কমাশিসা ডেস্ক:
মুসলমানদের তৃতীয় পবিত্রতম স্থাপনা জেরুজালেমের আল আকসা মসজিদে টানা তৃতীয় দিনের মতো তাণ্ডব চালিয়েছে ইসরাইলি পুলিশ। জবাবে জর্ডানের বাদশাহ দ্বিতীয় আবদুল্লাহ হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, জেরুজালেমে ইসরাইলে উস্কানি অব্যাহত থাকলে, তা উভয় দেশের সমপর্কের জন্য ক্ষতিকর হবে। তিনি বলেন, জেরুজালেমে আরও উস্কানিমূলক কর্মকাণ্ড চালানো হলে, তা জর্ডান ও ইসরাইলের সমপর্কে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
প্রসঙ্গত, প্রতিবেশী ইসরাইলের সঙ্গে জর্ডানের একটি শান্তিচুক্তি রয়েছে। সফররত বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরনের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের তিনি আরও বলেন, দুর্ভাগ্যজনক হলেও, কঠোর পদক্ষেপ নেয়া ছাড়া জর্ডানের কোন উপায় থাকবে না। দখলকৃত পূর্ব জেরুজালেমের আল আকসায় মুসলমানদের সঙ্গে ইসরাইলি বাহিনীর সংঘর্ষ চলার মধ্যেই এমন মন্তব্য করলেন তিনি। এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি। প্রসঙ্গত, আল আকসা মসজিদের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব জর্ডানের রাজপরিবার অনেক দিন ধরে পালন করে আসছে। রোববার জর্ডান আল আকসা মসজিদে ইসরাইলি সেনাবাহিনীর অভিযানের নিন্দা জানিয়েছিল। কিন্তু টানা তৃতীয় দিনের মতো আল আকসা মসজিদের ছাদে দেখা গেছে ইসরাইলি বাহিনীকে। আল জাজিরার এক সংবাদে বলা হয়, ইসরাইলি বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে অন্তত ১৭ জন ফিলিস্তিনি আহত হয়েছেন। জেরুজালেম অ্যাফেয়ার্স ডিপার্টমেন্টের প্রধান সুলেইমান আহমেদ বলেন, ইসরাইলি বাহিনী ছাদের ওপর স্নাইপার বসিয়েছে ও রাবার বুলেট ছুড়ছে।
মুসলমান ও ইহুদিদের কাছে পবিত্র এ স্থাপনাটি প্রায়ই ইসরাইল ও ফিলিস্তিনের এ দু’গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হচ্ছে। ইহুদি নববর্ষ উপলক্ষে বিপুল পরিমাণ ইহুদি মসজিদ প্রাঙ্গণে প্রার্থনার জন্য ঢুকতে চাইলে বাধা দেয় মুসলমানরা। ইসরাইলি পুলিশ ইহুদিদের যাতায়াত নির্বিঘ্ন করতে চাইলে সংঘর্ষ বাআল আকসা মসজিদ প্রাঙ্গণে ঢোকার নিয়মাবলী পাল্টে দিতে পারে ইসরাইল। এক ফিলিস্তিনি জানান, মুসলিম ফিলিস্তিনিদের নামাজ পড়তে ভেতরে ঢুকতে দেয়া হচ্ছে না। অপরদিকে ইসরাইলি বসতিস্থাপনকারীদের পুলিশ পাহারায় মসজিদে প্রবেশ ও যেকোন স্থানে ঘুরার সুবিধা দেয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, উগ্র ডানপন্থিদের চাহিদা মোতাবেক এ মসজিদ ধ্বংস করে এখানে নতুন ইহুদি মন্দির নির্মাণ করার কৌশলই বাস্তবায়ন করছেন ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু। আবদেল আজিজ আল-আবাসি নামে আরেক ফিলিস্তিনি সংগঠক বলেন, বড় সমস্যা হলো, ইসরাইলিরা এখানে অবস্থানের স্থান ও সময় ভাগ করে দিয়ে নজির গড়ার চেষ্টা চালাচ্ছে। এর ফলে ভবিষ্যতে যাতে ইসরাইলি বসতিস্থাপনকারীরা আরও বেশি আমাদের মসজিদে প্রবেশ করতে পারে। কিন্তু আমরা এ পরিকল্পনার সঙ্গে কোন অবস্থাতেই একমত হবো না। কারণ, ইসরাইলিরা এ মসজিদ ধীরে ধীরে দখল করতে চায়।