নিজস্ব প্রতিনিধি :: সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার সদ্যসমাপ্ত এসএসসি পরীক্ষার ফল প্রত্যাশী এক হিন্দু শিক্ষার্থী ইসলাম ধর্ম গ্রহণক করেছে। ঐ শিক্ষার্থীর বর্তমান নাম আব্দুল্লাহ। ইসলাম গ্রহণের পূর্বে তার নাম ছিল শ্রী মোহন দেবনাথ।
আব্দুল্লাহ ইসলাম গ্রহণের পর তার পরিবার অভিযোগ করে যে তাদের সন্তানকে অপহরণের পর জোরপূর্বক ধর্মান্তরিত করা হয়েছে।
তবে পরিবারের এসব মিথ্যে অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে নও মুসলিম আব্দুল্লাহ জানান সে নিজেই উদ্বুদ্ধ হয়ে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছে। আব্দুল্লাহ উপজেলার পশ্চিম জাফলং উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এবার এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছে। সে উপজেলার দক্ষিণ প্রতাপপুর গ্রামের মনরঞ্জন নাথের ছেলে।
জানা যায়, গত ১৭ মার্চ হিন্দু ধর্ম ত্যাগ করে স্বেচ্চায় ইসলাম গ্রহণ করে আব্দুল্লাহ। পরদিন স্থানীয় এক তাবলিগ জামায়াতের সাথী হয়ে চিল্লার (ইসলামের দাওয়াত কাজ) জন্য চলে যায় মায়মনসিংহে।
আর তখনই তার পরিবারের লোকজন অভিযোগ করে বসে তাকে এলাকার কয়েকজন মুসলিম লোক তাদের ছেলেকে অপহরণ করে জোরপূর্বক ধর্মান্তরিত করেছেন।
আর এ নিয়ে এলাকায় শুরু হয় তোলপাড়। তাতে অভিযুক্ত ওই লোকজন আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। তাদের বিরুদ্ধে মামলা করারো প্রস্তুতি নেয় নও মুসলিম আব্দুল্লাহর পরিবার। কিন্তু এলাকার লোকজন তাদের বাধা দিয়ে বিষয়টি নিজেরাই মিমাংসা করার প্রতিশ্রুতি দেয়।
এরই প্রেক্ষিতে গত রোববার (১০ এপ্রিল) উপজেলা যুবলীগ নেতা গোলাম সারওয়ারের মধ্যস্থতায় আব্দুল্লাহকে ময়মনসিংহ থেকে গোয়াইনঘাটে নিয়ে আসা হয়। ওইদিন বিকেল ৫টায় গোয়াইনঘাট প্রেসক্লাব মিলনায়তনে এক সালিশ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
ওই সালিশি সভায় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা লুৎফুল হক, সুভাষ চন্দ্র পাল ছানা, গোপাল কৃষ্ণ দে চন্দন, গোয়াইনঘাট প্রেসক্লাব সভাপতি মনজুর আহমদ, আওয়ামী লীগ নেতা ফরিদ আহমদ শামীম ও নজরুল ইসলাম নজু, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি নজরুল ইসলাম, উপজেলা যুবলীগ নেতা গোলাম সারওয়ার, স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা রুহুল আমীন, ছাত্রলীগ নেতা মোশারফ হোসেন মাসুম এবং আব্দুল্লাহর বাবা-মা ও আত্মীয়স্বজন।
সালিশি সভায় সবার উপস্থিতিতে আব্দুল্লাহ বলে, ‘আমি স্বেচ্ছায় এবং স্বজ্ঞানে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছি। কারো প্ররোচনায় প্রলুব্ধ হয়ে কিংবা পরামর্শ নিয়ে আমি ধর্মান্তরিত হইনি।’
সে আরো বলে, ‘ইসলাম হলো আসল ধর্ম। আমি সপ্তম শ্রেণিতে অধ্যয়নরত থাকাবস্থাতেই ধর্মান্তরিত হওয়ার চেষ্টা করছি। কিন্তু সেই সুযোগ হয়ে ওঠেনি। দীর্ঘদিন পর আমার মনের ইচ্ছা পূরণ হওয়াতে পুলক অনুভব করছি। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন।’
এ বিষয়ে বৈঠকে থাকা গোয়াইনঘাট প্রেসক্লাব সভাপতি মনজুর আহমদ বলেন, ‘তার বক্তব্যের পর অভিযুক্তদের দায়মুক্তি দেয়া হয়। সেই সঙ্গে আব্দুল্লাহ আবার চিল্লায় চলে যায়।’