ড. আহমদ আবদুল কাদের :
সাম্প্রতিককালে আবার মিয়ানমারে রোহিঙ্গা নির্যাতন মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। সম্প্রতি কয়েক দিনের মধ্যে সরকারি বাহিনীর অত্যাচারে কয়েক শ’ রোহিঙ্গা মুসলিম নিহত হয়েছে। অসংখ্য ঘরবাড়ি ও মসজিদ ধ্বংস হয়ে গেছে। হাজার হাজার মানুষ ভিটা ছেড়ে অজানার উদ্দেশ্যে পাড়ি দিয়েছে। কিন্তু দুর্ভাগ্য, তাদের কোনো দেশই ঢুকতে দিতে চায় না। এ অবস্থায় অনেকেই সমুদ্রে নৌকার আরোহী হয়ে ভাসছে অসহায়ভাবে। তাদের অনেকেই হয়তো মারা যাবে বা যাচ্ছে। লাখ লাখ রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী আজ রাষ্ট্রবিহীন। সত্যি কি তাদের কোনো রাষ্ট্র ছিল না অথবা নেই? অত্যাচার নির্যাতন কি তাদের নিয়তি? আমাদের কি কিছুই করার নেই?
ইতিহাস কথা কয়
রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী যে আরাকানের (বর্তমান রাখাইন প্রদেশ) অন্যতম আদিবাসী, সে ব্যাপারে ইতিহাস সাক্ষী। ঐতিহাসিক বর্ণনা অনুসারে হাজার বছর ধরে আরাকানে রোহিঙ্গারা বসবাস করছে (আবদুল করিম, দি রোহিঙ্গা : অ্যা শর্ট অ্যাকাউন্ট অব দেয়ার হিস্টরি অ্যান্ড কালচার, আরাকান হিস্টরিক্যাল সোসাইটি জুন ২০০০, পৃ. ১১৮-১১৯)। ফ্রান্সিস বুকানন হ্যামিল্টনের মতে, ‘আরাকানে দীর্ঘকাল ধরে মুসলিমরা বসবাস করে আসছে এবং তারা নিজদের রোহিঙ্গা বা আরাকানের আদিবাসী বলে মনে করে’(ফ্রান্সিস বুকানন হ্যামিল্টন, বার্মিজ এম্পায়ার, প্রথম সংস্করণ, ১৭৯৯)।
মূলত প্রাথমিক কালের আরাকানি মুসলমানেরা অষ্টম শতকের প্রবাসী আরব ও স্থানীয় ধর্মান্তরিত মুসলিম বংশোদ্ভূত। পরবর্তীতে পারস্য, আফগানিস্তান, মধ্য এশিয়া ও ভারত থেকে বহুলোক ধর্ম প্রচার ও ব্যবসা-বাণিজ্য উপলক্ষে এসে আরাকানে বসতি স্থাপন করেছে। আরো অনেক পরে চাকরি ও কাজের সন্ধানে এখানে আসে অনেকে। তাদের সবার বংশধররাই আরাকানের রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী নামে পরিচিত। আরাকানের আদি নাম হচ্ছে রোহাং বা রোসাং। আর রোহিঙ্গা শব্দটি রোহা বা রোসাঙ্গি থেকে উদ্ভূত। আরাকান বরাবরই একটি স্বাধীন ভূখণ্ড ছিল। বিশেষত, চৌদ্দ শতক থেকে আঠারো শতকে মারুক ইউ বংশের রাজত্বের সময়ে আরাকান অনেক বিস্তৃত হয় এবং খুবই সমৃদ্ধি লাভ করেছিল। এ রাজবংশের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন নারামেইখলা যিনি সুলাইমান শাহ নামেও পরিচিত ছিলেন। নিজ রাজ্য থেকে বিতাড়িত হয়ে তিনি ২৪ বছর বাংলায় নির্বাসিত ছিলেন। তিনি শেষ পর্যন্ত ১৩২৯ সালে বাংলার সুলতান জালাল উদ্দিন মুহাম্মদ শাহের সহযোগিতায় আরাকান রাজ্য পুনরুদ্ধার করতে সক্ষম হন। তিনি তখন নতুন রাজবংশ ‘মারুক ইউ’ পত্তন করেন। তখন থেকে ১৭৮৫ সাল পর্যন্ত তারা একাধারে শাসন করেন। কারো মতে, এ রাজবংশ মুসলিম ছিল; আবার কারো মতে ধর্মের দিক থেকে বৌদ্ধ হলেও তারা গভীরভাবে ইসলাম ও মুসলিম সংস্কৃতি দ্বারা প্রভাবিত ছিলেন। এ কারণে তারা মুসলিম পদবি ও নাম ব্যবহার করতেন। তারা বহু ভারতীয়, বিশেষত বাঙালি মুসলমানকে রাজকীয় উচ্চপদে নিয়োগ দান করে ছিলেন। মহাকবি আলাওল এবং দৌলত কাজীসহ অনেক বাঙালি মুসলিম কবি সাহিত্যিক তাদের দরবার অলঙ্কৃত করেছেন। ১৭৮৪ সালে বার্মার শাসকেরা আরাকান রাজ্য দখল করে নেন। তাদের অত্যাচারে বহু মুসলিম পাশের চট্টগ্রামে আশ্রয় নিতে বাধ্য হন। ১৮২৬ সালে বার্মা-ব্রিটিশ যুদ্ধের সূত্র ধরে ইংরেজরা আরাকানকে ব্রিটিশ ভারতের অন্তর্ভুক্ত করে নেয়। ১৮৮৬ সালে ইংরেজরা গোটা বার্মা অধিকার করে দেশটিকে ব্রিটিশ ভারতের একটি প্রদেশে পরিণত করে। তখন আরাকানকেও এর অন্তর্ভুক্ত করা হয়। সে সময় বহু মানুষ চট্টগ্রাম থেকে আরাকানে তাদের বাস্তভিটায় ফিরে যায়। তা ছাড়া বাংলা ও ভারতের অন্যান্য অঞ্চল থেকেও বহু মানুষ মিয়ানমারে ও আরাকানে কাজের সন্ধানে গিয়েছে। সে প্রক্রিয়াতে আরাকান রাজ্যটি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ অঞ্চলে পরিণত হয়। ১৯৩৭ সালে বার্মা ব্রিটিশ ভারত থেকে পৃথক হয়ে সরাসরি ব্রিটিশ সা¤্রাজ্যের অংশ হয় এবং ১৯৪৮ সালে স্বাধীনতা লাভ করে। কাজেই এটি স্পষ্ট, ১৭৮৪ সালের আগে আরাকান রাজ্য স্বাধীন ছিল। সেটি বার্মার অন্তর্ভুক্ত ছিল না। ১৮২৬ সাল থেকে প্রায় ৫০ বছর সেটি ছিল ব্রিটিশ ভারতের অংশ। ১৮৮৬ সালেই ব্রিটিশরা তাকে বার্মার অন্তর্ভুক্ত করে। সেই থেকে আরাকান বা রাখাইন রাজ্য বার্মা বা মিয়ানমারের অন্তর্ভুক্ত। কাজেই মূল রোহিঙ্গারা বার্মার বা রাখাইনের অন্যতম প্রাচীন গোষ্ঠী, তারা বিদেশী নয়। হাজার বছর ধরে মুসলিম রোহিঙ্গারা সেখানে আছে। কেউ কেউ আবার পাঁচ-ছয় শ’ বছর ধরে সেখানে বাস করছে। তাদের কেউ কেউ দুই শ’ বছর ধরে সেখানে আছে। বিশ শতকের গোড়া থেকেও কিছু বাঙালি মুসলমান আরাকানে অভিবাসী হিসেবে আছে। সাথে আছে স্থানীয় ধর্মান্তরিত আরাকানি মুসলমানরা। সবাই রোহিঙ্গা নামে পরিচিত। কাজেই তাদের বিদেশী বলার কোনো সুযোগ নেই।
সামরিক সরকারের আমল
১৯৬২ সালে সেখানে সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে নেউইন সরকার ক্ষমতা দখল করে ৫০ বছর ধরে মিয়ানমার শাসন করেছে। নেউইন সরকার সমাজতান্ত্রিক কর্মসূচি ঘোষণা করে এবং ‘বার্মা সোস্যালিস্ট প্রোগ্রাম পার্টি’ (বিএসপিপি) গঠন করে। এর সাথে আরাকানের মুসলিম পরিচয় মুছে ফেলার জন্য সব রোহিঙ্গা মুসলিম রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের বিলুপ্তি ঘোষণা করে। ১৯৭৮ সালে সামরিক সরকার নতুন নাগরিকত্ব আইন জারি করে। সে আইন অনুযায়ী রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর নাগরিকত্ব বাতিল করে দিয়ে তাদের বিদেশী বলে আখ্যায়িত করা হয়। ‘রোহিঙ্গা’ শব্দটিকে তারা বেআইনি ঘোষণা করে। আইন অনুযায়ী তারা তখন থেকেই রাষ্ট্রবিহীন জনগোষ্ঠী। তারা কথিত বিদেশী হিসেবে সেখানে বাস করছেন। আইনত তাদের মুক্ত চলাচলের কোনো অধিকার নেই। দেশের ভেতরেও কোথাও যেতে হলে সরকারের কাছ থেকে অনুমতি নিতে হয়। পাসপোর্ট লাভের কোনো অধিকারও তাদের নেই। দুটোর বেশি সন্তান নিতে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে তাদের নিরাপত্তার কোনো ব্যবস্থা নেই। তাদের জবরদস্তিমূলক শ্রমিকের কাজ করতে হয়। সপ্তাহে এক দিন সেনাবাহিনী বা সরকারের জন্য কাজ করে দিতে হয়। সপ্তাহে এক রাত তাদের পাহারাদারির কাজ করতে হয়। কোনো উচ্চশিক্ষায় তাদের সুযোগ নেই। তাদের নোংরা পরিবেশে, সাধারণত বস্তি এলাকায় বাস করতে হয়। এক কথায়, তারা মানবেতর জীবনযাপন করতে বাধ্য হচ্ছে।
১৯৭৮ সালে সরকার ড্রাগন ক্যাম্পেইন নামে মুসলিমবিরোধী ব্যাপক অভিযান চালায়। তাদের দমন নীতির ফলে লাখ লাখ রোহিঙ্গা মুসলিম বাংলাদেশে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়। পরবর্তী কালে মিয়ানমার সরকারের সাথে জাতিসঙ্ঘের সহযোগিতায় বাংলাদেশ সরকারের একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। সে অনুযায়ী মিয়ানমার সরকার দুই লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীকে ফেরত নেয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়। বেশির ভাগই তখন ফিরে যায়। এরপর ’৯০ এর দশকে আবার সঙ্কট তৈরি হয়। ২০১২ সালে আরাকানে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার ফলে বহু লোক নিহত হয়। হাজার হাজার মানুষ ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যায়। অনেকে নৌকায় বাংলাদেশ, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়া যাওয়ার চেষ্টা করে। সে ক্ষেত্রেও তারা বাধা প্রাপ্ত হয়। অনেকে সমুদ্রেই মারা যায়।
গণতান্ত্রিক সরকারের শাসন
২০১৫ সালে ‘গণতন্ত্রের নেত্রী’ ও ‘শান্তিবাদী নেত্রী’ নোবেল লরিয়েট অং সাং সু চি নির্বাচনে বিপুলভাবে জয়লাভ করে ক্ষমতায় এসেছেন। রোহিঙ্গারা ও বিশে^র শান্তিবাদী মানুষ ভেবেছিল, অং সাং সু চির সরকার রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান এবং রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব ফিরিয়ে তাদের সসম্মানে বাঁচার ব্যবস্থা করবে। কিন্তু কী করল সু চির সরকার? মানুষ তার কার্যকলাপ ও ভূমিকা দেখে হতবাক এবং ক্ষুব্ধ!
একটি পুলিশ ফাঁড়িতে আক্রমণের ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত ৯ অক্টোবর রোহিঙ্গা মুসলমানদের ওপর ভয়াবহ নারকীয় অত্যাচার নেমে আসে। অথচ পুলিশ ফাঁড়িতে আক্রমণ কারা করেছে, এটি এখনো প্রমাণিত নয়। কেউ মনে করে এটি মাদকপাচার চক্রের কাজ, আবার কেউ মনে করে কিছু উগ্রপন্থী হয়তো জড়িত। কিন্তু কোনোভাবেই সাধারণ রোহিঙ্গা সম্প্রদায় এর সাথে জড়িত নয়। হিউম্যান রাইাটসের তথ্য অনুসারে, ২২ অক্টোবর থেকে ১০ নভেম্বর পর্যন্ত রোহিঙ্গাদের ৮০০ গ্রাম সম্পূর্ণ পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। সৈন্যরা লুটপাট ও মহিলাদের লাঞ্ছিত এবং নির্বিচারে সব কিছু ধ্বংস করেছে। সেখানে ২৫ হাজার বাড়ি, ৬০০ দোকান, ডজনখানেক মসজিদ ও ৩০টির বেশি স্কুল তারা ধ্বংস করেছে। পশুর মতো জবাই করা হয়েছে রোহিঙ্গাদের। আগুনে পুড়িয়ে মারা হয়েছে। এমনকি হেলিকপ্টার দিয়ে তাদের ওপর সেনাবাহিনী গোলাবর্ষণ করেছে। বৌদ্ধ যুবকদের প্রশিক্ষণ দিয়ে তাদের হাতে অস্ত্র তুলে দিয়েছে সরকার। আর তারা সেই অস্ত্র দিয়ে রোহিঙ্গা মুসলমানদের ভয়ভীতি দেখিয়ে ঘরছাড়া ও হত্যা করছে। মিয়ানমার সরকার রাখাইনে কোনো ত্রাণ সংস্থাকে ঢুকতে দিচ্ছে না বা কোনো বিদেশী সাংবাদিককে যেতে দিচ্ছে না। রাখাইনের ভয়াবহ ঘটনা সম্পর্কে এখনো মানুষ পুরোপুরি জানতে পারছে না। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের মতে, ‘রোহিঙ্গারা বর্তমান দুনিয়ার সংখ্যালঘুদের মধ্যে সর্বশেষ নিকৃষ্টতম নির্যাতনের শিকার।’ এ পরিস্থিতিতে, শান্তিতে নোবেল পাওয়া নেত্রী অং সাং সু চি বলেছেন, ‘রোহিঙ্গারা বার্মার নাগরিক নয়, তারা বাঙালি। …আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য এটি করা সরকারের দায়িত্ব’ (নিউ ইয়র্ক টাইমস)। এটাই হচ্ছে ‘গণতন্ত্রের’ আর ‘শান্তির’ নেত্রী অং সাং সু চির আসল চেহারা!
বিশ্বের প্রতিক্রিয়া ও করণীয়
বিশ^ এ নির্যাতনের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নিচ্ছে? তারা উল্লেখ করার মতো কিছুই করেনি। এ ব্যাপারে জাতিসঙ্ঘের ভূমিকা কেমন? কিছু উদ্বেগ প্রকাশ ছাড়া কার্যত কোনো ব্যবস্থাই নেয়নি। মিয়ানমার সরকার যে আরাকান বা রাখাইন প্রদেশে শত শত বছর ধরে বাস করা রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর নাগরিকত্ব বাতিল করে দিয়েছে, তার বিরুদ্ধে বিশ^ বিবেক প্রায় নীরব। যুক্তরাষ্ট্র অং সাং সু চির দল সরকার গঠনের পর মিয়ানমারের ওপর থেকে দীর্ঘদিনের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নিয়েছে। কিন্তু এ সরকারের আমলেই রোহিঙ্গারা সর্বাধিক জুলুম নির্যাতনের শিকার।
অন্য দিকে যেসব রোহিঙ্গা সীমাহীন অত্যাচারের কারণে প্রাণ ভয়ে বাধ্য হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়ার জন্য পালিয়ে আসছে, তাদের জোর করে আবার ফেরত পাঠানো বা সাগরে আশ্রয়হীন অবস্থায় ছেড়ে দেয়া নিঃসন্দেহে চরম হৃদয়বিদারক ও অমানবিক। এটা সত্য, এর আগেও বাংলাদেশ প্রায় পাঁচ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছে। বাংলাদেশের মতো একটি জনবহুল ও অর্থনৈতিকভাবে অস্বচ্ছল দেশের জন্য এটি অত্যন্ত কঠিন কাজ। তবু মানবিক কারণে বাংলাদেশকে সাময়িকভাবে হলেও শরণার্থীদের আশ্রয় দিতে হয়। সাথে সাথে, জাতিসঙ্ঘকে রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতন বন্ধ করে তাদের নাগরিকত্ব পুনঃবহালসহ যাবতীয় নাগরিক অধিকার দানের জন্য চাপ সৃষ্টি করতে হবে। ওআইসিকে মনে রাখতে হবে, রোহিঙ্গা ইস্যু শুধু মানবিক সমস্যাই নয়- এটি একটি মুসলিম সমস্যাও বটে। কাজেই তাদেরও এগিয়ে আসতে হবে এবং মিয়ানমারের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে হবে। এ সমস্যার সমাধানের জন্য এককভাবে বাংলাদেশের ওপর চাপিয়ে না দিয়ে দায়িত্ব সবাই ভাগ করে নিতে হবে। বিশেষত, যার সচ্ছল ও কম জনবহুল দেশ (যেমন মালয়েশিয়া, সৌদি আরব ইত্যাদি) তাদেরও দায়িত্ব নিতে হবে। প্রয়োজনে রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধান না হওয়া পর্যন্ত মিয়ানমারের সাথে সব মুসলিম রাষ্ট্রের সম্পর্ক স্থগিত করতে হবে।
জাতিসঙ্ঘের প্রতি আমাদের আবেদন- আর দেরি না করে দ্রুত নিরাপত্তা পরিষদের সভা ডেকে মিয়ানমার সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি এবং প্রয়োজনে তাদের ওপর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা জারি করুন। রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব এবং তাদের নাগরিক, মানবিক, ধর্মীয় ও সামাজিক অধিকার দিতে হবে। অং সাং সু চির নেতৃত্বের ওপর আস্থা রাখার আর সুযোগ নেই। কারণ রোহিঙ্গা প্রশ্নে তিনি নিজেকে সামরিক জান্তার মতোই হৃদয়হীন বলে প্রমাণ করেছেন। কাজেই দেরি না করে বিশ^ সম্প্রদায়ের দ্রুত পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন। ১৫ লাখ বনি আদমকে বাঁচানোর জন্য এগিয়ে আসা জরুরি। এ মানবিক দায় আমরা এড়াতে পারি না ।