রবিবার, ২৪শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং
কমাশিসা পরিবারবিজ্ঞাপন কর্নারযোগাযোগ । সময়ঃ দুপুর ১:০৯
Home / অনুসন্ধান / বৃটেন ফিরে যাচ্ছে সাইকেলময় যুগে ! বিলেতের অলিতে গলিতে (২য় পর্ব)
SONY DSC

বৃটেন ফিরে যাচ্ছে সাইকেলময় যুগে ! বিলেতের অলিতে গলিতে (২য় পর্ব)

খতিব তাজুল ইসলাম:

বিলেতের অলিতে গলিতে (২য় পর্ব)

SONY DSC

বৃটেনের বড় বড় শহরগুলো এখন যানবাহনের আধিক্যে রাস্তার ট্রাফিক নিয়ে কাতরাচ্ছে।১০ বছর আগের লন্ডন এখন কল্পনাই করা যায়না।শনি রবি হলে ভাবতাম ছুটির দিনে একটু আরামে ড্রাইভ করা যাবে।কিন্তু বোধ হয় আমার মতো সকলে একথা ভাবতে শুরু করে বিধায় তাই এখন উইকেন্ড আর উইকডের মাঝে কোন ফারাক থাকেনা। স্কুল অফিস আদালত শুরু আর শেষের অর্থ হলো এখন লন্ডনের মাথা খারাপ হওয়ার টাইম।ঘন্টার পর ঘন্টা সারিবদ্ধ গাড়ি গুলো ছেলাপোকার মতো ধীরে ধীরে এগুচ্ছে। তা্‌ই অনেকে আজকাল ১০ মিনিটের জাগায় ৫০ মিনিট হাতে নিয়ে বের হন। আগে যেখানে লন্ডন সিটি থেকে হিথ্রো বিমান বন্দর মাত্র ৩০-৪০ মিনিট লাগতো; এখন ৩-৪ ঘন্টা আগে বের হয়েও ফ্লাইট মিসের খাতরা থাকে।

এইসব বিবেচনায় এনে লন্ডন সিটি মেয়র অথোরিটি গেল ক’বছর আগে কনজ্যাংশন চার্জ্য আবিষ্কার করে।অর্থাৎ গোটা লন্ডন সিটিকে তারা ৬টি জোনে ভাগ করেছে। একেক জোনের জন্য একেক রকম ভাড়া। জোন ওয়ান মূল সিটি যেখানে, সেখানের ভাড়া খুব বেশি।ড্রাইভ করে জোন ওয়ানে ঢুকলে সকাল ৭টা থেকে বিকাল ৬টার ভিতর ১০ পাউন্ড পে করতে হবে। এভাবে দিনে ১০ বার ঢুকে বের হলে প্রতিবারের জন্য ১০ পাউন্ড করে পরিশোধ করেত হবে। ফাকি দেয়ার কোন সুযোগ নেই। প্রতিটি মোড়ে কর্ণারে আছে ক্যোমেরা। সাইন বোর্ড লাগানো আছে। রাস্তার উপর মার্ক করে লিখা আছে। ভুলে গেলে ঘরে চিঠি আসবে ফাইন সহ।২৪ঘন্টা পর্যন্ত মুহলত আছে ফাইন থেকে বাঁচার।cycle-hire-spot

গোটা লন্ডন শহর কেমেরা বন্দী করা। একজন মানুষ বড়জোর ৫-৬ মিনিট থাকতে পারে ক্যামেরার বাহিরে এর বেশি নয়।পুরো মেগা লন্ডন এখন ক্যামেরা দ্বারা রুল করা হয়।

সরকার চায় মানুষ পাবলিক ট্রান্সপুর্ট ব্যবাহার করুক। তাতে রাস্তার ট্রাফিক কমবে।বাস টিউব ট্রেইন সবকিছুর উন্নত ব্যবস্থা থাকা সত্বেও রাস্তায় ঠাই নাই। এজন্য সরকার লাইসেন্সকে কঠিন থেকে কঠিনতর করছে। আগামী ২০২০’র পর লন্ডন সিটিতে কেউ আর পেট্রল চালিত গাড়িতে দৌড়াতে পারবেন না। হ্যাঁ পারবেন তবে তার জন্য বড় অংকের পাউন্ড গুনতে হবে। কারণ সরকার যেমন গাড়ি কমাতে চায় তেমনি চায় কালো ধোয়া বন্ধ করতে। ব্যাটারি চালিত গাড়ি দিনের পর দিন বাড়ছে। আগামি বিশ্ব হবে কালো ধোয়াহীন ব্যাটারির গাড়ি।পরিবেশ ও মানব স্বাস্থ্যের জন্য খুব উপকারি।

এদিকে যানবাহনের বিকল্প হিসাবে সাইকেলের প্রচল ব্যাপক ভাবে করার জন্য রাস্তার মোড়ে মোড়ে সারিবদ্ধ সাইকেল পার্ক করে রাখা। বিভিন্ন ব্যাংকগুলো তাদের নিজস্ব অর্থায়নে সাইকেল তৈরি করে রাস্তার ফুটপাতে পার্ক করে রেখেছে। অনলাইন রিজিস্ট্রি করে যে কেউ সাইকেল চালাতে পারে।পুরোদিনের জন্য মাত্র ৫ পাউন্ড পে করা লাগে।

লন্ডনের পাকা রাস্তা এখন সাইকেলময় হয়েগেছে। বিশাল বিশাল রাস্তাগুলোকে ছোট করে করে কেবল সাইকেলের জন্য আলাদা লেইন তৈরির কাজ অভিরাম চলছে।রাস্তায় চলার সময় প্রথম অগ্রাধিকার পথচারিদের।তাই জেব্রাক্রসিং পারাপারে পথচারি স্বাধীন। যে কোন যানবাহন নিজ দায়ীত্বে থামতেই হবে। সামান্য গড়িমসি ধরা পড়লে বা পথচারির শরিরে ধাক্কার মতো কিছু হলে মারাত্মক খবর। তাই জেব্রাক্রসিং খুব গুরুত্বপুর্ণ। তারপর হুইল চেয়ার ব্যবহার কারীদের জন্য। অতঃপর সাইকেলিস্টদের অগ্রাধিকার। রাস্তায় চলার সময় সাইকেলকে সবসময় আপনাকে সমীহ করে চলতে হবে।সবশেষে রাস্তার উপর রয়েছে বাস চলাচলের অগ্রাধিকার। বাসকে আগে যেতে দিতে হবে। অবশ্য জরুরী যানবাহন যেমন এম্বুল্যান্স পুলিশ ফায়ারব্রিগেডের গাড়ির জন্য সকলে রাস্তা ছাড়ে দিতে হবে।cycle-lane

কোন কোন সময় দুষ্টো সাইকেলিস্টরা ইচ্ছা করে চায় আপনার সাথে ধাক্কা লাগাতে, যাতে ক্লেইম করে কিছু কামাতে পারে। আমি একদিন রাতের বেলা ড্রাইভ করে কয়েক রাস্তা পাড়ি দিয়ে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টির মধ্যে মেহমানকে রিসিভ করতে বাহিরে অপেক্ষা করছিলাম। হঠাৎ ড্রা্‌ইভিং সিটের জানালার গ্লাসে এসে একজন সাইকেলিস্ট নক করলো।প্রচন্ডভাবে আঘাত করলো গ্রাসে, আর বলছিলো তুমি একটু আগে আমাকে ধাক্বা মেরে এসেছো? একটু ফাক করে বল্লাম আমি অনেকক্ষণ যাবত এখানে বসে আছি অন্যকেউ হবে।সে বকাবকি করে চলেগেলো। ভাবলাম হয়তো আমার গাড়ির মতো অন্য কোন গাড়ি তাকে ধাক্কা দিতে পারে। অথবা ইচছাকৃত ভাবে ফাদ পাততে এসেছে।মেয়র অফ লন্ডন বিলিয়ন বিলিয়ন পাউন্ড খরছ করছে লন্ডন সিটিকে ট্রাফিক মুক্ত করতে। সাইকেলের পিছনে কয়েক বিলিয়ন এযাবত খরছ করে ফেলেছে। তারা চেষ্টা করছে ক্রাউড কন্ট্রোল করতে। সমস্যা সমাধানে আগাম চিন্তাভাবনা করা বৃটিশের মজ্জাগত অভ্যাস। কিন্তু আমাদের দেশগুলো কি এমন করে ভাবতে পারেনা?

About Islam Tajul

mm

এটাও পড়তে পারেন

কওমি মাদরাসা কল্যাণ ট্রাস্ট, বাংলাদেশ

খতিব তাজুল ইসলাম ট্রাস্টের প্রয়োজনীয়তাঃ কওমি অংগন একটি স্বীকৃত ও তৃণমূল প্লাটফর্ম। দেশ ও জাতির ...