ইরাক ও সিরিয়ায় সক্রিয় জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট (আইএস) বিভিন্ন রাসায়নিক অস্ত্র তৈরি ও ব্যবহার করছে বলে মার্কিন সরকারের অনেকেই মনে করেন। নাম না প্রকাশ করার শর্তে যুক্তরাষ্ট্রের একজন কর্মকর্তা এ কথা জানিয়েছেন। খবর বিবিসির।
মার্কিন ওই কর্মকর্তা বলেন, ইরাক-সিরিয়া সীমান্তের দুই পাশেই আইএস রাসায়নিক অস্ত্র (মাস্টার্ড এজেন্ট) প্রয়োগ করেছে। এ রকম অন্তত চারটি ঘটনার তথ্য মিলেছে। এসব রাসায়নিক উপাদান গুঁড়ো অবস্থায় ব্যবহার করা হয়েছে।
বিবিসির একদল সাংবাদিক তুরস্ক-সিরিয়া সীমান্ত এলাকায় গিয়ে মার্কিন কর্মকর্তাদের ওই দাবির পক্ষে প্রমাণ পেয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্র মনে করে, রাসায়নিক অস্ত্র তৈরি করার জন্য আইএসের একটি বিশেষ শাখা সক্রিয় রয়েছে। তারা কামানের গোলার মতো প্রচলিত বিস্ফোরকের সঙ্গে মাস্টার্ড গ্যাস বা সালফার মাস্টার্ড ব্যবহার করছে। এ ধরনের গোলা বিস্ফোরিত হওয়ার পর ক্ষতিকর উপাদানগুলো ধূলিকণার সঙ্গে বাতাসে ছড়িয়ে পড়ে। আর সেগুলোর সংস্পর্শে মানুষের ত্বকে ফোসকা পড়ে এবং নানা রকমের যন্ত্রণা হয়।
মার্কিন কর্মকর্তারা মনে করেন, মাস্টার্ড এজেন্ট তৈরি করা খুব জটিল ব্যাপার নয়। জঙ্গিরা এখন সাধারণ রাসায়নিক অস্ত্র নিয়ে কাজ করলেও পরে আরও শক্তিশালী অস্ত্র বানানোর উদ্যোগ নিতে পারে।
আবার আরেকটি বিষয় মনে করা হয় যে সিরিয়া বা ইরাকের কাছ থেকে রাসায়নিক অস্ত্র পেয়ে থাকতে পারে। তবে অনেকে এর সঙ্গে দ্বিমতও প্রকাশ করেন। প্রায় এক দশক আগে যুক্তরাষ্ট্রের ইরাক অভিযানের সময়ই সম্ভবত তা উদ্ধার করে মার্কিন বাহিনী। আর সিরিয়ার সরকারের কাছে রাসায়নিক অস্ত্র নেই বলেই ধারণা করা হয়। কারণ, সিরিয়া জাতিসংঘ-সমর্থিত এক চুক্তির আওতায় রাসায়নিক অস্ত্র নিষিদ্ধকরণ কার্যক্রমে যুক্ত আন্তর্জাতিক সংস্থা দ্য অর্গানাইজেশন ফর দ্য কেমিক্যাল ওয়েপনসের (ওপিসিডব্লিউ) কাছে ১ হাজার ১৮০ টনেরও বেশি বিষাক্ত উপাদান হস্তান্তর করেছে। তা ধ্বংসের প্রক্রিয়া ২০১৩ সালের অক্টোবরে শুরু হয়ে পরের বছর জুনে শেষ হয়।
সিরিয়ায় ২০১১ সালের শুরুর দিকে সরকারবিরোধী বিক্ষোভের পর গৃহযুদ্ধ শুরু হয়। এতে এ পর্যন্ত দুই লাখেরও বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। তবে তাদের মধ্যে রাসায়নিক অস্ত্রে মৃত্যু হয়েছে—এ রকম মানুষের হার খুবই কম।
মার্কিন সামরিক কর্মকর্তা কেভিন কিলিয়া গত আগস্টে বলেন, ইরাকের উত্তরাঞ্চলে কুর্দিদের বিরুদ্ধে এক হামলায় আইএস জঙ্গিরা সালফার মাস্টার্ড ব্যবহার করেছে। তাঁরা এ ব্যাপারে কিছু তথ্য পেয়েছেন, তবে নিশ্চিত হওয়ার জন্য সেগুলো যাচাই করে দেখা দরকার। সালফার মাস্টার্ড একটি প্রথম শ্রেণির রাসায়নিক উপাদান। রাসায়নিক যুদ্ধ ছাড়া কোথাও এটি ব্যবহার করার ঘটনা বিরল।
মাস্টার্ড এজেন্ট বা সালফার মাস্টার্ড: সালফার মাস্টার্ডের গন্ধ অনেকটা রসুন, পেঁয়াজ বা সরিষার মতো। আবার কখনো কখনো এটি একেবারেই গন্ধবিহীন হয়ে থাকে। স্বাভাবিক তাপমাত্রায় এই রাসায়নিক উপাদান তরল অবস্থায় থাকে। রং স্বচ্ছ থেকে শুরু করে হলদে বা বাদামি হতে পারে। প্রশ্বাস বা ত্বক ও চোখের মাধ্যমে এটি মানবদেহে যেতে পারে। সালফার মাস্টার্ডের সংস্পর্শে সাধারণত কারও মৃত্যু হয় না। তবে সারা শরীর থেকে এটি সম্পূর্ণ অপসারণ করার উপায় নেই।
এটাও পড়তে পারেন
প্যান্ডেলের বাইরে সাউন্ড ব্যবহার করা নাজায়েয!
মুহিউদ্দীন কাসেমী: কিছুদিন আগে কী এক কাজে যেন ঢাকায় গেলাম। এশার সময় ট্রেনে ফিরলাম। স্টেশনে ...