ইউসুফ বিন তাশফিন:
জমিদারী প্রথা উঠে গেলেও মানুষের মনের জামিদারী এখনো উঠে যায়নি। রয়েল মধ্যবিত্ত নিম্ন শ্রেণী নামের দেয়াল যারা খাড়া করেছে তারাই সমাজে শ্রেণী বিন্যাস জিইয়ে রাখতে সচেষ্ট। জমিদারের বাড়ির সামন দিয়ে রা্য়ত জুতা পায়ে ছাতা মাথায় দিয়ে যাওয়া নিষেধ। কোন কোন দেশের স্বৈরশাসক তার দেশের নাগরিকদের ভাল শিক্ষাদীক্ষা দিতে রাজিনা। কারণ চোখ-মুখ ফুটলে কপট রাজত্বের বিরুদ্ধে তাদের বিদ্রোহ থামানো যাবেনা। তাই কায়েমী স্বার্থবাদীরা সব সময় চায় তাদের অধীনস্থদের জাহেল আনপড় রাখতে। চায় স্থুল বুদ্ধি নিয়ে বসবাস। নতুবা তাদের রাজত্ব মার খাবে। বাবুগিরী ঠিকে থাকবেনা। বর্তমান কওমি অংগনও কিছু মানুষের জন্য হয়ে দাড়িয়েছে জমিদারি রক্ষার আন্দোলন। দীর্ঘদিনের পরাধীনতার নাগপাশে থেকে কিছু মানুষ জমিদারের সাথেও কুরাশ গায় আর বলে আমরা আমাদের স্বকীয়তা বিনষ্ট করতে দিতে চাইনা। হুজুরের দরবারে নাজ নিয়ামতের হাদিয়া তুহফা তারা জারি রাখতে চায়। গোলামীকে ভাবে সুখের জীবন। স্বাধীনতাকে ভাবে স্বকীয়তা বিনষ্ট।
সৌদীর কিং পরিবার উচ্চশিক্ষার জন্য তাদের ফ্যামিলী সদস্যদের ইউরোপ আমেরিকায় পাঠায়। আর নিজ দেশে যুবকদের উচ্চশিক্ষার জন্য রেখেছে উচ্চ ফী। এভাবে তারা উচ্চশ্রেণীর জন্য রেখেছে উচ্চশিক্ষা। সমাজকে উচ্চ মধ্যম আর নিম্নবিত্তের মাঝে ভাগ করে তারা ভোগ করার জন্য। গোলাম বান্দী না হলে সাহেবের কী মর্যাদা? নওকর না হলে মুনিবকে কে কুর্নিশ দিবে? মুর্খ না থাকলে শিক্ষীতদের কে পকেট ভরে হাদিয়া দেয়? মারসেডিজ আর পাজেরোর পিছু পিছু কারা দৌড়াবে যদি সবার কাছে পাজেরো থাকে?
৭১ এর স্বাধীনতার চেতনার ব্যবসা দেখতে দেখতে যখন আমাদের কান জালাপালা তখন নতুন আরেক চেতনার ব্যবসা শুরু হতে দেখে অবাক হই। বোকা মুরীদগুলো শারবান তাহুরা মনে করে ভাবলো আর যায় কই এখন চেতনাকে ধরার পালা। কিন্তু তাদের সে শক্তি নেই সামর্থ নেই ভেবে দেখার যে ইহা আরেক গোলামীর জিঞ্জির নয়তো? তিনি কওমিতে টাইটেল দিছেন, হাফিজে কুরআন হয়েছেন, বক্তা সেঝে তক্তা বানানোর কৌশলও রপ্ত করেছেন ব্যাশ। কলে কলে মাস্টার্স করলেন উন্মুক্ত বিশ্যবিদ্যালয়ে। চুপি চুপি লম্বা বেতনের অজিফার বন্দোবস্ত হয়ে গেল জামাতে ইসলাম পরিচালিত এশিয়া ইউনিভার্সিটিতে। জমিদারী রক্ষার কলাকৌশল ভাল রপ্ত করেছেন। মাঝে মধ্যে পীসটিভিতে গিয়ে আহলে হাদীসের সাথে গলাগলি। তলে তলে পিতার নামে গড়ে তুললেন মাদরাসা ও স্কুলের সিলেবাসের সমন্বয়ে মা’হাদুল আজীজের নামে শিক্ষা বাণিজ্য। আপনি সুখ সমৃদ্ধীর সকল ডালে হাত বাড়িয়েছেন। কিন্তু চেতনার বিনাশ ঘটেনি। চেতনায় পানি ঝরে তখন যখন গরীবের সন্তানগুলো উচ্চশিক্ষার সুযোগ পাবে ? কওমি সনদের স্বীকৃতি আসলে তারা আর গোপনে লক্ষ টাকা খরচ করার প্রয়োজন পড়বেনা। আপনার মতো জমিদারী পেতে তাদের তেমন সমস্যা হবেনা। আপনি যা পারেন তারা তাও পারবে। আপনি ৩০পারা কুরআন বুকে নিয়ে দারসে হাদীস পেশ করে করে যখন উন্মুক্ত আর এশিয়া ইউনি গুলো পাড়ি দিতে কোন সমস্যা হয়নি চেতনায় আঘাত আসেনি তেমনি ওরাও বুকে কুরআন মুখে সুন্নাতে রাসুলের জয়গান নিয়ে এসকল পথ পাড়ি দিতে সক্ষম হবে।
আপনি আমীর এবং মুরব্বীদের তুড়াই কেয়ার করেন। দলের মতামতকে ডিংগিয়ে একনেতা একদল একদেশের নেতা বনে গেছেন।আপনি নিয়ম ভাংগার পথে হেটে জাতিকে নিয়মের পথে চলার জিগির কতটুকু যুক্তিযুক্ত? লোকোচুরি আর কত খেলা চলবে? চেতনার ব্যবসা করে মানুষকে আর কত প্রতারিত করবেন? মানুষকে ভাল উপদেশ দিবেন আর নিজের বেলায় ভুলে থাকবেন? আমাদের ভাল করে জানা আছে কাদের সাথে রাতের আধাঁরে চলে মিতালী। কোন আওয়ামী গুরুজী (পরিবারের সদস্য) না আসলে যে জানাজা শুরু হয়না তাও জনগণ ভাল করে জানে। আপনাদের দ্বীমুখী আচরনগুলো আর যে গোপন থাকছেনা। সময় থাকতে ভাল হয়ে যান। গরীবের সন্তানদের উচ্চশিক্ষায় বাধা হয়ে দাড়াবেন না ভুয়া চেতনাবাজি করে এটাই আমাদের অনুরোধ।
চলবে…