বৃহস্পতিবার, ১৮ই এপ্রিল, ২০২৪ ইং
কমাশিসা পরিবারবিজ্ঞাপন কর্নারযোগাযোগ । সময়ঃ বিকাল ৩:৫৩
Home / কওমি অঙ্গন / কওমী শিক্ষা সনদের স্বীকৃতি নিয়ে বিভ্রতকর বিভ্রান্তি : উত্তরণ কোন পথে?

কওমী শিক্ষা সনদের স্বীকৃতি নিয়ে বিভ্রতকর বিভ্রান্তি : উত্তরণ কোন পথে?

শামসীর হারুনুর রশীদ ::

%e0%a6%b6%e0%a6%be%e0%a6%ae%e0%a6%b8%e0%a7%80%e0%a6%b0-%e0%a6%b9%e0%a6%be%e0%a6%b0%e0%a7%81%e0%a6%a8বাংলাদেশের মাওলানারা স্বাধীনতা পূর্বাপর রাজনৈতিকভাবে বড় মাপের কোন সফলতা অর্জন করেছেন যা আগামির হাতছানি, রাষ্ট্রবিজ্ঞানের আলোকে বিশ্লেষণ করলে লেখার মতো তেমন কোন উপাদান পাওয়া যায় না। বরং ইতিহাস ঘাটলে দেখা যায়- ন্যায্য কোন দাবি-দাওয়া যখন সফলতার পর্যায়ে পৌঁছে, তখন অশুভ রাজনীতির কূটচালে তা বাধাগ্রস্ত হয়ে পড়ে ও পড়ছে! যার উদাহরণ শতাধিক!

বিএনপি সরকারের আমলে এই স্বীকৃতি যখন আলোর মুখ দেখছিল, তখন রাজনৈতিক পাপ-ই অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায়! তদ্রূপ হেফাজতে ইসলামের আন্দোলন যখন দেশবাসীকে আশান্বিত করেছিল, ঠিক তখন এই রাজনৈতিক কূটচালে তা মুখ তোবড়ে পড়ে?

বর্তমান প্রেক্ষাপটে মাদরাসা ছাত্রদের শিক্ষা জীবনের প্রাপ্য-অধিকার ‘সরকার কর্তৃক স্বীকৃত সনদ’ যখন আলোর মুখ দেখছে, তখন রাজনৈতিক পাপিষ্ঠতা আবার মাথাছাড়া দিয়ে উঠেছে!
যা-হোক এ বিষয়ে পক্ষে-বিপক্ষে ইলিম ঝাড়া সহজ; কিন্তু সমাধানের পথে হাঁটছেন ক’জন?

যতই তর্ক-বিতর্ক হোক না কেন এ বিষয়ে একটা সুরাহায় আসতেই হবে! এটা শিক্ষকদের বেতন নয় যে, মন চাইলে দিলাম না হয় নাই দিলাম। এটার সাথে আমাদের আগামী অস্থিত্বের সম্পর্ক!

অপ্রিয় হলেও সত্য যে, মুরব্বি না মানার ইতিহাস খুব একটা নতুন নয়! আমরা যাকে মনস্তাত্ত্বিকভাবে অনুসরণ করি, তিনি বাংলাদেশের হয়ে কাজ করেছিলেন, তিনি জাতির নাড়ির গতি বুঝে সিদ্ধান্ত নিতেন, বৃটিশদের মোকাবিলা করার জ্ঞান তার ছিল! বর্তমানের আল্লামাদের মতো কেউ অসত উদ্দেশ্যে তাকে ব্যবহার করতে পারেনি! তিনি বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থার ওপর আতশ কাচের আলো ফেলে বিচার-বিশ্লেষণ করে একটা শিক্ষা সিলেবাস তৈরি করেছিলেন-যা “মাদানী নেসাব” নামে পরিচিত! তাঁর শিষ্য ও খলিফারা তিনির এই মুরব্বিয়ানাটা না মেনে সিলেবাসটাকে গোপন করে রাখায়, মাদরাসা শিক্ষার ক্ষেত্রে যে শূন্যতা ও একগুয়েমি তৈরি হয়েছে এর মাশুল ৪৫ বছর থেকে দিতে হচ্ছে বাংলাদেশকে। আরো কতকাল দিতে হবে কে জানে।

তাই আপনাদের মুরব্বিয়ানা আপনারাই করেন; কিন্তু ঠিকভাবে করেন! আমরা যখন দেখবো মুরব্বির মাইর অন্ধকারে শুরু হয়েছে, তখন দুনিয়ার রীতি অনুযায়ী এর বিরুদ্ধে অবস্থান বা দ্বিমত থাকা খুব সাভাবিক! এজন্য শত্রু-মিত্র নানা পক্ষের সাথে আলোচনায় বসতে হবে প্রয়োজনে শতবার!

স্বীকৃতি বিষয়টি ক্রিমিনালির! তাই বুজর্গদের দুআ নিয়ে ফিল্ডে নামতে হবে ঐ তাদের, যাঁরা সরকারি আমলাদের সাথে কাজ করেছেন বা করছেন! সঙ্গত করণেই নাম আসবে- মাওলানা মুফতি ওয়াক্কাস, মাওলানা ফরিদ উদ্দিন মাসউদ, মাওলানা মুহাম্মদ ইসহাক, মাওলানা শাহিনুর পাশাসহ নাম না জানা ঐ তাঁরা, যাঁরা নানা সময়ে আমলা-সচিবদের সাথে কাজ করেছেন। আমি শতভাগ আশাবাদী তাঁরা রাজনীতির উর্ধ্বে উঠে এই মাদরাসাগুলো ও তাঁর প্রজেন্মর আমানত রক্ষায়- মুরব্বিরা তাদের দায়িত্ব দিয়ে আজ বসালে কালই ফলাফল দেখতে শুরু করবো।

লাঠি-জাঠা-হুমকি-ধমকি সরকারকে দেখিয়ে কী লাভ? মহানবী সা. সামাজিক ও রাজনৈতিক জীবনে সংঘাতের পরিবর্তে সবসময় সমঝোতাকে প্রাধান্য দিয়েছেন! অথচ আমরা তিরস্কার-অহংকার-বাড়াবাড়ি ও সংঘাতকে ভালবাসি!
আল্লামা আহমদ শফি দা. বা. সর্বজন শ্রদ্ধেও একজন বুজুর্গ, সম্মানের পাত্র। তাঁর দু’আর প্রতি আমরা সবসময় মোহতায যে, তাতে কারো দিমত থাকার কথা নয়! কিন্তু তিনির মাধ্যমে কেউ যদি দিতে চায় ড্রাইভিং লাইসেন্স, ডাক্তারি বা ইন্জিনিয়ারিং সার্টিফিকেট, এটা কি নেয়া উচিৎ হবে?

শত আফসোস! সমাধানের পথে কেউ হাঠছেন বলে মনে হচ্ছে না! কারণ- যখন ঐক্যের কথা বলা হয়, তখন চোখে ভাসে খালি আব্দুল্লাহ আর না আহালদের উৎপাত! জ্ঞানপাপিদের চতুরতা! চেলাচামুণ্ডাদের মিছিল! ভাটপারদের হৈই হুল্লোড়! ভক্তছোট্টা আর লোভীদের তৈলমোর্ধন! এই কাণ্ডগুলো সবসময়ই বড়দের প্রতারিত করছে এবং করতেই থাকবে?

লেখক : মুহাদ্দিস ও প্রাবন্ধিক

About Abul Kalam Azad

mm

এটাও পড়তে পারেন

বিকৃত যৌনতায় দিশেহারা জাতি: সমাধান কোন পথে?

শাইখ মিজানুর রাহমান আজহারী: বাংলাদেশে প্রায় প্রতিদিন কোথাও না কোথাও ধর্ষণ হচ্ছে। নারীকে বিবস্ত্র করা ...