সৈয়দ আনোয়ার আবদুল্লাহ : সৌদি আরবে রাজপরিবারের ইসলাম বিরোধী নানা কাজের সমালোচনা করার অভিযোগ এনে গ্রেফতার করা হয়েছে বহু ওলামায়ে কেরামকে। নতুন করে বিভিন্ন গনমাধ্যমকর্মী, শিক্ষাবিদ, চিন্তাবিদসহ ইসলামী স্কলারদের গ্রেফতার করছে সৌদি নিরাপত্তা বাহিনী।
অভিযোগ রয়েছে, বাদশাহ সালমান বিন আব্দুল আজিজ অচিরেই যুবরাজ ছেলে মুহাম্মাদ বিন সালমানের জন্য ক্ষমতা থেকে সরে যাবেন। তার সরে যাওয়ার পর অল্প বয়সী নতুন বাদশাহর জন্য যাতে সমালোচনার রাস্তা খোলা না থাকে তাই সমালোচক আলেমদের গ্রেফতারের পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে সৌদি সরকার।
গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে রয়েছেন, প্রসিদ্ধ ইসলামী দাঈ আলেম সালমান আওদাহ, লা তাহজানের লেখক আয়েজ আল কারনী ও আলী উমরি। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা সরকারপন্থি আলেমদের সমালোচনা করেন। বিশেষত কাতার ইস্যূতে সৌদি নীতির প্রকাশ্যে বিরোধিতা করেন।
এছাড়াও নতুন এই গ্রেফতারির মধ্যে রয়েছেন বিশিষ্ট সমাজকর্মী ঈসাম জামিল ও শিক্ষাবিদ আব্দুল আজিজ আব্দুল লতিফ।
গত কয়েক দিনে সৌদী দালাল সরকার শীর্ষ উলামায়ে কেরামসহ কয়েকজন চিন্তাবিদ ও সাংবাদিককে গ্রেফতার করে।
এখন পর্যন্ত গ্রেফতারকৃত আলেমরা হচ্ছেন-
শাইখ মুহাম্মদ মূসা আল-শারীফ, শাইখ ইউসুফ আল-আহমেদ, শাইখ ইব্রাহীম আল-ফারিস, ড. ইব্রাহীম আল-নাসের, শাইখ মুহাম্মেদ আল-হাবদান, শাইখ গারাম আল-বাইশি, শাইখ মুহাম্মদ ইবনে আব্দুল আজিজ আল-খুদাইর, শাইখ সালমান আল-আওদা, শাইখ আওদ আল-করণি, শাইখ নাসর আল-উমর, শাইখ খালিদ আল-আজিমি, শাইখ মুহাম্মাদ আল-শানার, শাইখ আলী বাদাহদা, শাইখ আব্দুল্লাহ্ আল-শুয়াইলিম, শাইখ ইদ্রীস আবকার (বিখ্যাত ক্কারী), শাইখ আদিল বানা’মা, ড. মুস্তাফা আল-হাসসান,
গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে সৌদী সরকারের অভিযোগ হচ্ছে, তারা নাকি সৌদী রাজপরিবারের সমালোচনা করেছেন।
যদিও বিস্তারিত কিছু এই সরকার জানায়নি।(আল-জাজিরা)
তবে অনেকে বলেন, তারা কাতারের বিরুদ্ধে সৌদীর কঠোর অবস্থান সমর্থন করেননি।
মূলতঃ সৌদি সরকারের অন্ধ গোলামী করতে যারাই একটু ব্যতিক্রম করেছে তাদের স্থানই হয়েছে কারাগারের অন্ধকার প্রকোষ্ঠে।
পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশী আলেম-উলামা নির্যাতিত হয় সৌদিতে আর সেগুলো জায়েজ করে মতিউর রহমান মাদানির মত শাসকপন্থী দরবারি আলেমরা।
সত্য বলার অপরাধে হক্কানি আলেমদেরকে গ্রেফতার করা দালাল সরকারের কাছে নতুন নয়, খুনী সিসির এই পৃষ্ঠপোষক ও আমেরিকার পা চাটা গোলাম রাজপরিবার ইতিপূর্বেও অনেক উলামায়ে কেরামকে কারাগারে বন্দী করে রেখেছে।
যাঁদের মধ্যে অন্যতম হচ্ছেন- শায়খ মুহাদ্দিস সুলায়মান উলওয়ান, শায়খ খালিদ আর-রাশিদ, শায়খ নাসির আল-ফাহাদ, শায়খ আলী খুযাইর, ফাহদ আল বিশর, ওয়ালিদ আস সিনানি এবং সর্বশেষ শায়খ আব্দুল আযীয আত-তারীফি!
এছাড়া ২০১৫ সালে তারা ৪০ এর অধিক আলেমকে হত্যা করেছে। এর মধ্যে আছেন শায়খ হামদ আল হুমায়দি, শায়খ ফারিস আজ জাহরানি।
সূত্র : আল জাজিরা, আরাবি ২১, আল আরাবি আল জাদিদ, বিবিসি (আরবি)