বৃহস্পতিবার, ২১শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং
কমাশিসা পরিবারবিজ্ঞাপন কর্নারযোগাযোগ । সময়ঃ বিকাল ৪:৫৭
Home / অনুসন্ধান / ঐশীবাণী, ঐশীজ্ঞান, ঐশ্বরিক

ঐশীবাণী, ঐশীজ্ঞান, ঐশ্বরিক

 Sultan Mahmud ::

Quran Komshishaকী চমৎকার শব্দ! পড়তেই মনটা যেন খুশিতে উৎফুল্ল হয়ে উঠে। আর নিজের লেখায় সফলভাবে প্রয়োগ করতে পারলে তো মনে হয় আমি অনেক বড় সাহিত্যিক হয়ে গেছি। অনেক মান্যবর আলেম লেখকের লেখায়ও শব্দগুলোর সরব উপস্থিতি পাওয়া যায়। কিন্তু শব্দগুলোর গহীনে যে সর্বনাশা বিষ সুপ্ত রয়েছে তা আমরা উপলব্ধি করি না। এগুলো মূলত হিন্দুয়ানী শব্দ। ঐশীবাণী অর্থ- ঈশ্বরের বাণী, ঐশীজ্ঞান অর্থ- ঈশ্বর প্রদত্ত জ্ঞান আর ঐশ্বরিক অর্থ- ঈশ্বর সম্বন্ধীয়। কুরআনের বাণী বোঝাতে আমরা ঐশীবাণী শব্দটা ব্যবহার করি। এভাবে কুরআনে জ্ঞান বোঝাতে ঐশীজ্ঞান লিখি। অথচ এর পরিবর্তে আমরা আল্লাহর বাণী, আল্লাহ প্রদত্ত জ্ঞান ইত্যাদি শব্দ লিখতে পারি।

হিন্দুরা আল্লাহকে ঈশ্বর, ভগবান বলে সম্বোধন করে। অনেক জ্ঞানীর মতে আল্লাহকে এসব শব্দে ডাকা শিরিক। কেননা ‘আল্লাহ’ শব্দটি ক্লীবলিঙ্গ। এর কোন পুরুষ বা স্ত্রীবাচক শব্দ নাই। কারণ আমাদের বিশ্বাস হচ্ছে, আল্লাহ পুরুষ বা নারী কোনটাই নয়। তিনি কাউকে জন্ম দেন নি, কারো থেকে জন্মগ্রহণ করেনও নি। অথচ ঈশ্বর শব্দটি পুরুষবাচক। এর স্ত্রীবাচক শব্দ হচ্ছে, ঈশ্বরী। এভাবে ভগবানের ভগবতী ও দেবতার দেবী রয়েছে। তাই ঐশীবাণী, ঐশীজ্ঞান ও ঐশ্বরিক- এই শব্দগুলো লিখলে বা বললে শিরিক হতে পারে। তাছাড়া আল্লাহকে বিধর্মীদের ব্যবহৃত শব্দে সম্বোধন করা নিষেধ আছে। পবিত্র কুরআনে বলা হয়েছে- ‘আল্লাহর সুন্দরতম নামসমূহ রয়েছে। সুতরাং তাকে এ নামসমূহের দ্বারা ডাক ( সুরা আরাফ, আয়াত নং ১৮০)
তেমনি আল্লাহকে নির্দেশ করে নিরানব্বই নামের বাইরে এমন ভিন্ন শব্দ দ্বারাও আল্লাহকে ডাকা যাবে। তবে এর জন্য শর্ত হলো, তা বিধর্মীদের কোন বাতিল মা’বুদ বা গাইরুল্লাহর জন্য ব্যবহৃত না হতে হবে। আল্লাহ তা’য়ালা বলেন- ‘তাদেরকে বর্জন কর, যারা আল্লাহর নামের ব্যাপারে সীমা লংঘন করে। অচিরেই তারা যা করে চলেছে তার প্রতিফল পাবে। (সুরা আরাফ, আয়াত ১৮০)

(ব্র্যাকেটিকা)

লেখক হওয়া যেমন কঠিন, কষ্টসাধ্য কাজ, তেমনি কলমের লাগাম চেপে ধরাও শ্রমসাধ্য ব্যাপার। অনেক ভাব, অনুভব মনে উদিত হয়, কিন্তু সব সময় সবকিছু লেখা যায় না। লেখা উচিতও নয়। একটা সুন্দর শব্দ নিজের লেখায় কে লিখতে চায় না? কিন্তু শব্দের অভ্যন্তরে যে বিষক্রিয়া আছে সেটাও অনুধাবন করতে হবে। অনেককে দেখি নিজের গল্পে, প্রবন্ধে ইংলিশ শব্দ প্রয়োগ করে থাকেন। আমরা মনে করি তিনি অনেক উঁচু মাপের সাহিত্যিক। কিন্তু তিনি যে বাংলা ভাষার স্বকীয়তা-স্বাতন্ত্র্যবোধ অঙ্কুরেই বিনাশ করে দিচ্ছেন তা আমরা বুঝি না। সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের একজন অধ্যাপক, মরহুম কবির চৌধুরীও ইংরেজি থেকে অনেক বই অনুবাদ করেছেন। ইংরেজি ভাষায় তারা অনেক বড় পণ্ডিত। কিন্তু তাদের কোন বাংলা লেখায় একটা ইংরেজি শব্দও প্রয়োগ করেন নি। উদ্ধৃতি হিসেবে অবশ্য লেখা যায়।1470099_1592011634385618_7127787073582267725_n

আবার অনেককে দেখি নিজের লেখায় অভিধান থেকে যাবতীয় কঠিন শব্দগুলো এনে বসিয়ে দেয়। এদের অনেকের লেখার অবস্থান মানব বসতির বাইরে। কঠিন শব্দ ব্যবহার করে নিজেকে বড় ভাবা যায়। মনে মনে তৃপ্তির ঢেকুর তোলা যায়, তবে পাঠক প্রিয়তা পাওয়া যায় না। পাঠক প্রিয়তা পেতে হলে হুমায়ূন আহমেদের মত সহজ, সরল ও সাবলীল ভাষা লিখতে হবে।

লেখক: গবেষক ইসলামি চিন্তাবিদ শিক্ষাবিদ।

About Islam Tajul

mm

এটাও পড়তে পারেন

সিলেটের পবিত্র মাটি আবারও কলংকিত হলো রায়হানের রক্তে!

পুলিশ ফাড়িতে যুবক হত্যা: সিলেটজোড়ে চলছে রহস্য! এলাকাবাসীর প্রতিবাদ!! সিলেট নগরীতে রায়হান নামক এক যুবকের ...