গুজরাতের ভোটের আগে, এবার বাবরি মসজিদ ধ্বংসের ২৫ বছর পূর্তিতে বড়সড় উৎসব পালন করতে চাইছে ভারতের উগ্র কট্টর সংগঠন বিশ্ব হিন্দু পরিষদ। ৬ ডিসেম্বরকে ‘শৌর্য দিবস’ হিসেবে তুলে ধরার আগে পরিষদের হুঙ্কার, ‘মন্দির-যোদ্ধাদের স্বপ্ন পূরণ হবেই।’
এরই মধ্যে বুধবার থেকেই সুপ্রিম কোর্টে প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রের বেঞ্চে বাবরি মসজিদ-রামজন্মভূমি মামলার চূড়ান্ত শুনানি শুরু হতে যাচ্ছে।
১৯৯২ সালে বাবরি মসজিদ ধ্বংসের পর থেকেই ওই দিনটি ‘শৌর্য দিবস’ হিসেবে পালন করে আসছে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ। কিন্তু তা কখনই বড়সড় আকারে হতে পারেনি। তবে এবার বাবরি মসজিদ ধ্বংসের ২৫ বছরে অযোধ্যা ও লখনউয়ে বড় আকারে ‘শৌর্য দিবস’ পালনের পরিকল্পনা করা হয়েছে।
গুজরাত ভোটকে সামনে রেখে কিছু দিন থেকেই রামমন্দির নিয়ে হাওয়া তুলতে চাইছে সঙ্ঘ পরিবার। সম্প্রতি রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের (আরএসএস) প্রধান মোহন ভাগবত মন্তব্য করেন, ‘অযোধ্যায় বিতর্কিত জমিতে রামমন্দিরই হবে।’ এর পরেই ‘শৌর্য দিবস’-এর পরিকল্পনা নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ।
বিশ্ব হিন্দু পরিষদের নেতা অম্বুজ ওঝা বলেন, ‘অশোক সিংহল, মহন্ত অবৈদ্যনাথ, রামজন্মভূমি ন্যাসের প্রাক্তন প্রধান মহন্ত রামচন্দ্রদাস পরমহংস এবং অনেক করসেবক রামমন্দিরের জন্য তাদের জীবন দিয়েছেন। অযোধ্যায় রামমন্দির গড়লেই তাদের স্বপ্নপূরণ হবে।’
তিনি জানান, ৬ ডিসেম্বর লখনউয়ে ‘শৌর্য সংকল্প সভা’-র আয়োজন করা হয়েছে। এ ছাড়া, ‘অযোধ্যায় কেশবপূরমেও ওই দিন দুপুরে সাধুসন্তরা বৈঠকে বসতে যাচ্ছেন।’ এ জন্য পরিষদের দফতরে প্রস্তুতিও চলছে জোরকদমে। ক’দিন আগে উত্তরপ্রদেশের উপ-মুখ্যমন্ত্রী কেশবপ্রসাদ মৌর্যও অযোধ্যার বিতর্কিত এলাকায় রামমন্দির গড়ার পক্ষে বক্তব্য রাখেন। তা পরিষদকে আরো উৎসাহিত করেছে।
তবে অযোধ্যায় বিতর্কিত স্থানে রামমন্দিরই হবে বলে মোহন ভাগবত যে মন্তব্য করেছেন, তা নিয়ে তীব্র ক্ষোভ জানিয়েছেন হায়দরাবাদের সংসদ সদস্য ও এআইএমআইএম নেতা আসাদউদ্দিন ওয়েইসি। তার মন্তব্য, ‘কে মোহন ভাগবত? তিনি কি দেশের প্রধান বিচারপতি? কোর্টে অযোধ্যার বিচার যখন চলছে, তখন কোন অধিকারে ভাগবত বলছেন, বিতর্কিত জায়গাতে রামমন্দিরই হবে।’ পরিষদের আর এক শীর্ষস্থানীয় নেতা সুরেন্দ্র জৈন আগামী বছরের ১৮ অক্টোবর থেকে রামমন্দির নির্মাণের কথা কীভাবে বললেন, সে প্রশ্নও তুলেছেন ওয়েইসি।