স্বতন্ত্র কওমি বিশ্ববিদ্যালয় নয় হাইআতুল উলইয়াকেই ইউজিসির মান দেয়া চাই : মুফতি মুহাম্মদ আলী
৭ নভেম্বর ২০১৭
কওমি অঙ্গন, প্রতিদিন, সমকালীন, সাক্ষাৎকার
কওমি অঙ্গনে বর্তমানে স্বীকৃতি একটি প্রধান ইস্যু৷ স্বীকৃতি নিয়ে কম জল ঘোলা করা হয়নি। চলমান স্বীকৃতি ইস্যু নিয়ে সম্মিলিত শিক্ষাবোর্ড আল হাইআতুল উলইআতুল লিল জামিআতিল কওমিয়া বাংলাদেশভুক্ত ৫টি বোর্ডের শীর্ষ নেতাদের সাথে বেফাকের মনোমালিন্য দেখা দেয়ায় কিছু জটিলতা তৈরি হয়েছে। বেফাক ছাড়া ৫ বোর্ডের অভিযোগ- সংখ্যাগরিষ্টতার কারণে বেফাক এককভাবে অনেক সিদ্ধান্ত নিয়ে নেয়। অন্যান্য বোর্ডের সাথে কোনো প্রকার যোগাযোগ বা মতামতও নেয়া হয় না।
৫ বোর্ডের কর্মকর্তাগণ অভিযোগ করেন যে, গত বছরের ১০ ডিসেম্বর চট্টগ্রামের হাটহাজারী মাদরাসায় শায়খুল আল্লামা শাহ আহমদ শফীর সভাপতিত্বে ৬ বোর্ডের বৈঠকে কওমী সনদের সরকারী স্বীকৃতি গ্রহণ প্রশ্নে সকলের ঐক্যমতে যে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছিল, বেফাকের উৎসাহি কিছু কর্মকর্তা সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছেন। সেদিনের বৈঠকে সর্বসম্মতিক্রমে একমত হয়ে রেজুল্যাশন হয়েছিল, “কওমি মাদরাসার স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট ও স্বকীয় অবস্থান বজায় রেখে কোনোরূপ সরকারী কমিশন গঠন এবং নিয়ন্ত্রণ ব্যতিরেকে কওমি শিক্ষাপদ্ধতি, সিলেবাস ও মাদরাসা পরিচালনায় প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ হস্তক্ষেপমুক্ত থাকবে এবং এরই আলোকে কওমি মাদরাসা সমূহের দাওরায়ে হাদীসের সনদকে ইসলামিয়াত ও আরাবিয়াতের উপর এমএ-র মান প্রদান করা হয়। এতে উপস্থিত কওমি মাদরাসা বোর্ডসমূহ এবং অপরাপর কওমি মাদরাসাসমূহ সনদের মান গ্রহণের উপর একমত পোষণ করে”।
এখানে ৫ বোর্ডের অভিযোগ, কওমি মাদরাসা শিক্ষার কারিকুলাম ও আইন তৈরির বিষয়ে সরকার কর্তৃক ইউজিসির মাধ্যমে ৯ সদস্যের কমিটি গঠন, হাইআতুল উলইআর জন্য সরকারী জমি গ্রহণ ও স্বতন্ত্র কওমি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন প্রশ্নে বেফাক ও তার অতি উৎসাহি কিছু কর্মকর্তা সম্মতি প্রদান করে ১০ ডিসেম্বরের গৃহীত সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছেন। এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হয় ৫ বোর্ডের মিডিয়া বিষয়ক দ্বায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি ও হাইআতুল উলইআর অন্যতম সদস্য মুফতি মুহাম্মদ আলীর সাথে৷
তিনি বলেন- আমরা উসূলে হাশতেগানার ভিত্তিতে স্বীকৃতি চাই৷ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী গত ১১ এপ্রিলে আমাদের উসূলে হাশতেগানার ভিত্তিতেই স্বীকৃতি প্রদান করেন৷ এ লক্ষেই আমরা হাটহাজারীর হুজুরকে প্রধান করে ৩২ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করি৷ এ কমিটিই আমাদের স্বকীয়তা বজায় রেখে স্বীকৃতির জন্য কওমি সিলেবাস প্রণয়ন ও কারিকুলাম তৈরী করবে৷ এ কমিটিই বিশ্ববিদ্যালয়ের ইউসিজি কমিটির সমমান৷ এখানে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সরকারী কোন হস্তক্ষেপ হবে না৷ এটিই আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে চেয়েছি৷ এটিই তিনি আমাদেরকে গত ১১ এপ্রিল স্বকীয়তা বজায় রেখে দারুল উলূম দেওবন্দের মূলনীতি উসূলে হাশতেগানার উপর ভিত্তি করে স্বীকৃতি প্রধান করা হলো মর্মে ঘোষণাও করেন।
কওমী স্বীকৃতির চলমান ইস্যু নিয়ে ৫ বোর্ডের মিডিয়া বিষয়ক দ্বায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি ও জাতীয় বেফাক তথা জাতীয় কওমি দ্বীনী মাদরাসা শিক্ষাবোর্ডের মহাসচিব মুফতি মুহাম্মদ আলীর সাথে কথা বলেছেন
জুলফিকার মাহমুদী।
জুলফিকার মাহমুদী : বেফাক কর্তৃক দাবীর পরিপ্রেক্ষিতে আপনারা স্বতন্ত্র কওমি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের বিরোধিতা কেন করছেন?
মুফতি মুহাম্মদ আলী : দেখুন, কওমি বিশ্ববিদ্যালয় কে স্থাপন করবে? যদি সরকার কর্তৃক কওমি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করা হয় তাহলে আমাদের স্বকীয়তার প্রশ্নেই আমরা তার সাথে একমত নই৷ এটি উসূলে হাশতেগানারও পরিপন্থি৷ তাছাড়া কওমির সর্বোচ্চ বোর্ড হাইআতুল উলইআকে কওমি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে ইউজিসি কমিটির সমমান প্রদানের কথা আমরা সরকারের কাছে দাবী করে আসছি৷ মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণায় আমরা আশাবাদী৷ তিনি আমাদের দাবীর বিষয়টি দেখবেন৷ আর সরকার চাইলে সেটা সম্ভবও।
জুলফিকার মাহমুদী : হাইআতুল উলইয়ার অন্যতম একজন সদস্য আহাকের বিগত কেন্দ্রীয় পরীক্ষার খাতা দেখার বিল এখনো পরিশোধ করেননি মর্মে একটি অভিযোগ উত্থাপন করেছেন আপনাদের উপর, এ বিষয়ে কিছু বলবেন?
মুফতি মুহাম্মদ আলী : হাইআতুল উলইআর গত পরীক্ষার কার্যক্রমে সিদ্ধান্ত ছিল, যতজন পরীক্ষক নিয়োগ দেয়া হবে, সেসব পরীক্ষকের খাতা দেখার বিল স্ব স্ব বোর্ড প্রদান করবে৷ আমার জানামতে, সকল বোর্ডই তাদের বিল পরিষোধ করেছে৷ তাঁর অভিযোগটি সত্য নয়। এমনটি তাঁর কাছে কখনো আশা করিনি৷ এ বিষয়ে মুফতি আরশাদ রাহমানী ও এনামুল হক বহরগ্রামীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা সকলই তাঁর অভিযোগকে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন অভিযোগ বলে আখ্যায়িত করেছেন। ৫ বোর্ডের সকলেই খাতা দেখার বিল পরিশোধ করেছে৷ তিনি আরো বলেন, এমন অভিযোগ যিনি অভিযোগ কেন করলেন, আমাদের বুঝে আসছে না৷ তাঁর এমন মন্তব্য সম্মিলিতভাবে চলার পথে অন্তরায় হতে পারে৷
জুলফিকার মাহমুদী : জমি গ্রহণ বা সরকার যে জমি দানের প্রস্তাব করছে, সেক্ষত্রেও হাইআতুল উলইআয় মত-দ্বিমত দেখা যাচ্ছে। কেউ বলছেন, সরকারের কাছ থেকে জমি গ্রহণ উসূলে হাশতেগানা বিরোধী, আবার কেউ বলছেন, অনেক মাদরাসা তো এমন আছে, যেগুলো সরকারী খাস জমির ওপর নির্মিত, সুতরাং সরকার থেকে জমি গ্রহণ করা যেতে পারে। এ ব্যাপারে আপনি কী বলেন?
মুফতি মুহাম্মদ আলী : কথা হচ্ছে, আমাদের হাইআর গঠনতন্ত্র বা মূলনীতি। যার সূচনাই হয়েছে অষ্ট মূলনীতিকে ধারণ করে। আর বাংলাদেশের যেসব মাদরাসায় খাস জমি আছে, সেগুলোতে উসূলে হাশতেগানার কথা বলা হলেও কাজে নেই। অনেক মাদরাসা এমন আছে, যেগুলো উসূলে হাশতেগানার ওপর নির্ভর করে না। আর সরকার থেকে ক্রয়ের যে কথা বলা হচ্ছে, সেটাও আপেক্ষিক একটা প্রশ্ন। কারণ সরকার থেকে জমি কিনলে কখনো পূর্ণ মূল্য দিতে হয়না। পুরো মূল্য দিয়ে যদি কিনতেই হয়, তবে কোনো ব্যক্তিবা প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকেও তো কেনা যায়। সরকারকে মূলত একটা প্রতিকী মূল্য দিতে হয়, যেটাকে অনুদানই বলা যায়।
তাছাড়া গত ১৬ এপ্রিল এক বৈঠকে গঠনতন্ত্রের ৫ম ধারায় স্পষ্ট বলা হয়েছে এবং তাতে শায়খুল ইসলাম আল্লামা শাহ আহমদ শফীর স্বাক্ষরও রয়েছে যে, সরকারের কছে থেকে কোনো প্রকার অনুদান বা আর্থিক সহযোগিতা গ্রহণ করা হবে না।
জুলফিকার মাহমুদী : সরকার থেকে জমি গ্রহণের ব্যাপারে কওমিভিত্তিক অনলাইন নিউজ পত্রিকা ইনসাফ টুয়েন্টিফোর ডটকম-এর সাথে এক সাক্ষাৎকারে মুফতি ওয়াক্কাস সাহেবের একটি মন্তব্য আসে, যেখানে তিনি বলেন- যারা সরকার কর্তৃক বেতন-ভাতা ও গাড়ির দাবি করেছিলেন, তারা কীভাবে জমি গ্রহণের বেলায় বিরোধিতা করেন? তাদের মুখে এমনটি মানায় না৷ মুফতি ওয়াক্কাস সাহেবের এই মন্তব্যটি আপনি কীভাবে দেখছেন?
মুফতি মুহাম্মদ আলী : তিনি একজন বড় মাপের মানুষ। বুযূর্গও। তিনি এমন মন্তব্য কীভাবে করলেন, ভেবে পাচ্ছি না। তিনি যদি বলেই থাকেন, তবে আমি চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছি মুফতি ওয়াক্কাস সাহেবকে, তিনি তাঁর এমন মন্তব্য করার কারণ প্রমাণ করুন। এদিকে সবেমাত্র আমাদের জাতীয় দ্বীনী শিক্ষাবোর্ড বেফাকের জন্মই হলো৷ এ ছাড়া সকল বোর্ডের কর্মকর্তাই যেখানে সরকারী হস্থক্ষেপ ও প্রভাবমুক্ত থাকতে বদ্ধপরিকর, সেখানে বেতন-ভাতা, গাড়ি গ্রহণের সুযোগ আসলো কবে? এ বিষয়ে মুফতি আরশাদ রাহমানী ও এনামুল হক বহরগ্রামী সাথে যোগাযোগ করা হলে তাঁরা বলেন, মুফতি ওয়াক্কাস সাহেবর এমন মন্তব্য সম্পুর্ণ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। যেখানে স্বকীয়তার প্রশ্নে আমরা শংকিত সেখানে সরকার কর্তৃক বেতন-ভাতা গ্রহণের কোন প্রশ্নই আসতে পারে না, সেখানে এমন মন্তব্য কাম্য নয়। ভবিষ্যতে এমন মন্তব্য পরিহার করে সম্মিলিতভাবে চলার পথ সুগম করে দিবেন বলে আশা করেন মাওলানা এনামুল হক বহরগ্রামী৷
জুলফিকার মাহমুদী : একটি সাক্ষাৎকারে সরকার কর্তৃক কমিটির সদস্য নির্বাচনের বিরোধিতা করতে যেয়ে মুফতি ওয়াক্কাস সাহেব ‘আহমকি’ বলে মন্তব্য করেছেন৷ এটাকে কীভাবে দেখছেন?
মুফতি মুহাম্মদ আলী : মুফতি ওয়াক্কাস সাহেবের এমন মন্তব্যই প্রমাণ করে, হাইআতুল উলইআর মিটিং-এ কেমন ব্যবহার করা হয় ৫ বোর্ডের সদস্যদের সাথে৷ এমন ভাষার মন্তব্য একজন উচুঁমাপের আলেমের কাছে বেমানান৷ তাছাড়া কওমি শিক্ষার ঐতিহ্য, স্বকীয়তা রক্ষায় যত জায়গায় আহমক সাজতে হয় সাজবো, তবুও স্বকীয়তার প্রশ্নে কোন ছাড় দিতে রাজি নই৷ এটি শুধু আমার একার মত নয়, এটি ৫ বোর্ডের সম্মিলিত মতামত৷ স্বকীয়তা ও ঐতিহ্য রক্ষায় যেকোন সিদ্ধান্ত নিতে প্রস্তুত ৫ বোর্ডসহ বহু কওমি মাদরাসা৷
জুলফিকার মাহমুদী : স্বীকৃতির চলমান প্রক্রিয়া এবং এর ভবিষ্যৎ নিয়ে আপনি কেমন আশাবাদী?
মুফতি মুহাম্মদ আলী : আমাদের আকাবির-আসলাফের নমুনা শায়খুল ইসলাম আল্লামা শাহ আহমদ শফী দা.বা.’র প্রচেষ্টায় কওমি অঙ্গনে ঐতিহাসিক ঐক্য সৃষ্টি হয়েছে৷ সেই ঐক্য থেকে বাহির হওয়ার কোন সুযোগ নেই৷ আমরা ঐক্য ধরে রাখতে বদ্ধপরিকর৷ তবে কেউ যদি রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের লক্ষে কওমির ঐতিহাসিক ঐক্যে ফাটল ধরাতে চান, আমরা তার ব্যাপারে সজাগ থাকবো ৷
জুলফিকার মাহমুদী : সম্প্রতি চট্ট্রগ্রামে কওমী মাদরাসার স্বীকৃতি প্রশ্নে আল হাইআতুল উলইয়াভুক্ত ৬টি বোর্ডের মধ্যে শুধু বেফাক ছাড়া বাকি ৫টি বোর্ড আলাদাভাবে মিটিং করে, এর কারণ কী?
মুফতি মুহাম্মদ আলী : হাইআতুল উলইয়ার জন্য সরকার অনুমোদিত ৩২সদস্য বিশিষ্ট যে কমিটি আছে, সে কমিটির একজন সদস্য হওয়ার পরও আমরা অনেক সময় জানিনা, কখন, কোথায় সভা হচ্ছে। হাইআর শীর্ষব্যক্তিরা তাঁদের মতো করেই কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। সেখানে বেফাক ছাড়া অন্যান্য অনেক বোর্ডের সদস্যদের গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে না। ফলে জটিলতা সৃষ্টি হচ্ছে।
জুলফিকার মাহমুদী : আপনাদের যদি কোন প্রস্তাব থাকে, ক্ষোভ থাকে, তাহলে সেটা চেয়ারম্যান বা কো-চেয়ারম্যানকে অবহিত করতে পারতেন, সেটা না করে আপনারা বেফাক থেকে বের হয়ে আলাদা বৈঠক করলেন- কারণ কী?
মুফতি মুহাম্মদ আলী : আমরা তো বেফাক ছেড়ে বের হয়ে যাইনি। সাময়িক প্রয়োজনে আমরা বেফাক ছাড়া ৫ ববোর্ড মিলে একটা বৈঠক করেছি। তারা এগিয়ে আসলে আমরা আবারো তাঁদের সাথে বসবো। কথা বলবো। স্বীকৃতির প্রক্রিয়াকে এগিয়ে নিয়ে যেতে সাহায্য করবো।
জুলফিকার মাহমুদী : আমরা জানি, কওমি সনদের মান নিয়ে হাইআতুল উলইয়ার সৃষ্ট এ জটিলতা বা ইউজিসির অধীনে মান গ্রহণ প্রশ্নে বেফাকেরও অনেক দায়িত্বশীল একমত না। তারাও চান ইউজিসি থেকে মান না নিয়ে বরং হাইআতুল উলইয়াকে ইউজিসির মান দেয়া হোক। তো আপনারা একটা সম্মিলিত সিদ্ধান্তে আসতে পারলেন না কেনো?
মুফতি মুহাম্মদ আলী : আসলে আমরা আমাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি। বড়দের সাথে তর্ক করা বা জোরাজোরির কিছু নয়। আমরা তাঁদেরকে শুধু বলতে পারি, তবে সিদ্ধান্ত নেয়ার ভার তাঁদের হাতে। কিন্তু তারা যদি মেজরিটির গুরুত্ব না দেন, তাহলে সেটা চলতে পারে না। বাধ্য হয়েই আমরা পৃথক সিন্ধান্ত নিয়েছি। তাছাড়া, আহাকের সদস্য হওয়ার পরও সিলেবাস প্রণয়ন, সরকারের কাছে নীতিমালা প্রেরণ- এসব তো স্বচ্ছভাবে হচ্ছে, এটা বলা যাচ্ছে না। অনেক সদস্যকে না জানিয়েই তারা এমনটা করছেন।
জুলফিকার মাহমুদী : এই যে আপনারা ৫ বোর্ড মিলে বেফাককে বাইরে রেখে বৈঠক করলেন, এর দ্বারা একটা অনৈক্য পরিলক্ষিত হচ্ছে। আপনাদের এই ভূমিকা স্বীকৃতি প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্থ করবে বলে অনেকে মনে করেন, এসম্পর্কে কিছু জানতে চাই।
মুফতি মুহাম্মদ আলী : আসলে আমরা চাইনি এমন কিছু হোক। আমরা সম্মিলিতভাবে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে চাই। স্বীকৃতি প্রক্রিয়াকে এগিয়ে নিতে চাই। কিন্তু আমাদের মুরব্বিরাই এই পরিস্থিতি তৈরি করেছেন, আলাদা করে চিন্তা করতে বাধ্য করেছেন। এছাড়া বিকল্প কোনো পথ ছিল না আমাদের সামনে। আমরা চেষ্টা করেছি।
জুলফিকার মাহমুদী : বেফাক ছাড়া আপনারা স্বীকৃতি প্রক্রিয়াকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবেন বলে মনে করেন?
মুফতি মুহাম্মদ আলী : বেফাক যদি তার সিদ্ধান্ত না বদলায়, হাইআতুল উলইয়ার গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কাজ না করে, তখন তো বাধ্য হয়েই তাদেরকে ছাড়া চিন্তা করতে হয়।
জুলফিকার মাহমুদী : বেফাকের সাথে আপনাদের এই মতভিন্নতার কথা স্বীকৃত সংক্রান্ত সরকারের সংশ্লিষ্ট মহলে অজানা থাকার কথা নয়, আর এটা যে স্বীকৃতি বাস্তবায়নে একটা ধীর গতির সৃষ্টি করবে, এ সম্পর্কে কিছু বলুন
জুলফিকার মাহমুদী : বেফাকের সাথে আপনাদের সৃষ্ট জটিলতা সমাধানের আদৌ কোনো সম্ভাবনা আছে?
স্বতন্ত্র কওমি বিশ্ববিদ্যালয় নয় হাইআতুল উলইয়াকেই ইউজিসির মান দেয়া চাই : মুফতি মুহাম্মদ আলী ২০১৭-১১-০৭