ইশতিয়াক আহমেদ :
যেহেতু কওমি মাদ্রাসা নিয়ে লিখা শুরু করেছি। তাই ধারাবাহিকভাবে আরো কিছু বিষয় তুলে ধরবো। ইনশাআল্লাহ
আজকাল প্রায় লোককেই বলতে শোনা যায় যে, কওমি মাদ্রাসায় পড়ে কী লাভ? কওমি মাদ্রাসায় পড়ে কি কিছু হওয়া যায়? কোরআন হাদীস কিছু পড়ে লিল্লাহ খাওয়ার পন্থা শিখা আর ৩/৪ হাজার টাকা বেতনের একটা চাকুরীর যোগ্যতা অর্জন করা ছাড়া আর কিছুই করতে পারে না।
তাদের ধারণা ভুল। কে বলেছে কওমি মাদ্রাসায় পড়ে কিছু হওয়া যায় না! কওমি মাদ্রাসার পাঠ্যবইতেই আছে উকিলাতির বই। আছে অর্থনীতিবিদ হওয়ার মতো বই। আছে বিচারক হওয়ার মতো বই। এক কথায় সবকিছুই আছে কওমি মাদ্রাসার পাঠ্যসূচিতে। সব বিষয়ের বইই আছে।
এমনকি একটা কওমি ছাত্র যদি মক্তব বিভাগ থেকে দাওরা হাদীস পর্যন্ত মন দিয়ে বুঝে ভালো করে পড়ে তাহলে সে অলরাউন্ডার হতে পারবে। সব বিষয়ের উপরই তার দক্ষতা থাকবে।
এখন অনেকেই প্রশ্ন করবেন, তাহলে কওমি মাদ্রাসা থেকে ব্যাংকার, উকিল, জজ ইত্যাদি বের হয় না কেন?
হুম আফসোসের বিষয় এটাই। আমাদের বাংলাদেশের কওমি মাদ্রাসা থেকে এসব কিছুই বের হতে দেখা যায় না। তাই বলে কি দোষ কওমি মাদ্রাসার? অবশ্যই না। দোষ তাদের যারা উপযুক্ত ব্যবহার করতে পারছে না মাদ্রাসার।
আমাদের এদেশে কওমি মাদ্রাসাগুলির সিস্টেম, পড়ার মান এবং চিন্তা ধারায় দূর্বলতা। আর সবচেয়ে বড় বাঁধা হলো এদেশের সরকার ব্যবস্থা। কোন সরকারই কওমিদের যথাযথ সম্মান দেয়নি কখনো। আর তার জন্যও দায়ী কিছু হুজুররাই।
পাকিস্থানে আলেমরা রাষ্ট্রীয় অনেক কিছুতেই আছেন। তারা ঠিকই যোগ্যতা নিয়েই বের হয় মাদ্রাসা থেকে। কারণ তারা সরকারেরও সাপোর্ট পায়।
কওমি মাদ্রাসায় অভাব উপযুক্ত শিক্ষার আর শিক্ষা ব্যবস্থার। কেননা যদি মন দিয়ে বুঝিয়ে পড়িয়ে একটা ছাত্র তৈরি করা হয় তাহলে সে স্কুল কলেজ পড়ুয়া যে কাউকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিতে পারবে অনায়েসেই। আর তখন কোন ছাত্র বিপথেও যাবে না। লুকিয়ে গিয়ে আলিয়া মাদ্রাসায় পরীক্ষাও দিবে না।
তখন কওমি মাদ্রাসাই তৈরি করতে পারবে ব্যাংকার, ইঞ্জিনিয়ার, উকিল ইত্যাদি।
এমনকি তখন কওমি মাদ্রাসাই থাকবে দেশের সেরা শিক্ষাঙ্গন।
কওমি মাদ্রাসায় পড়ে কিছু হওয়া যাবে না বললে ভুল হবে। কওমি মাদ্রাসায় হওয়ার মতো সবকিছুই আছে। যা দরকার তার সবকিছুই আছে কওমি মাদ্রাসায়। অভাব শুধু উপযুক্ত ব্যবহারের। আশা করি সেসবও ধীরে ধীরে একদিন হবে। ইনশাআল্লাহ