মু.আ. হুসাইন : আজ হতে প্রায় সাড়ে তিন হাজার বছর আগে একুশে রমজান ইন্তিকাল করেছিলেন হযরত মুসা (আ.) এবং দুই হাজারেরও বেশি বছর আগে একই দিনে মহান আল্লাহ আকাশে উঠিয়ে নিয়েছিলেন হযরত ঈসা (আ.)-কে জীবন্ত অবস্থায়।
ইন্তিকালের সময় হযরত মুসা (আ.)’র বয়স হয়েছিল ১২০ বছর। তিনি বনি ইসরাইল গোত্রের লোকদেরকে মিশরের ফেরাউনের নিপীড়ন থেকে মুক্ত করেছিলেন। তাওরাত নামক আসমানি কিতাব নাজেল হয়েছিল এই মহান নবীর কাছে। মুসা(আ.) বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মাদ (সা.)’র আবির্ভাবের সুসংবাদ দিয়েছিলেন।
এ ছাড়াও আজ হতে তিন হাজারেরও বেশি বছর আগে একুশে রমজান ইন্তিকাল করেছিলেন হযরত মুসা নবীর উত্তরসূরি হযরত ইউশা (আ.)।
আজ হতে দুই হাজারেরও বেশি বছর আগে একই দিনে (একুশে রমজান) মহান আল্লাহ আকাশে উঠিয়ে নিয়েছিলেন হযরত ঈসা (আ.)-কে জীবন্ত অবস্থায়। বনি ইসরাইলের ষড়যন্ত্রকারী লোকেরা এই মহান নবীকে হত্যার জন্য রোমানদেরকে উসকে দিয়েছিল। তাই আল্লাহ তাঁকে রক্ষার জন্য আকাশে উঠিয়ে নেন।
ঈসা (আ.)-কে হত্যার ষড়যন্ত্রকারীদের প্রধান সহযোগী ইহুদি মুনাফিক ‘জুডাস ইসাকেরিওট’ এই মহান নবীর সাহাবির ভূমিকায় অভিনয় করত ও শয়তান স্বভাবের ইহুদিসহ অন্যান্য তাগুতি শক্তির গুপ্তচর হিসেবে কাজ করত। সে মনে মনে এই মহান নবীকে রাসূল মনে করত না, বরং জাদুকর মনে করত। যখন ঈসা (আ.)’র দোয়ার বরকতে ও আল্লাহর নির্দেশে আকাশ থেকে খাবার-সামগ্রী নাজেল হয়েছিল তখন তা বিশ্বাসী সাহাবিদের ঈমানকে মজবুত করলেও জুডাস তাকে জাদু বলেই ধরে নেয়।
ঈসা (আ.)’র সাহাবিরা এই খাবার নাজেলের অনুরোধ জানালে তিনি তাদেরকে আল্লাহ’র এই শর্ত জানিয়ে দিয়েছিলেন যে এরপরও কেউ ঈসা নবীর নবুওতে অবিশ্বাস করলে আল্লাহ তাকে এমন কঠোর শাস্তি দেবেন যা তিনি এ পর্যন্ত কাউকে দেননি। ফলে রোমান শাসকদের আদালতে ঈসা (অ.)কে ‘ভণ্ড নবী’ বা প্রতারক হিসেবে সোপর্দ করে তাঁকে হত্যা করার ষড়যন্ত্র বাস্তবায়ন যখন প্রায় চূড়ান্ত তখন এই ষড়যন্ত্রের প্রধান সহযোগী জুডাসকেই মহান আল্লাহ ঈসা (আ.)’র চেহারাবিশিষ্ট করে দেন এবং ঈসা (আ.)-কে আকাশে উঠিয়ে নেন।
কিন্তু ষড়যন্ত্রকারী ইহুদিরা তখন জুডাসকেই প্রকৃত ঈসা মনে করেছে এবং এক বিচারের পর তাকে ক্রুশে গেঁথে হত্যা করে। এ সময় জুডাস যতই বোঝানোর চেষ্টা করে যে সে ঈসা নয় বরং জুডাস তখন রোমানরা ও ষড়যন্ত্রকারীদের কেউই তার কথা বিশ্বাস করেনি।
হজরত ঈসা (আ.) বিশ্বনবী (সা.)’র আবির্ভাবের সুসংবাদ দিয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু অধিকাংশ ইহুদি তথা অসত ইহুদিরা তা বিশ্বাস করত না। হযরত ঈসা (আ.) আবারও পৃথিবীতে ফিরে আসবেন এবং মুসলমানদের শেষ ইমাম ও মানবজাতির ত্রাণকর্তা হযরত মাহদী (আ.)’র সহযোগী হবেন।
সৌজন্যে : পার্সটুডে