বর্তমান বিশ্বে দুর্নীতি এক কালো সাপের মত মানুষের আত্মর সাথে বিস্তার লাভ করেছে। যার অনেক শাখা প্রশাখা রয়েছে, প্রতিটি অনাকাঙ্খিত শাখা প্রশাখায় রয়েছে অপসংস্কৃতির ছোয়া, যার ফলে মানুষ আজ প্রতিটি ধাপে ধাপে অশান্তির জ্বর। প্রত্যেক মানুষ শান্তি চায়,সুখ চায়, চায় উন্নতি। কেউ অশান্তি ও কষ্টের নৈরাজ্য চায় না। কোন মানুষ দরিদ্র, মূর্খ, অজ্ঞ হিসেবে সমাজে বসবাস করতে চায় না। যদি পূর্বেকার যুগের দিকে তাকান সেখানে দেখবেন মানুষ একে অন্যকে অন্যায় ভাবে জুলুম, নির্যাতন, নিপীড়ন চালাতে কোন দ্বিধাদন্দ করতো না। যেখানে মানুষের কোন অধিকার ছিলো না। রাহুগ্রাসে ছিল প্রতিটি মানুষ বর্বরতায় লিপ্ত। আর সেই পথহারা মানুষদেরকে হেদায়াতের পথ দেখানোর জন্যে এই অনাকাঙ্খিত বিশ্বে আত্মপ্রকাশ করেছিলেন বিশ্ব নবী হযরত মোহাম্মদ মোস্তফা (সা.)। তিনি শিখিয়ে ছিলেন মানুষের মানবীয় অধিকার। মানুষ যাতে করে সুখে শান্তিতে বসবাস করতে পারে, নিজেদের সু-মহান মর্যাদায় আত্মরক্ষা স্থাপন করে স্বাধীন ভাবে জীবন-যাপন করতে পারে, ্এ আকাঙ্খা মানুষের অন্তরে সার্বক্ষনিক বিদ্যায়ীত করে দিয়েছেন। প্রতিটি মানুষ চায় ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক, রাজনৈতিক, আন্তর্জাতিক সর্বক্ষেত্রে সৌন্দর্যের নীতিমালার আলোকে চলতে। এটা মানুষের জন্মগত সভাব। এখন প্রশ্ন হতে পারে তাহলে বর্তমান বিশ্ব কেন? এত বর্বরতা, এর একমাত্র কারণ হচ্ছে মানুষ আজ কুসংস্কারে বিদ্যমান এবং দায়িত্বহীনতার দিকে অগ্রসর। বর্তমান বিশ্ব আজ জাহেলী সমাজ ব্যবস্থা পরিচালিত, এ ব্যবস্থাপনাই মানুষকে দায়িত্বহীনতার দিকে অগ্রসর করেছে। মানুষ সকল সৃষ্টির সেরা জীব, তাকে সুন্দর কাঠামো দিয়ে সৃষ্টি করা হয়েছে অথচ সে তার কার্যকলাপের কারণে সমাজে সর্বনি¤œস্থরে হয়ে বসবাস করছে। তাকে যে স্রষ্টা সৃষ্টি করেছেন তার নীতিমালাকে ভূলে গিয়ে মানব রচিত অকল্যাণকর মতবাদের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে। যে বিধান মানুষকে শান্তি ও নিরাপত্তার গ্যারান্টি দিতে পারেনী বরং দূর্নীতি রাহুগ্রাসে ছিলো ভরপুর, এই বিশ্বের কোন প্রান্তেও শান্তির ছোয়া ছিলোনা। সেখানেই সত্য ধর্ম ইসলামের আলোয় আলোকিত হয়ে একমাত্র জীবন ব্যবস্থা ইসলামেই মানুষকে মানবতার কাঙ্খিত পথ দেখিয়ে শান্তি ও নিরাপত্তার গ্যারান্টি দিয়েছে। ধনী-গরীব, জ্ঞানী-মূর্খ সর্বসÍরের মানুষের মাঝে ভাই ভাই বন্ধন সৃষ্টি করেছে। বলা যায় ইসলাম-ই হচ্ছে একমাত্র মুক্তির পথ। সকল জুলুম, নির্যাতন,অশান্তি, কুসংস্কার ও জাহেলীয়াতের অন্ধত্ব নির্মূল দূরীকরণে আম্বিয়ায়ে কেরাম আহ্বান জানিয়েছেন সত্যের পথে। ন্যায় ও সত্যের পতাকা চির সমন্নত রাখার দায়িত্ব ছিলো রাসূলগণের উপর। তাদের সম্পর্কে মহান আল্লাহ কে¦ারআনে এরশাদ করেছেন: ”তোমরা লড়াই করে যাও ততক্ষণ পর্যন্ত যতক্ষণ না ফেতনা-অন্যায় নির্মূল না হয়”
ইসলাম চায় প্রচলিত অন্যায়-অত্যাচার ও জাহেলী সমাজ কাঠামো অমূল পরিবর্তন এবং ইসলাম আহ্বান জানায় জালেম ও সীমালঙ্গনকারীর আনুগত্য প্রত্যাখ্যান করতে। কেননা পবিত্র ক্বোরআনে আল্লাহ তা’আলা ঘোষণা করেছেন ”সেসব সীমালঙ্ঘনকারীর আনুগত্য করোনা,যারা যমীনে বিপর্যয়সৃষ্টি করে,সংস্কার ও সংশোধনের কাজ করে না” শুয়ারা ১৫১-১৫২
সমাজকে সকল অন্যায়-অত্যাচার, হিংসা-বিদে¦শ, দূর্নীতি উৎখাত করতে হলে সর্বপ্ররিস্থিতিতে বেশী প্রয়োজন ইসলামী আদর্শের। আজ থেকে চৌদ্দশত বৎসর পূর্বে সর্বকালের সর্বশেষ্ট ও সর্বশ্রেষ্ট মানব হযরত মোহাম্মদ মোস্তফা (সাঃ) মদীনার সনদ তথা তান জীবনাদর্শ রেখেগিয়েছেন। বিশ্বের বুকে এই মহা-রাষ্ট্র মহা-নায়ক এর মত আর কোন ব্যক্তির সুচনাই হয় নাই আর হবেওনা । তার জীবনাদর্শ ব্যতীত কোন মানুষ সত্যিকার অর্থে ইসলামী আদর্শে জীবন যাপন করতে পারবেনা ফলে সে হবে ইসলামী আদর্শহীন ব্যক্তিত্ব। অতএব বলা যায় রাসূল (সাঃ) জীবনাদর্শ ব্যতীত কোন মানুষ পরিপূর্ণ মুসলমান হতে পারবেনা।
তাই আসুন আমরা সবাই রাসূল (সাঃ) জীবনাদর্শ দৃঢ়ভাবে আকড়ে ধরি।
লেখক : মোহাম্মদ নাসিরুদ্দীন
Muhammadnasiruddin76@gmail.com