ইবনে আবদিল বার মালেকীর নামে এ কেমন মিথ্যাচার?
মুযাফফার বিন মুহসিন। আহলে হাদীস ভাইদের অন্যতম শায়খ।তার লেখা বই পড়ে ওনারা আমাদের নামাজের ভুল ধরেন। আমরা রাসূলুল্লাহর নামাজ বাদ দিয়ে ইমাম আবু হানিফার নামাজ পড়ি। আমাদের নামাজ সহীহ হাদীস অনুযায়ী হয়না।বেদয়াত, শিরকে আমাদের আমল ভরপুর। আরো কত গাঁজাখুরি কথা!
অথচ তিনি একজন নির্লজ্জ মিথ্যুক। তারা নাকি মদীনায় গ্রাজুয়েট করে আসে! আমি অবাক হয়ে যাই, মদনিা থেকে এসে যখন দুহাত খোলে মিথ্যা লিখে। ইমামদের নামে মিথ্যা কথা চালিয়ে দেয়। মিথ্যা বলা এবং লেখার যে ভয়াবহ পরিণতি সহীহ হাদীসে রয়েছে, সেগুলো কি তারা দেখেনা! নাকি বিরোধিতা করতে গিয়ে সব আকাম কুকাম জায়েজ হয়ে গেছে। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, শায়খ নামীয় ব্যক্তিগুলোর কাছে মিথ্যা এখন ডাল-ভাত!
মুযাফফার সাহেব ইমামের পিছনে সূরায়ে ফাতেহা পড়ার আলোচনায় আমাদের দলীলের উল্লেখ করতে যেয়ে লিখেন: “ওমর বিন খাত্ত্বাব রাঃ বলেন: আমার ইচ্ছা ঐ ব্যক্তির মুখে পাথর মারতে, যে ইমামের পিছনে কিরাআত পাঠ করে।
তাহকীক: উক্ত বর্ণনা সহীহ নয়।টিকাতে বলেন: আত তামহীদ১১/৫০. فمنقطع لا يصح ولا نقله ثقة. (জাল হাদীসের কবলে রাসূলুল্লাহ ছাঃ এর সালাত)
প্রথম কথা হল,আরবী ইবারতের সঠিক অনুবাদ করতে উনি ভুল করেছেন। শুদ্ধ করে অনুবাদ পারেন না, আর ইলমের কি বাহাদুরি! মূর্খতার ও একটা সীমা থাকা চাই। প্রথমে হাদীসসসসটি দেখুন:
وددت أن الذي يقرأ خلف الإمام في فيه حجر
সঠিক অনুবাদ হল: যে ব্যক্তি ইমামের পিছনে কিরাআত পড়ে, যদি তার মূখে পাথর মারা হত!
তিনি হাওয়ালা দিযেছেন ইবনে আবদিল বার মালেকী লিখিত আ তামহীদের। পরে তার মন্তব্য উল্লেখ করেছেন।কিন্তু অনুবাদ করেননি। অর্থ হল: হাদীসটি বিচ্ছিন্ন। সহীহ নয়। কোন ছ্কিাহ বর্ণনাকারী বর্ণনা করেন নি।
এখানে তিনি চরম জালিয়াতি করেছেন। কারণ ইবনে আবদিল বার একথঅ উমর রাঃ এর হাদীস সম্পর্কে বলেননি। বরং এ সংক্রান্ত সা’দ বিন আবি ওয়াককাসের আরেকটি হাদীস সম্পর্কে বলেছেন। কিন্তু তিনি চালিয়ে দিয়েছেন উমর রাঃ এর হাদীসের ব্যাপারে। ইবনে আবদিল বারের পুরো বক্তব্য দেখুন:
وأما ما روى عن سعد بن أبي وقاص أنه قال وددت أن الذي يقرأ خلف الإمام في فيه حجر فمنقطع لا يصح ولا نقله ثقة.
অর্থাৎ:সা’দ বিন আবি ওয়াককাস থেকে যে বর্ণিত হয়েছে, যে ব্যক্তি ইমামের পিছনে কিরাআত পড়ে, যদি তার মূখে পাথর মারা হত, এ হাদীসটি হাদীসটি বিচ্ছিন্ন। সহীহ নয়। কোন ছ্কিাহ বর্ণনাকারী বর্ণনা করেননি।
আপনি বলুন, এ ধরণের ধোকাবাজকে আপনি কি বলবেন? শায়খ মহাশয়, রিয়ালের ঘ্রাণে অন্ধ হয়ে যাবেন না!আল্লাহ কিন্তু একজন আছেন। তার সামনে সব কিছুর হিসাব দিতে হবে। সুতরাং এমন মিথ্যাচার করতে একটু আল্লাহকে স্মরণ করবেন।
লেখক : মুফতি ও মুহাদ্দিস, জামেয়া আবু বকর সিদ্দিক রা., ঢাকা।
আরও পড়ুন :
৪র্থ পর্ব- এ কেমন অসত্য প্রচার?
৫ম পর্ব- সহীহ হাদীসের নামে মুজাফফার বিন মুহসিনের দাগাবাজি (২)
৬ষ্ট পর্ব- এমন নির্লজ্জ মিথ্যা লিখতে কি ওদের হাত কাঁপে না?