খতিব তাজুল ইসলাম::
(২য় পর্ব)
কায়রো মিশর ২রা এপ্রিল ২০১৬।আফ্রিকার সিসিলির অধিবাসি, মুসলিম কামান্ডার জাওহারকে ফাতেমী খলীফা আল-মুইজ কিছু সৈন্য সামন্ত দিয়ে মিশর জয় করার জন্য পাঠালেন। মিশর জয় হলো তারই হাতে স্থাপিত হলো নতুন যাত্রা।কাহেরা বা কায়রো শহরে ভিত্তির সময় ছিলো ৩৫৮ হিজরি/৯৬৯ঈসায়ী। তিনি তখন আল-আজহার মূলতঃ একটি মসজিদ রূপে তৈরি করেন। মাত্র দুই বছরের মাথা পুরো মসজিদের কাজ সম্পন্ন হয়। ৩৬১ হিজরির ৭ রামাদ্বানুল মোবারক মোতাবিক ২২ জুন ৯৭২ঈসায়ী তারিখে প্রথম নামাজের জন্য মসজিদের দরজা খোলা হয়। আল-আজহার নামটি কিভাবে এলো? ঐতিহাসিকগণ দুটি মত ব্যাক্ত করেছেন।ক- নবী নন্দিনী ফাতেমাতুজ জাহারার নামে আজহার নামের উৎপত্তি।খ- মসজিদের চারিদিকে ছিলো সুশুভিত ফুলের বাগান সেখান থেকেই নাকি আজহার নামটি পরিচিতি লাভ করে।
৯৭২-১১৭১ এই ফাতেমী প্রিয়ডে আল-আজহার ছোট আকারের একটি ইউনিভার্সিটি হিসাবে মিশরে দ্বীন ইসলামের শিক্ষা বিস্তারের জন্য কাজ চলতো। মুসলিম বিশ্বের জ্ঞানের কেন্দ্র ছিলো তখন বাগদাদ।অপরদিকে গ্রানাডা করডোভা তথা মুসলিম স্পেনের সুর্য তখন অস্তমিত হওয়ার পথে।অবশেষে সুলতান সালাহ উদ্দীন আইয়ূবীর হাতে যখন মিশরের শাসন আসলো তখন তিনিই এই আল-আজহারের শিক্ষা ব্যবস্থাকে চাংগা করলেন।গড়ে উঠলো জগৎ বিখ্যাত মনীষীদের কারখানা রূপে।
আবু আল- আব্বাস আল- ক্বালাক্বশানদী
তাক্বী উদ্দীন আল- মাক্বরীজী
ইবন হাজার আল-আসক্বালানী
বদরুদ্দীন আল-আইনী
সীরাজ উদ্দীন আল- বালক্বানী
শরফ উদ্দীন আল-মুনাউয়ী
আবু আল-মাহসিন ইবন তাজরীবী
শামছ উদ্দীন আল শাক্বাওয়ী
জালাল উদ্দীন আল-সুয়ূতী
মুহাম্মাদ তাক্বী উদ্দীন আল-ফাসী’র মতো মনীষী আল-আজহারের উপহার।
১৩০০ ঈসায়ীতে এক ভুমি কম্পের কারণে মসজিদের বিরাট ক্ষতি হয়। তৎকালীন শাসক কর্তৃক ফাটল গুলো ভাল ভাবে মেরামত করায় তা আজও বহাল তবীয়তে দন্ডায়মান। কায়রো এখন বিশাল একটি শহর। তাই বলা হয় আধুনিক কায়রো এবং পুরাতন কায়রো। পুরাতন বা ক্বাদীম কায়রো মানে ইসলামিক এরিয়া। শত শত ঐতিহাসিক নিদর্শনের মধ্যে কোথাও ভগ্ন ধশা কালের বিবর্তনে কোথাও আছে স্বশক্তি নিয়ে দাড়িয়ে কালের সাক্ষী হয়ে। স্পেনের করডোভা মসজিদ এবং জামেয়া আল-আজহার প্রায় একই আদলে বানানো। এই দুটি মসজিদের নির্মাণ কাজ প্রায় একই সময় কালের। খুব সম্ভবতঃ স্পেনের করডোভা মসজিদের শিল্পিরা সেখানের কাজ শেষ করে এসে কায়রো আল-আজহারের নকশায় এসে অংশ গ্রহন করেন। করডোভার মসজিদ আজ চার্চে রূপান্তরীত হয়েগেছে। আল-্আজহার চার্চ নাইবা হলো কিন্তু ঘোড়ার আস্তাবল বা মিউজিয়ামে রূপান্তরীত হতে আর কত যুগ বা বছর লাগবে সে হিসেব কষার সময় এসে হাজির হয়েছে এখন।