শুক্রবার ঢাকায় আলেমদের এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘তলোয়ারের মাধ্যমে’ বাঙালিরা মুসলমান হয়নি। বাঙালিরা ‘সুফিবাদের মাধ্যমে’ মুসলমান হয়েছে। “পীর-মাশায়েখদের কথা আমরা শুনি। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, আমরা অনেক বেশি ধর্মভীরু এবং অনেক বেশি খাঁটি মুসলমান।”
গণতান্ত্রিক ইসলামী ঐক্যজোট জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘স্বাধীনতার পূর্বে ও পরে বাংলাদেশের ধর্মীয় অঙ্গনের অবস্থা’ শীর্ষক এই আলোচনা সভার আয়োজন করে। সাবেক সরকারি কর্মকর্তা এইচ টি ইমাম বলেন, “আজ শুক্রবারের জুমায় দেখবেন কোনো মসজিদের ভেতরে জায়গা নেই। সমস্ত রাস্তা বন্ধ হয়ে যায়। এ রকম আর কোথাও আছে?”
“আমার নিজস্ব ঐচ্ছিক তহবিল সরকার যেটা দেয় তার থেকে অর্ধেকের মতো মসজিদে দেই। বিভিন্ন মসজিদে আগে দেই, মন্দিরেও দেই। বুদ্ধিস্টদেরও সাহায্য করি। ইসলাম শিখিয়েছে পরমত সহিংসতা, ইসলাম শিখিয়েছে শান্তি। সকলে একসঙ্গে বাংলাদেশ গড়ে তোলার মন্ত্রই দেশের ‘আজকের উন্নতির কারণ’ বলে মন্তব্য করেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার পিতার মতোই কাজ করেছেন মন্তব্য করে ইমাম বলেন, “বায়তুল মোকাররম দেখার মতো করে তৈরি করেছেন। ঢাকার বিভিন্ন মসজিদ সুদৃশ্য করে তৈরি হয়েছে। ক্যান্টনমেন্টের বড় মসজিদগুলোতে যান, এগুলো আগে ছিল?
“এখন ক্যান্টনমেন্টের চেহারা বদলে গেছে। যেমন সৈনিকদের বাসস্থানের ব্যবস্থা, তেমনি বাসার সামনে সুদৃশ্য বড় বড় মসজিদ।”
ইসলামের নামে যারা সন্ত্রাস করে, মানুষ হত্যা করে, তাদের ‘মুনাফেক’ আখ্যায়িত করেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের এই সদস্য।
তিনি বলেন, “এ রকম কথাও শুনতে হয়েছে- প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সিঁদুর পরেন। তার মতো পর্দানশীল মহিলা খুব কম দেখেছি। চলনে আচরণে, কথাবার্তায় তিনি সাচ্চা মুসলমান।”
অন্যদিকে বিএনপিনেত্রীর দিকে ইংগিত করে ইমাম বলেন, “যেসব নেত্রী রেডওয়াইন আর অন্যান্যৃ খেতে খেতে দাঁতের চেহরাই দেখবেন নাৃ তারা নেত্রীকে (শেখ হাসিনা) নিয়ে এ ধরনের কথা বলে।
“আমি দীর্ঘদিন পাকিস্তানে কাজ করেছি, দেখেছি পাকিস্তানে তারা রোজা রাখে ঠিকই, কিন্তু ইফতারের সময় হলে পানি মুখে দিয়েই তারপরে হুইস্কি। এ না হলে হয় না। এই হলো তাদের ইসলাম।”
আলিয়া মাদ্রাসার পাঠ্যক্রমে ‘মওদুদীবাদের আধিক্যের’ কথা ইসলামী ফাউন্ডেশনের কাছ থেকেও জানতে পেরেছেন বলে প্রধানমন্ত্রীর এই উপদেষ্টা জানান।
তিনি মাদ্রাসা শিক্ষার উন্নয়নে আওয়ামী লীগ সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের বিস্তারিত বিবরণ দেন এবং পাঠক্রম পরিবর্তনের পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দেন।
স্বাধীনতার আগে এ দেশে মাদ্রাসাগুলোতে ‘শুধু আমপাড়া-সিপারা পড়ানো হতো’ মন্তব্য করে ছোটবেলায় এক বছর মাদ্রাসায় পড়ার কথা জানান সাবেক প্রতিমন্ত্রী শামসুল হক টুকু।
“আমার বাবা ক্ষুদে ব্যবসায়ী ছিলেন। তার ইচ্ছা ছিল আমাকে কমার্সে পড়িয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের ম্যানেজার বানাবেন। ছোটবেলার উনি আমাকে মাদ্রাসায় ভর্তি করালেন।
“বাবা বললেন, নবান্নে যখন ধান কাটা হয়, মওলানা সাহেবদের না খাইয়ে আমরা খাই না। তুমি যদি কব্জি ডুবিয়ে দুধ-আম খেতে চাও, তাহলে মাদ্রাসায় পড়।
“বাবার চাপে গেলাম, পড়লাম। তিনজন ছাত্র ছিলাম, আমি এক বছর পরে চলে এলাম।”
বাংলাদেশের মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা এখন ‘ডিজিটাল বাংলাদেশের কারিগর’ হিসেবেও কাজ করার সুযোগ পাচ্ছে বলে মন্তব্য করেন টুকু।
গণতান্ত্রিক ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়াম্যান মাসউদুর রহমান বিক্রমপুরীর সভাপতিত্বে সংগঠেনর কয়েকজন নেতা ছাড়াও বেশ কয়েকজন আলেম আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন। বিডিনিউজ/ www.shomoybarta24.net
Tags প্রধানমন্ত্রীর মতো পর্দানশীল মহিলা খুব কম দেখেছি : এইচ টি ইমাম
এটাও পড়তে পারেন
কওমি মাদরাসা কল্যাণ ট্রাস্ট, বাংলাদেশ
খতিব তাজুল ইসলাম ট্রাস্টের প্রয়োজনীয়তাঃ কওমি অংগন একটি স্বীকৃত ও তৃণমূল প্লাটফর্ম। দেশ ও জাতির ...