ইসলামি পত্রিকা পরিষদ। ইসলামি পত্রিকা ও সম্পাদকদের সংগঠন। ইসলামি পত্রিকাগুলোর সার্বিক উন্নয়ন ও মান বর্ধনে কাজ করে সংগঠনটি। কাগজগুলোকে বাঁচিয়ে রাখার স্বপ্ন দেখায়। জোগায় উদ্দীপনা। প্রতিষ্ঠার পর বেশ উদ্যমী দেখা গেলেও বর্তমানে সংগঠনটি কার্যক্রমে নেই। ইসলামি ম্যাগাজিনগুলোও হারিয়ে যাচ্ছে ধীরে ধীরে। যা সাধারণ মানুষদের আত্মার খোরাক যুগিয়েছে। কিন্তু কেন এই পরিস্থিত এসব নিয়ে ইসলামি পত্রিকা পরিষদের সহ-সভাপিত মুফতি আবুল হাসান শামসাবাদীর সঙ্গে কথা বলেন দিদার শফিক।
ইসলামি পত্রিকাগুলো দিনদিন পাঠক হারাচ্ছে। ব্যর্থ হচ্ছে নতুন পাঠক ধরতে। এর কারণ কী জানতে চেয়েছিলাম সংগঠনটির সভাপতি ও এক সময়ের তুমুল জনপ্রিয় মাসিক আদর্শ নারীর সম্পাদক মুফতি আবুল হাসান শামসাবাদীর কাছে।
তিনি বললেন, ইসলামি পত্রিকাগুলা শুধু যে পাঠক ধরে রাখতে পারছে না বিষয়টি এমন নয়, কিছু কিছু পত্রিকাও হারিয়ে যাচ্ছে। এর পেছনে মোটা দাগের কয়েকটা ত্রুটি তো অবশ্যই আছে। কিছু পত্রিকা হারিয়ে যায় আর্থিক সঙ্কটের কারণে। কয়েকটা সংখ্যা প্রকাশের পরই থেমে যায়। এ সমস্যা এড়াতে হলে পত্রিকা প্রকাশের শুরুতেই টাকা-তহবিল নিয়ে নামতে হয়। এটা তো পত্রিকা সংশ্লিষ্টদের সমস্যা, পত্রিকা প্রকাশ করতে যে অর্থ খরচ হয় পত্রিকা বিক্রি করে সে অর্থ ওঠে আসে না। এজেন্টদের কাছেও অনেক টাকা পড়ে থাকে। তাই পত্রিকাগুলো মাঠে টিকিয়ে রাখা খুবই কঠিন।
আর পাঠক ধরে রাখতে ব্যর্থ হওয়ার মূল কারণ তো হচ্ছে- একটি পত্রিকা থেকে পাঠক যা চায় সম্পাদকরা তা পাঠককে দিতে সক্ষম হচ্ছে কিনা এটা বিবেচ্য। পত্রিকার ধরণ, গ্যাটাপ, লেখার মান ঠিক না থাকলে পাঠক ধরে রাখা যায় না। পাঠকের চাহিদা, পত্রিকার উদ্দেশ্য ও বিষয়বস্তুর উপর নির্ভর করে পত্রিকার পাঠকপ্রিয়তা ধরে রাখা বা হারানোর বিষয়টি।
ইসলামি পত্রিকাগুলোকে সচল রাখতে পত্রিকা পরিষদের উদ্যোগ কী এবং বর্তমানে কোন কর্মসূচি হাতে আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, পত্রিকা পরিষদের কাজ হলো, লেখক প্রশিক্ষণ কর্মশালা, পরিষদ সদস্যদের নিয়ে সম্মেলন, ভাববিনিময় ও পরামর্শসভার আয়োজন করা। এক সময় সাড়ম্বরেই এগুলো হয়েছে। কিন্তু বিভিন্ন কারণে বর্তমান পরিবেশ ও পরিস্থিতি অনুকূলে না থাকায় কোনো কর্মসূচি হাতে নেওয়া যাচ্ছে না। আগের মতো একে অপরের সেই যোগাযোগটাও সহজলভ্য নয়।
ইসলামি পত্রিকা পরিষদ থেকে পত্রিকাগুলো কী উপকার পাচ্ছে? জানতে চাইলে মুফতি আবুল হাসান শামসাবাদী বলেন, এটা মূলত প্রকাশকদের সংগঠন। লেখক-পাঠক সম্মেলন করা হয় পরিষদের উদ্যোগে। এতে লেখক ও পাঠকদের মাঝে ভাব বিনিময় হয়। পত্রিকাগুলোর সাথে পাঠক পরিচিত হয়। পত্রিকার পরিচয় তুলে ধরা হয়। কর্মশালার মাধ্যমে লেখক তৈরি হয়। পত্রিকার কোন সমস্যা হলে তা নিরসনের চেষ্টা করা হয়। এ কাজগুলো করতে পারলে পত্রিকাগুলো উপকৃত হতো। কিন্তু নানা সংকটে তা সম্ভব হচ্ছে না।
ইসলামি পত্রিকা পরিষদের নির্বাচন কবে হয়েছিল এবং পরবর্তী নির্বাচন কবে হতে পারে? এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, পরিষদের গঠনতন্ত্র রয়েছে। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী পরবর্তী নির্বাচন হবে। তিন বছর পরপর নির্বাচন হয়। দুই বছর শেষ হয়েছে।
তিনি বলেন, বর্তমানে ইসলামি পত্রিকা পরিষদের কার্যক্রম প্রায় স্তিমিত। পরিবেশ-পরিস্থিতিও প্রতিকূলে। পরিষদেও পূর্ণ উদ্দম ফিরে আসুক। পরিবেশও অনুকূল হোক। সেই সময়ের অপেক্ষায় পরবর্তী নির্বাচনও দেরি হতে পারে।
আওয়ার ইসলামের সৌজন্যে