শনিবার, ২০শে এপ্রিল, ২০২৪ ইং
কমাশিসা পরিবারবিজ্ঞাপন কর্নারযোগাযোগ । সময়ঃ রাত ২:২৮
Home / অনুসন্ধান / বাংলাদেশের নিরীহ ছাত্রদের উপর এই নিষ্ঠুর মানসিক নিপীড়ন কেন?

বাংলাদেশের নিরীহ ছাত্রদের উপর এই নিষ্ঠুর মানসিক নিপীড়ন কেন?

প্রায় দু ঘণ্টা ধরে একটি জিনিস বারবার মনে পীড়া দিচ্ছে। পুরাতন স্মৃতি। শৈশবের কথা। বয়স তখন ৮/৯ বছর। মাদ্রাসায় সবার মত আমিও একজন ছাত্র। মাস্টার সাব হুজুর ইতিহাস পড়ান। হুজুর ছিলেন খুব গরম, সবাই তাকে খুব ভয় করত। আর কারো এমনটি হোক বা না হোক তিনি ক্লাসে আসার সময় হলেই আমার তখনকার নিরীহ হৃদয় খানা আতঙ্কে ক্ষেপে উঠত। সেই একই হুজুর আমাদেরকে আবার ভূ-গোল ও পড়াতেন। পড়েছি “রাজা আওরঙ্গজেব” “দিল্লির তুগলক বংশের সুলতান প্রথম, দ্বিতীয়” …দের ইতিহাস। মুসলিম রাজা বাদশাহ দের উত্তান-পতনের ইতিহাস। এই ইতিহাস এবং ভূ-গোলের ছোট-ছোট ছাপার পুরো এক দেড় পৃষ্টা মুখস্ত করে আসতে হত প্রায় প্রতিদিন।

ইতিহাস আর ভূ-গোলের পাঠাদানে এ নিয়ম চলে আসছিল যুগ যুগ ধরে। শুধু আমাদের মাদ্রায় নয়, স্কুল-মাদ্রাসা প্রায় সবখানেই এক নিয়ম। তবে সত্যি কথা বলত আজ সেই মুখস্ত করা পৃষ্টার একটি লাইনও আর স্মরণ নাই। আমার তখনকার সাথীদের কারও মনে আছে বলে মনে হয় না। তাহলে ঐ সমস্ত ইতিহাস মুখস্থ করার পিছনে সেই মুল্যবান সময় কেন ব্যায় করলাম। আমি তো এটি শিশুই ছিলাম, আমার কী এ জ্ঞান ছিল যে এ গুলো সময়, জীবনে নেহায়েত অপচয় বৈ কিছু নয়? আমার পক্ষের হয়ে এ বিষয়টি বুঝার কেউ কি ছিল না? আসলে ছিলই না। ইতিহাস আর ভূ-গোল কী মুখস্ত করার কিছু? আমরা ইতিহাস পড়ব। কোথায় কী ঘটে ছিল জানব। ইতিহাস পড়ে শিক্ষা নিব।Komashisha 01images

কিন্তু আমাদের ইতিহাস বুঝার নয় পড়ার ছিল, জানার নয় মুখস্থ করার ছিল। যদি ঐ সময়টিতে একটি করে কোরআনের সুরা মুখস্থ করানো হত তাহলে হয়তো এখন জীবনে কাজে আসত! কিন্তু কেন এমন অনর্থক কাজে সেই সোনার শৈশব বিলিয়ে দিলাম ভেবে না পাই কুল কিনারা। সবচে হাস্যকর বিষয় হলো তখন বাংলা সাহিত্যের প্রশ্নোত্তর গুলোও আমাদেরকে মুখস্থ করতে হত! কেমন বাস্তবতা বিবর্জিত শিক্ষা পদ্ধতি !! ভাবতেও অবাক লাগে! এ যেন ছিল এক মুখস্থের মহামারি! বাংলা মুখস্থ, ইংলিশ মুখস্থ, ইলমে সারফ মুখস্থ, ইলমে নাহু মুখস্থ! কী আজব কান্ড? সারা আরব জুড়ে আরবি পড়ানো হয় এতে মুখস্থের কোন বালাই নাই। ইংল্যান্ড জুড়ে ইংলিশ পড়া হয় কিন্তু এখানেও মুখস্থ করতে হয়না কোনো কিছু, শুধু বাংলাদেশের নিরীহ ছাত্রদের উপর এই নিষ্ঠুর মানসিক নিপীড়ন কেন? কবে যে হবে এর সমাধান? “ক্বুল সীরু ফীল আরদ”র দারস শুনেছ” তবে এর উদ্দেশ্যের বাস্তবায়ন কখনও দেখি নি। নিজের ঘরে নিজে রাজার রাজনীতি, শিক্ষানীতি, এবং আমিই বড় এর পছা নীতিই পিছিয়ে রেখেছে আমাদের। ২৪/৭ গৃহবন্দী মন-মানসিকতার হাতে গুনা কয়েক লোক আকাবীর আসলাফদের মিথ্যা দোহাই দিয়ে লক্ষ্য জীবনে ধ্বংস করে সন্তুষ্টির হাই তোলে। এ গুলোর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো এখন সবচে বড় ঈমানী দায়ীত্ব। প্লীজ, এবার মুখে জমা করা থুথু ফেলে দাও। থুথু জমা করে মুখে বেশীক্ষণ রাখা যায় না।

লেখক: নুফাইস বরকতপুরী। ইমাম ও খতিব, ইসলামি চিন্তাবিদ বহু ভাষাবিদ শিক্ষাবিদ।

About Islam Tajul

mm

এটাও পড়তে পারেন

সিলেটের পবিত্র মাটি আবারও কলংকিত হলো রায়হানের রক্তে!

পুলিশ ফাড়িতে যুবক হত্যা: সিলেটজোড়ে চলছে রহস্য! এলাকাবাসীর প্রতিবাদ!! সিলেট নগরীতে রায়হান নামক এক যুবকের ...