অনলাইন ডেস্ক :: লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জে ছেলের সামনে পরকীয়ার অভিযোগ এনে খুরশিদা বেগম (৪২) নামে এক বিধবাকে গাছের সঙ্গে বেঁধে অমানবিক নির্যাতন করা হয়েছে। এ সময় তার মাথার চুল কেটে চুন-কালি লাগিয়ে দেয়া হয়।
গত মঙ্গলবার (২১ মার্চ) উপজেলার কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের ব্রহ্মপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় রামগঞ্জ থানায় নির্যাতিত ওই নারীকে জড়িয়ে ধরে তার একমাত্র মাদরাসা পড়ুয়া সন্তানের আহজারিতে উপস্থিত লোকজনের চোখও জলে ঝাপসা হয়ে ওঠে। ওই রাতে খুরশিদা বেগম বাদী হয়ে তিনজনকে আসামি করে থানায় মামলা করলে পুলিশ হাসিনা বেগম নামে এক নারীকে গ্রেপ্তার করে। খবর পেয়ে নির্যাতনের শিকার ওই নারীকে উদ্ধার করে রামগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
শুক্রবার (২৫ মার্চ) পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, মৃত আবদুল কাদেরের স্ত্রী খুরশিদা ব্রহ্মপাড়া গ্রামে রামগঞ্জ-চাঁদপুর ওয়াপদা বেড়িবাঁধের পাশে বসবাস করেন। তিনি নির্মাণ শ্রমিকের কাজ করতেন। মঙ্গলবার (২১ মার্চ) দুপুরে কাজ শেষে খুরশিদা বেগম বাড়ি ফিরছিলেন। এ সময় ওই গ্রামের হাছিনা বেগম তার স্বামীর সঙ্গে খুরশিদার পরকীয়া রয়েছে দাবি করে তাকে লাঞ্ছিত করেন। এক পর্যায়ে হাছিনা বেগমের ভাই আজিজ, ছেলে ফারুক হোসেনসহ ৪/৫ জন খুরশিদাকে নিজ বাড়িতে তুলে নিয়ে কামরাঙ্গা গাছের সঙ্গে হাত-পা বেঁধে মারধর করে। তার মাথার চুল কেটে চুন-কালি মেখে দেয়।
এ খবর ছড়িয়ে পড়লে এলাকায় উত্তেজনা দেখা দেয়। এলাকাবাসী নির্যাতনকারীদের গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবি জানিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেন।
নির্যাতিতা খুরশিদা বেগম জানান, তিনি রাস্তার কাজ শেষে নিজ বাড়ি ফিরছিলেন। এ সময় একই এলাকার নূর হোসেন, তার ছেলে ফারুক হোসেনসহ অন্যরা তাকে আটক করে জোর করে তুলে নিয়ে তাকে গাছের সঙ্গে বেঁধে বেদম মারধর করে মাথার চুল কেটে দেয়।
এ ঘটনায় অভিযুক্ত নূর হোসেন ও আজিজ পলাতক থাকায় তাদের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি।
রামগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তোতা মিয়া জানান, খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে গিয়ে নির্যাতিত নারীকে উদ্ধার ও ঘটনার সঙ্গে জড়িত হাসিনা বেগম নামে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পলাতক অন্য দুই আসামিকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। নির্যাতিত ওই নারী বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে নিজ বাড়িতে রয়েছেন। বাংলামেইল২৪ডটকম।