খতিব তাজুল ইসলাম:
কার কাছহতে শোনছিলাম যে, হুজ্জতে বাংগাল আর হেকমতে চীন। বাংগালী হলো তর্কে সেরা। জান কবুল তবু তর্কে হার মানা চলবেনা। সত্য মিথ্যা ভাল মন্দ খারাপ কল্যাণের বিষয় উহ্য রেখে কথাবাজির মাধ্যমে নিজেকে জিতিয়ে নিতে মরিয়া। রাজনীতির ময়দান থেকে সামাজিক পারিবারিক সবখানের অবস্থা সমান। বিশেষ করে দ্বীনী প্রতিষ্ঠান আর তার রাহবর গণের ভিতরের কথা বললেতো ফতোয়ার ঝড়ি শুরু হয়ে যায়। দল গোষ্ঠী প্রাতিষ্ঠানিক গন্ডিতে আমরা এমনভাবে অন্ধ হয়ে আছি যে, ভরা দিনকে রাত নিকষ অন্ধকার রাতকে ভরা দিন বলতে রাজি তবু সত্য বলতে অপারগ। পুরো দেশময় গন্ডগোল। রন্ধ্রে রন্ধ্রে সমস্যা।
সংস্কার আগে হবে না স্বীকৃতি আগে? কিংবা আদৌ সংস্কার বা স্বীকৃতির কোন দরকার আছে কিনা তা নিয়ে নীতি নির্ধারণী কোন দিক নির্দেশনা নেই। আড়ালে আবডালে সরকারের দিকে ইংগিত করে কেবল শেকল পরার বাতচিত চলছে।মনে হচ্ছে সরকারের শেকলের ভয়ে স্বীকৃতির জারিজুরি। কোন প্রকার সংস্কার ছাড়াই সরকার যদি বাঁধন খোলা রেখে স্বীকৃতি দিয়ে দেয় তাহলে কতো হাজার খতমে বোখারি হবে তা হিসেব করে বলা মুশকিল। আমরা কি শাক দিয়ে মাছ ঢাকার আন্দোলন করছি? আমরা কি এজন্য রাতদিন বলছি লিখছি যে, যেনতেন একটা স্বীকৃতি দিলেই হলো?
স্কুল কলেজের কলের বলদের মতো আরেকটি কারখানা তৈরি করতে তো আমরা চাইনি। আমরা চাইছি আমাদের এই প্রজন্মরা ভাল শিক্ষা পাক।উন্নত বাংলা আরবি ইংরেজি অংক বিজ্ঞান শিখুক। সাধারণ শিক্ষাটা ১০ম পর্যন্ত নিক। কওমি তার ঐতিহ্য নিয়ে মাথা উচুঁ করে দাঁড়াক। লাঞ্চনা বঞ্চনা যিল্লতির আড়মোড়া চাদর থেকে বেরিয়ে আসুক। কিন্তু আমাদের রাহবরগণের সেদিকে কোন নজর নেই। উনাদের চোখ কেবল সরকার কতটুকু লাগাম দিতে চাইছে তার হিসাব নিকাষে।
আচ্ছা আমরা কিছুই করলামনা। দেড়শত বছরের পুরানা কিতাবগুলো নিয়ে খতমে ইউনোস পড়তে থাকলাম, তাতে কি সরকারের বাঁধন কিছুটা লোজ হবে? হায় হায় কে কাকে কিভাবে বুঝাবে? আমরা যদি নিজেরা নিজেদের জন্য উন্নত ব্যবস্থাপত্র দিতে নিতে ব্যর্থ হই তাহলে মনে রাখবেন অন্যের চাপিয়ে দেয়া ব্যবস্থাপত্র হাতপা বাঁধার মতোই হবে? আমি জিজ্ঞেস করতে চাই যে কওমি শিক্ষা নিয়ে সংস্কার ও স্বীকৃতির বিষয়টি দেশব্যাপী এতোবড় ইস্যু হলো কেন? অসম্পুর্ণ দুর্বল কমজুর স্বীকৃতিহীন সিলেবাস হওয়ার কারণেইতো এই আওয়াজ। আগথেকে যদি কওমি কর্তৃপক্ষ প্রতিটি মাদরাসার সিলেবাস শিক্ষা কারিক্যাুলাম আপডেট করে রাখতেন তাহলে এই প্রশ্ন আসতোনা।
দিকে দিকে প্রশ্ন উঠছে যে, এইসমস্ত প্র্রতিষ্ঠানগুলো জাতীয় পতাকা উড়ায়না, জাতীয় সংগীত গায়না। অভিযোগ উঠার আগে নিজে নিজে কি এগুলো খতিয়ে দেখা উচিত ছিলোনা? ঘুমে আছি আরো ঘুমাতে চাই, জীবনের মতো করে নিজে জাগতে চাইনা, কারো আওয়াজ বরদাশত হয়না। চারিদিকে যখন সংস্কারের আওয়াজ উঠেছে তখন আমাদের নেতৃত্বের বেশামাল অবস্থা। কথন কি বলা দরকার কি বলা উচিত নয় হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে ফেলে বলছেন বাংলা এখন ফরজ আরবি হলো নফল?এই সব অসংলগ্ন কথায় মানুষ কি মেস্যাজ পাচ্ছে? আর কত বোকামি করবো, অবচেতন খামখেয়ালীপনায় দিন কাটাবো বলুন?