সৌদি আরবে নারীদের গাড়ি চালানোর সুযোগ দেওয়ার কথা বলেছেন এক প্রিন্স। এক টুইট বার্তায় সৌদি রাজ পরিবারের সদস্য প্রিন্স আলওয়ালেদ বিন তালাল এ কথা বলেন।
এএফপির খবরে আজ বুধবার জানানো হয়, প্রিন্স আলওয়ালেদ জরুরি ভিত্তিতে নারীদের গাড়ি চালানোর ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের কথা বলেন। নারীর অধিকার ও অর্থনৈতিক প্রয়োজনেই এমনটা করা উচিত বলে তাঁর মন্তব্য।
প্রিন্স আলওয়ালেদ তাঁর দাপ্তরিক টুইটার অ্যাকাউন্ট থেকে টুইট করেছেন, ‘বিতর্ক বন্ধ করুন। সময় এখন নারীদের গাড়ি চালানোর অধিকার দেওয়ার।’
সৌদি রাজপরিবারের এই সদস্য কোনো রাজনৈতিক পদে নেই। তিনি কিংডম হোল্ডিং কোম্পানির সভাপতি; যেটি যুক্তরাষ্ট্রের বৃহৎ আর্থিক প্রতিষ্ঠান সিটি গ্রুপ ও ডিজনি থিম পার্কের সঙ্গে কাজ করে। তবে বিভিন্ন বিষয়ে খোলাখুলি কথাবার্তা বলার জন্য তিনি বেশ পরিচিত।
সৌদি আরব একমাত্র দেশ যেখানে নারীদের গাড়ি চালানোর ওপর নিষেধাজ্ঞা আছে। দেশটিতে নারীদের জীবনে পরিবর্তন আনতে নারী অধিকার নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছেন প্রিন্স আলওয়ালেদ।
টুইটের সঙ্গে দেওয়া এক সংযুক্তিমূলক বিবৃতিতে নিজের অবস্থানের পক্ষে প্রিন্স আলওয়ালেদ বলেন, একজন নারীকে গাড়ি চালাতে না দেওয়া মানে তাকে উচ্চশিক্ষা থেকে বঞ্চিত করা; তার স্বাধীন সত্তা গড়ে তুলতে বাধা দেওয়া। এগুলো একটি ঐতিহ্যবাহী সমাজের জন্য অন্যায্য। ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে নারীর যতখানি অধিকার আছে, তার চেয়ে কঠোর বিধি-নিষেধ নারীর ওপর আরোপ করা হয়েছে।
নারীদের গাড়ি চালাতে না দেওয়ার অর্থনৈতিক ক্ষতির প্রসঙ্গও তুলে ধরেন প্রিন্স আলওয়ালেদ। তাঁর মতে, সৌদি আরবে নারীদের জন্য গণপরিবহনের ব্যবস্থা নেই। নির্ভর করতে হয় পরিবারের মালিকানাধীন গাড়ির ওপর। যেসব পরিবারের সদস্যরা বাইরে কাজ করেন, তাদের পক্ষে পরিবারের নারী সদস্যকে নিয়ে গাড়িতে করে বাইরে বের হওয়া সম্ভব হয় না। আর বের হতে গেলে পুরুষ সদস্যকে কর্মস্থল থেকে ছুটি নিতে হয়। এর ফলে কর্মশক্তির উৎপাদনশীলতা নষ্ট হয়। বিকল্প হিসেবে নির্ভর করতে হয় বিদেশি গাড়ি চালকদের ওপর। আর এর মাধ্যমে দেশটির অর্থনীতি থেকে চলে যাচ্ছে শত শত কোটি ডলার। এই প্রিন্সের হিসাবে, একেকটি পরিবার প্রতি মাসে চালকের পেছনে ব্যয় করেন এক হাজার ডলার। অথচ, পরিবারের নারী সদস্য যদি গাড়ি চালাতেন এই অর্থটা পরিবারের অন্য কোনো কাজে লাগানো সম্ভব হতো।