শুক্রবার, ২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ ইং
কমাশিসা পরিবারবিজ্ঞাপন কর্নারযোগাযোগ । সময়ঃ রাত ১২:৫৮
Home / প্রতিদিন / লাউ খাওয়া সুন্নাত- কথাটি শুদ্ধ নাকি ভিত্তিহীন!

লাউ খাওয়া সুন্নাত- কথাটি শুদ্ধ নাকি ভিত্তিহীন!

index
মুফতি মাহফুজ তানিম ::
তিরমিযি শরিফে এসেছে হযরত জাবির রা. বর্ণনা করেন, আমি একদা রাসুল সা.’র বাড়িতে গেলাম । সেখানে একটি লাউ ছিল । আমি বললাম, ইয়া রাসুলাল্লাহ , এটা কি? তিনি বললেন, এটা লাউ । আমরা এই লাউ অধিক পরিমানে খাই । (তিরমিযি শরিফ, লাউ খাওয়ার অধ্যায়- ১৮৪৯ )

পবিত্র কুরআনে এরশাদ হয়েছে- তোমাদের জন্য আল্লাহর রাসুলের মধ্যে রয়েছে উত্তম আদর্শ । (সুরা আহজাব-২১) দেড় হাজার বছর পর এসে আজ বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত হচ্ছে, রাসুল সা.’র প্রতিটি কাজই বিজ্ঞানসম্মত ও সমগ্র পৃথিবীর জন্য উত্তম আদর্শ।

রাসুল সা.’র প্রিয় খাবারের একটি হলো লাউ । লাউয়ের ব্যাপারে বেশ কয়েকটি হাদিস এসেছে। যেমন বুখারি শরিফের ৫১১৭ নং হাদিস হযরত আনাস রা. থেকে বর্ণিত, একদা রাসুল সা. এক দর্জির নিকট গমন করলেন । তখন সে লাউ নিয়ে আসল আর রাসুল সা. লাউ খেতে লাগলেন । হযরত আনাস রা. বলেন, যখন থেকে আমি রাসুল সা.কে লাউ খেতে দেখেছি, তখন থেকে আমিও লাউ পছন্দ করতে শুরু করলাম । (বুখারি শরিফ, খাদ্যদ্রব্যের অধ্যায়, হাদিস নং- ৫১১৭)

মুসলিম শরিফে হযরত আনাস রা. থেকে বর্ণিত। একজন দর্জি রাসুল সা.কে দাওয়াত দিলো, রাসুল সা. তার বাড়িতে গেলেন। হযরত আনাস রা. বলেন- আমি রাসুল সা.কে দেখলাম, তিনি প্লেটে পরিবেশনকৃত লাউ উঠিয়ে খাচ্ছেন। সেদিন থেকে আমিও লাউ পছন্দ করতে শুরু করলাম । (মুসলিম শরিফ, কিতাবুল আতইমাহ )

তিরমিযি শরিফে এসেছে জাবির রা. বর্ণনা করেন, আমি একদা রাসুল সা.’র বাড়িতে গেলাম। সেখানে একটি লাউ ছিল। আমি বললাম, ইয়া রাসুলাল্লাহ, এটা কি? তিনি বললেন, এটা লাউ। আমরা এই লাউ অধিক পরিমানে খাই। (তিরমিযি শরিফ, লাউ খাওয়ার অধ্যায়, ১৮৪৯ )

বর্তমান চিকিৎসাবিজ্ঞানীদের গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে, লাউ মানবদেহের জন্য খুবই উপকারী একটি খাদ্য । লাউয়ের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে বর্তমান ডাক্তাররা বলছেন, লাউ এ প্রচুর পানি থাকে। এটা দেহে পানির পরিমাণ ঠিক রাখতে সাহায্য করে এবং ডায়রিয়াজনিত পানিশূন্যতা দূর করতে সাহায্য করে। লাউ কোষ্ঠকাঠিন্য, অর্শ বা পাইলস ও পেট ফাঁপা প্রতিরোধে সহায়ক।

১. লাউ নিদ্রাহীনতা দূর করে। পরিপূর্ণ ঘুমের জন্য লাউ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

২. লাউতে রয়েছে ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস। ১০০ গ্রাম লাউয়ে ২০ মি.গ্রা. ক্যালসিয়াম ও ১০ মি.গ্রা. ফসফরাস। এর মাধ্যমে লাউ দেহের ঘামজনিত লবণের ঘাটতি দূর করে। পাশাপাশি দাঁত ও হাড়কে মজবুত করে।

৩. ক্যালরির পরিমাণ কম থাকায় ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য লাউ যথেষ্ট উপকারী। লাউ ওজন কমাতেও ভূমিকা রাখে।

৪. লাউ টুকরা টুকরা করে কেটে সামান্য পরিমাণে ধইন্না, জিরা, হলুদ ও লবণ দিয়ে সিদ্ধ করে খেলে হৃদরোগের উপশম হয়।

৫. লাউ ত্বকের আর্দ্রতা ঠিক রাখে।

৬. এছাড়া নিয়মিত লাউ খেলে শরীরের শক্তি বৃদ্ধি পায়। ফলে কর্মউদ্দীপনা ও কর্মশক্তিও বাড়ে।

৭.বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধের পাশাপাশি লাউ শরীরের শক্তি বৃদ্ধি করে। এছাড়া গরমের সময় লাউ খেলে শরীর ঠাণ্ডা থাকে।

এ কারণেই হযরত ইউনুস আ. যখন মাছের পেট থেকে বের হলেন, তখন মহান আল্লাহ তায়ালা তাঁকে লাউ গাছের ছায়ায় আশ্রয় প্রদান করলেন। (সুরা সাফফাত ১৪৬) আল্লামা ইবনে কাছির রাহ. এ আয়াতের তাফসিরে লিখেছেন, মহান আল্লাহ তায়ালা ইউনুস আ.কে লাউ গাছের ছায়ায় আশ্রয় দিয়েছিলেন, কেননা লাউ গাছের ছায়া রোদ প্রতিরোধে সহায়ক। আর ইউনুস আ. মাছের পেট থেকে বের হওয়ায় তাঁর শরীর ছিল অত্যন্ত কোমল, তাই তাঁর জন্য কোমল ও ঠাণ্ডা খাবার প্রয়োজন ছিল । তাই মহান আল্লাহ তাঁর জন্য লাউয়ের মত প্রশান্তিদায়ক সব্জির ব্যবস্থা করেছেন ।

লেখক : প্রাবন্ধিক ও গবেষক

About Islam Tajul

mm

এটাও পড়তে পারেন

কওমি মাদরাসা কল্যাণ ট্রাস্ট, বাংলাদেশ

খতিব তাজুল ইসলাম ট্রাস্টের প্রয়োজনীয়তাঃ কওমি অংগন একটি স্বীকৃত ও তৃণমূল প্লাটফর্ম। দেশ ও জাতির ...