মনসুর আহমদ :
দ্বিতীয় খলিফা হজরত উমর রাযিয়াল্লাহু আনহুর খেলাফতকালে আমর ইবনুল আস রাযিয়াল্লাহু আনহুকে মিশরের গভর্নর নিযুক্ত করা হল। একবার মিশরে বিরাট ঘোড়দৌড়ের প্রতিযোগিতা হচ্ছিল। এ প্রতিযোগিতায় গভর্নরের ছেলে মুহাম্মাদও অংশগ্রহণ করেন। তিনি একটুর জন্য মিশরীয় এক ইহুদির সঙ্গে পারলেন না। ইহুদি বিজয়ী হল। সফলতার উত্তেজনায় সে কিছু বলে ফেলেছিল, কিন্তু মুহাম্মাদ বিন আমরের কাছে তা খারাপ লাগল। তাই তিনি ইহুদি বিজয়ীকে ডেকে এনে বেত্রাঘাত করলেন।
তখন মিশরীয় ওই ইহুদি মদিনায় পৌঁছুল। সে খলিফার কাছে অভিযোগ করল, “গভর্নরের ছেলে আমাকে অন্যায়ভাবে প্রহার করেছেন।”
হজরত উমর লোকটিকে বললেন, “তুমি এখানে অপেক্ষা কর। ” তিনি তখনই দূত পাঠিয়ে বলে দিলেন গভর্নর এবং তার ছেলেকে যেখানে যে অবস্থায় আছে, তাদেরকে মদিনায় নিয়ে আসার জন্য। তাদেরকে নিয়ে আসা হল।
হজরত উমর বললেন, “মিশরীয় লোকটি কোথায়? ” লোকটি উপস্থিত হলে খলিফা তার হাতে একটি ছড়ি দিয়ে বললেন, “এই ছড়ি নাও এবং সম্মানিত ব্যক্তির ছেলেকে বেত্রাঘাত কর।”
উমরের আদেশে ইহুদি লোকটি অনিচ্ছা সত্ত্বেও মুহাম্মাদকে মারল। তখন উমর রাযিয়াল্লাহু আনহু বললেন, “খোদার শপথ! এই ছেলে পিতার ক্ষমতাবলেই এমনটি করতে সাহস পেয়েছে। হে ভাই! তুমি আমর ইবনুল আসের কাছ থেকেও প্রতিশোধ নাও!”
তখন মিশরীয় লোকটি বলল, “আমিরুল মুমিনিন! যে আমাকে মেরেছে, আমি তার বদলা নিয়ে নিছি। এরচেয়ে বেশি কিছু চাই না। ” তখন উমর বললেন, “খোদার শপথ! তুমি যদি তার পিতাকেও মারতে চাইতে, তাহলে আমি বাধা দিতাম না। ”
অতঃপর খলিফাতুল মুসলিমিন আমর ইবনুল আসের দিকে লক্ষ্য করে বললেন, “হে আমর! তোমরা লোকদেরকে কবে থেকে গোলাম বানালে? অথচ তাদের পিতা মাতা তাদেরকে স্বাধীন হিসেবে জন্ম দিয়েছে!”
[আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া]
এই হল ইসলামের উদারতা। আসুন, আমরা সবাই এমন উত্তম গুণাবলীর অধিকারী হই!সবাই নিজ অধীনস্তের ওপর ইনসাফ প্রতিষ্ঠা করি!
আল্লাহ আমাদেরকে তাওফিক দিন, আমিন!