আওয়ামীলীগ এই দেশে কচুরিপনা নয় যে, আলেম উলামারা ফুক দিবেন আর আওয়ামীলীগ উড়ে উড়ে নিঃশেষ হয়ে যাবে। এই বোকামী ধারণা আমাদের দেশের আলেম সমাজের মাথায় যতদিন থাকবে ততদিন শহীদ আর রক্ত হবে আলেম ওলামার নিত্যবন্ধু। আওয়ামীলীগ বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট তৈরী করছে। বিনা পায়সায় ফোর’জি ব্যবস্থার পায়তারা করছে। নাসার সাথে চুক্তির চিন্তা করছে। বিশ্ব তথ্যকেন্দ্রের সাথে প্রেম করছে। কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে দেশ ও দশকে এগিয়ে নেওয়ার ট্রাই করছে। আগামী ৪১ সালের মধ্যে দেশকে উন্নত বিশ্বের প্রথম সারীতে যোগ করার আশ্বাস দিচ্ছে। তথ্যপ্রযুক্তিকে হান্ড্রেড পার্সেন্ট কন্টোল করছে।
ক্ষমতাকালীন দীর্ঘসময়ধরে তারা সরকারের সর্বেোচ্চ পর্যায়ে চরম নিজস্ব লোক নিয়োগ দিয়ে আপামর জনসাধারণকে ভক্ত বানিয়ে প্রেম লুটছে। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির নজিরবিহীন দৃষ্টিান্ত স্থাপন করতে 5% হিন্দু জনগোষ্ঠিকে 40% প্রশাসনে নিয়োগ দিয়ে একজন সৎ ও আদর্শমানুষ এসকে সিনহাকে প্রধান বিচারপতি হিশেবে নিয়োগ দিয়েছে। তিলে তিলে নিজস্ব মতাদর্শের লোককে তারা পরম অবস্থানে বসিয়েছে। যা আগামী ৫০ বছরেও ক্ষয় হবার নয়। এইগুলা আওয়ামীলীগের চরম সফলতার পরিচয়।
বিপরীতে আলেম সমাজ মাদরাসায় দারস দিচ্ছেন। আদর্শ ছাত্র তৈরী করছেন। খতমে নারী-খতমে বোখারীর ফজিলত বর্ণনা করছেন। অস্বীকৃত-শিক্ষিত-বেকার জনসংখ্যা বৃদ্ধি করছেন। তুচ্ছ মতানৈক্যের কারণে ইচ্ছেমাফিক ব্যঙের ছাতার মতো কওমী মাদরাসা-মক্তব তৈরী করে সমাজে দ্রুম্রজাল সৃষ্টি করছেন। অদক্ষ অযোগ্য ও হতদরিদ্র রাজনীতিক তৈরী করে একটা বৃহত্তম জনগোষ্ঠীকে আবেগের জালে আটকে রাখছেন। শিক্ষাব্যবস্থায় গোড়া বানিয়ে যার যার প্রতিষ্ঠান দিয়ে একেকটা শিক্ষবোর্ড তৈরী করে শিক্ষার মান কলোনিয়াল করে রেখেছেন। দেশের শাসন ব্যবস্থা, শিক্ষা ব্যবস্থা, আইন ব্যবস্থা, পরিকল্পনা ব্যবস্থা, বিচার ব্যবস্থা, দারিদ্র বিমোচন ব্যবস্থা, অর্থব্যবস্থা থেকে শুরু কোন একটা সেক্টরের উপযোগী করে কিছু মানুষ তৈরী করার দুরতম চিন্তাও তাদের মাথায় নেই। আছে শুধু সরকার হঠাও আন্দোলনের চিন্তা। আছে নাস্তিক মুর্তাদ খতমের চিন্তা। নিজের প্রতিষ্ঠিত লিল্লাহ মাদরাসার দুইচারজন ছাত্র নিয়ে একটা ব্যনারের পিছে দাড়িয়ে যাওয়া। আর পরের দিন পত্রিকার সাথে লবিং করে একটা ফটোশুট। ব্যস এই পর্যন্ত ইসলাম কয়েমের সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা।
বি বাড়িয়ায় একজন ছাত্র শহিদ হলো। সারা দেশের আলেম উলামা কথা বললেন। হরতালের কর্মসূচী আসল। অতঃপর সরকারের লোকজন দ্বারা বিষয়টা যেভাবেই হোক সমাধান হলো। পুলিশের দুই কর্মকর্তাকে বদলী করা হলো। যাদেরকে বদলী করা হলো, তারা এ.এস.পি ও ওসি। সৌভাগ্যক্রমে তারা দুইজনই হিন্দু! এই সামান্য বিষয়গুলো, শাসন ব্যবস্থার সামান্য রহস্যগুলো কোন কারণে আমাদের মাথায় ঢুকে না। বিচার ব্যবস্থার সামান্য রহস্যগুলো এতদিন যাবত কেনো আমাদের মাথায় ঢুকে না। আমরা কেনো এই দেশে কিছু সিকিউরিটি গার্ডও তৈরী করার চেষ্টা করি না। ওমুক সঙ্কর আর তমুক পালের গুলিতে ইসলাম উদ্দিন শহিদ হয়।কিন্তু ইসলাম উদ্দিনরা কেনো একজন সিকিউরিটি গার্ডের দায়িত্বে থাকে না। শহিদ ইসলাম উদ্দিনের অাইনজীবি কেনো প্রভাত কুমার? শহিদ ইসলাম উদ্দিনের মামলার বিচারক কেনো সঞ্জয়দত্ত? কারণ সঞ্জয়রা সেই যোগ্যতা অর্জন করে বসেই আছে। আর আমরা মক্তব প্রতিষ্ঠা করে বগল বাজানোর ধান্ধায় কামড়াকামড়িতে লিপ্ত।
লেখক: গবেষক কলামিস্ট প্রাবন্ধিক।