল থেকেও বাইরে অপেক্ষমাণ একজন কেন্দ্রীয় নেতাকে বৈঠকে বসার সুযোগ দেয়ার দাবি জানান। পরে অবশ্য বিএনপির ওই নেতা জমিয়তের বিষয়টিকে চাপিয়ে যাওয়ার অনুরোধ করেন।
বিষয়টি নিয়ে জোটের কয়েকজন নেতার সঙ্গে কথা বললে তারা এজন্য বিএনপির একজন সহদপ্তর সম্পাদককে দায়ী করেন, যিনি জোটের শরিকদের সঙ্গে বৈঠকসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে দলের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করে থাকেন।
জোট সূত্রে জানা গেছে, ২০১২ সাল থেকে বিএনপি জোটে আছে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম। অনেক আগে থেকেই বিএনপির সঙ্গে ছিল বাংলাদেশ ইসলামী ঐক্যজোট। কিন্তু গত জানুয়ারিতে আব্দুল লতিফ নেজামীর নেতৃত্বাধীন ঐক্যজোট বিএনপি ছাড়ার ঘোষণা দেয়। ওই ঘোষণা-মঞ্চে ছিলেন জমিয়তের বর্তমান নির্বাহী সভাপতি মুফতি ওয়াক্কাস।
সূত্র আরও জানায়, ওই ঘটনার পর থেকে বিএনপির মধ্যে ওয়াক্কাসকে নিয়ে নানা ধরনের কানাঘুষা শুরু হয়। শেষ পর্যন্ত তিনি (ওয়াক্কাস) বিএনপির সঙ্গে থাকবেন কি না তা নিয়েও নেতাদের মনে শঙ্কা দেখা দেয়। গতকালের বৈঠকে ছিলেন জোটের এমন দুজন নেতা ঢাকাটাইমসকে বিএনপির এমন শঙ্কার কথা জানিয়েছেন। বলেছেন, শঙ্কার কারণেই মুফতি ওয়াক্কাস থাকার পরও একই দলের অন্য একজনকে বৈঠকে রাখা হয়েছে। যাতে করে অতীতের মতো কোনো নেতার নেতৃত্বে একটি অংশ জোট ছাড়লে শূন্যতার সৃষ্টি না হয়।
তবে এমনটা মানতে নারাজ মুফতি ওয়াক্কাস। মঙ্গলবার দুপুরে তিনি ঢাকাটাইমসকে বলেন, “আমি এবং আমাদের অর্থ সম্পাদক মনির হোসেন বৈঠকে ছিলাম। তবে এখানে কোনো দ্বন্দ্ব নেই। আমি যশোর থেকে এসে বৈঠকে অংশ নিয়েছি। কোনো কারণে আমি না থাকলে তাকে থাকতে হতো। যে কারণে তিনিও চলে এসেছেন।” তাকে নিয়ে কোনো শঙ্কা প্রকাশের সুযোগ নেই বলেও দাবি করেন ওয়াক্কাস।
জোটের একজন চেয়ারম্যান নাম প্রকাশ না করার শর্তে ঢাকাটাইমসকে বলেন, “জোট প্রধানের বৈঠকে যদি শরিক দলের চেয়ারম্যান এবং মহাসচিবও নয়, সম্পাদক পর্যায়ের নেতা উপস্থিত থাকেন তাহলে বৈঠকের সৌন্দর্য, ভাবগাম্ভীর্য বলতে কিছু থাকে?” জোটের প্রধান দল হিসেবে বিএনপিকে এমন বিষয় নিয়ে ভাবার পরামর্শ দিয়ে এই নেতা বলেন, “জোটের সংখ্যা ঠিক রাখার জন্য এমন চিন্তা করলে তা ভালো হবে না। কার্যকরও হবে না।”
তবে বিএনপির সহ-দপ্তর সম্পাদক শামীমুর রহমান শামীম ঢাকাটাইমসকে বলেন, “এটা নিয়ে ভুল বোঝাবুঝির অবকাশ নেই। জমিয়ত থেকে মুফতি ওয়াক্কাস ও নূর হোসাইন কাসেমীর থাকার কথা ছিল। কিন্তু কাসেমী সাহেব অসুস্থ থাকায় প্রতিনিধি হিসেবে অন্য একজনকে পাঠিয়েছেন।” সূত্র. ঢাকাটাইমস।