শনিবার, ২৩শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং
কমাশিসা পরিবারবিজ্ঞাপন কর্নারযোগাযোগ । সময়ঃ বিকাল ৪:০৫
Home / প্রতিদিন / মুসলিম সমাজে সাংস্কৃতিক আগ্রাসনের প্রভাব (১ম পর্ব)

মুসলিম সমাজে সাংস্কৃতিক আগ্রাসনের প্রভাব (১ম পর্ব)

মাসুম আহমদ :

বিশ্বসভ্যতা ও ইতিহাস অনুসন্ধানের ফলে জানা যায় যে, সবল কর্তৃক দুর্বলের উপর আক্রমণ ও পরাজিত করে গোলামির শেকলে আবদ্ধ করার ঘটনা বারংবার ঘটেছে। তবে ইতিহাস এও সাক্ষী দেয়, সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে শক্তিশালী গোষ্ঠীর সামর্থ্যের সূর্য যতোই অস্তমিত হয়েছে, দুর্বল জনগোষ্ঠী পুনর্বার নিজেদের স্বাধীনতা ফিরিয়ে নিয়েছে।

তবে বর্তমান বিশ্ব-ব্যবস্থায় শাসন নীতিমালা অনেক জটিল রূপধারণ করেছে। এখন আক্রমণ, যুদ্ধ ব্যতীতই অপরকে দাসত্বের শেকলে আবদ্ধ করা যাচ্ছে। নিজের মতামত নির্দ্বিধায় অন্যের উপর চাপিয়ে দেয়া যাচ্ছে। শক্তিশালী জনগোষ্ঠী প্রতিপক্ষের ভূমি কবজা না করেই গোলাম বানিয়ে রাখতে সক্ষম হচ্ছে। আর এই প্রভাব প্রতিপত্তি এতোটা প্রভাব ফেলছে যে, বিজয়ী গোষ্ঠী সময়ের স্রোতে নিজেদের প্রভাব হারিয়ে ফেললেও তাদের অস্তিত্ব হারিয়ে যাচ্ছে না। যুগের কার্যকর এই নীতিমালার নাম ‘সাংস্কৃতিক আগ্রাসন নীতি’।

বিশ্লেষণে দেখা যায়; সামাজিক ও সাংস্কৃতিক দাসত্ব অস্ত্রযুদ্ধে পরাজয়ের মাধ্যমে প্রাপ্ত ক্ষতির চেয়ে অনেক বেশি। কারণ সমাজ ও সংস্কৃতিতে স্বাধীন জাতি বাহ্যত পরাধীন হলেও কখনো নিজেদের দাসত্ব স্বীকার করে না। বরং নিজেদের ইতিহাস, ঐতিহ্য, সমাজ, সংস্কৃতি সংরক্ষণে তারা তুলনামূলক অধিক মনযোগী থাকে আর সুযোগ পাওয়া মাত্র নিজেদের হারানো স্বাধীনতা অর্জন করে নেয়।
কিন্তু সামাজিক ও সাংস্কৃতিক দাসত্ব একটি জাতির মৌলিক ভাবনার ক্ষমতাকে পুরোপুরি বিনষ্ট করে দেয়। ধীরে ধীরে শাসিত জাতি দেউলিয়ায় পরিণত হয়।

সামাজিক দাসত্বের বেড়াজালে আক্রান্ত জাতি কখনো সমাজ সম্বন্ধে স্বাধীনভাবে ভাবতে পারে না, পরিবেশকে নিজের চোখে দেখতে পারে না। বরং ক্ষমতাশীল জাতি যা ভাবে, সেই ভাবনাকে নিজের ভাবনা হিসেবে গ্রহণ করতে বাধ্য হয়।

রাষ্ট্রীয় আক্রমণ ও তৎপরবর্তী পরিস্থিতির উদাহরণ সন্ধান করলে আমরা দেখি, ইসলামের সাড়ে চৌদ্দশ বছরের ইতিহাসে মুসলমানরা অজস্রবার ভয়াবহ পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছে। রাসূল (সা:) –এর ইন্তেকালের পর ধর্ম ত্যাগের ফিতনা থেকে শুরু করে ১২৫৮ সালে তাতারি সম্প্রদায়ের আক্রমণ; সবকিছুর মূলে ছিলো মুসলমানদের অস্তিত্ব মিটিয়ে দেয়ার ষড়যন্ত্র। বর্বর তাতারিরা যখন একের পর এক এলাকা বিজয় করছিলো, মনে হচ্ছিলো এই ধ্বংসলীলা রুখে দাঁড়ানোর সামর্থ্য কারও নেই। কেননা একটি জাতির জন্য এরচেয়ে বড় দুর্ভাগ্যের বিষয় আর কি হতে পারে যে; তাদের দারুল খিলাফাতের একেকটি ইট চূর্ণ চূর্ণ করে দেয়া হয়েছিলো। কিন্তু ইসলামের সূর্য বিলীন হয়নি। মুসলমানরা হিম্মত হারা হয়নি। জিহাদের মাধ্যমে তাতারিদের পরাজিত করেছিলো।

About Abul Kalam Azad

mm

এটাও পড়তে পারেন

কওমি মাদরাসা কল্যাণ ট্রাস্ট, বাংলাদেশ

খতিব তাজুল ইসলাম ট্রাস্টের প্রয়োজনীয়তাঃ কওমি অংগন একটি স্বীকৃত ও তৃণমূল প্লাটফর্ম। দেশ ও জাতির ...