ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরে সাম্প্রতিক কয়েক দিনে প্রায় ৫০ জন মুসলমান ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে নিহত ও তিন হাজার আহত হওয়া সত্ত্বেও বিশ্বের গণমাধ্যম এই নৃশংস দমন অভিযানের দিকে তেমন একটা নজর দিচ্ছে না । আর এ অবস্থায় ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনী নৃশংস দমন অভিযান অব্যাহত রেখেছে বলে মন্তব্য করেছে ইরানের প্রভাবশালী জাতীয় দৈনিক কেইহান।
গত ৯ জুলাই থেকে এ পর্যন্ত ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে নিহত হয়েছে অন্তত ৫০ জন কাশ্মিরি এবং আহত হয়েছে তিন হাজার। আহতদের বেশিরভাগই চোখের কাছে জখম হয়েছে ভারতীয় হামলায়। অন্তত ৮০ জন আহত কাশ্মিরি যুবকের চোখে অস্ত্রোপচারের পর তাদের রেটিনায় ক্ষুদ্র স্টিল বুলেট পাওয়া গেছে। ব্রিটেনের দৈনিক গার্ডিয়ান লিখেছে, ভারতীয় সেনারা এভাবে ইচ্ছা করেই প্রতিবাদী কাশ্মিরি যুবকদের অন্ধ করে দিচ্ছে। অথচ এসবের কোনও বিচার হচ্ছে না। ক্ষুদ্র বুলেট অপসারণের জন্য এক সপ্তায় প্রতিবাদী কাশ্মিরি যুবকদের ১৫০ টি চোখে অস্ত্রোপচার করা হয়েছে। এদের বেশিরভাগই দৃষ্টি শক্তি হারাবেন বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন। একজন ডাক্তার বললেন, এদের অবস্থা মৃত্যুর চেয়েও খারাপ।
একই সময়ে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ কাশ্মিরে বন্ধ করে দিয়েছে বহু সংবাদপত্র এবং সংবাদ প্রকাশের ওপর আরোপ করেছে নানা ধরনের সীমাবদ্ধতা। এ ছাড়াও ভারতীয় কর্তৃপক্ষ কাশ্মিরে কারফিউ বা সান্ধ্য আইনও জারি করে রেখেছে এক সপ্তারও বেশি সময় ধরে। বন্ধ করে দেয়া হয়েছে টেলিভিশনের অনুষ্ঠানমালা, ইন্টারনেট ও টেলিফোন নেটওয়ার্ক। কাশ্মিরে নৃশংস দমন অভিযানের খবর প্রচার করা হলে সেখানে গণ-বিক্ষোভ আরও ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ।
সম্প্রতি একজন স্বাধীনতাকামী কাশ্মিরি গেরিলা-নেতা ভারতীয় সেনাদের হাতে নিহত হওয়ার পর ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরে গণ-বিক্ষোভ শুরু হয়। সংগ্রামী এই কাশ্মিরি যুব-নেতার নাম বোরহান ওয়ানি। অনন্তনাগ এলাকায় জুমার নামাজ আদায় করতে এলে ভারতীয় সেনারা ওই এলাকা ঘেরাও করে এবং ওয়ানি ও তার দুই সঙ্গীকে হত্যা করে। হিজবুল মুজাহিদিন নামক দলের এই নেতাকে গ্রেফতারের জন্য ভারতীয় পুলিশ ১৫ হাজার ডলার পুরস্কার ঘোষণা করেছিল। কাশ্মিরি যুবকদের মধ্যে ওয়ানির ব্যাপক জনপ্রিয়তা দেখা গেছে ।
সৌজন্যে : পার্সটুডে