সাঈদ হুসাইন::
নেসাব সংস্কারে বাংলাদেশের বরেণ্য দুই আকাবিরের উদ্যোগ
খতীবে আজম হযরত মাওলানা ছিদ্দিক আহমদ সাহেব (রহ.) প্রাক্তন শাইখুল হাদিছ, আল জামিয়া আল ইসলামিয়া পটিয়া ও প্রাক্তন জেনারেল সেক্রেটারী আঞ্জুমানে ইত্তিহাদুল মাদারিস (পটিয়া) এবং হযরত আলহাজ্ব ইউনুস সাহেব (রহ.) প্রাক্তন সভাপতি সেক্রেটারী আঞ্জুমানে ইত্তিহাদুল মাদারিস ও প্রাক্তন মহাপরিচালক আল জামিয়া আল ইসলামিয়া পটিয়া এক যৌথ ইশতিহারে বলেন, ”পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের বিশেষজ্ঞ ওলামায়ে কেরাম এ ব্যাপারে ঐক্যমত্য পোষণ করেন যে, আরবী মাদরাসাসমূহের প্রচলিত পাঠ্যক্রম বর্তমান যুগের চাহিদা পূরণে অক্ষম। কেননা, যুগের পরিবর্তনের সাথে সাথে নতুন নতুন ফিৎনা উদ্ভব এবং উক্ত ফিৎনাসমূহ প্রতিহত করার প্রয়োজনীয়তাও অনুভূত হতে থাকে। এ পরিপ্রেক্ষিতেই আঞ্জুমানে ইত্তিহাদুল মাদারিসের শুরার সদস্যবৃন্দ প্রয়োজন মনে করে যে, প্রচলিত পাঠ্যক্রম থেকে অপ্রয়োজনীয় বিষয়সমূহ বাদ দিয়ে সেসব প্রয়োজনীয় বিষয়সমূহ সংযোজন করা, যেগুলোর মাধ্যমে আমাদের ছাত্ররা বর্তমান যুগের নতুন নতুন ফিৎনাসমূহের যথাযথ মোকাবিলা করতে পারে। উদাহরন স্বরূপ দরসে নেজামীতে আমাদের মাতৃভাষা বাংলা শিক্ষা দেওয়ার গুরুত্ব নেই। এ কারণেই আমাদের ক্বওমী মাদরাসাসমূহের ফারিগ (গ্র্যাজুয়েট) ছাত্ররা বিশুদ্ধ বাংলা না বলতে পারে আর না লিখতে পারে। অথচ আমাদের শ্রোতা বা পাঠকগণের অধিকাংশই বাংলাই বুঝে। এর ফলে ধর্মীয় শিক্ষার উদ্দেশ্য তাবলীগ ও দাওয়াতের পরিধি অধিক থেকে অধিক সংকুচিত হয়ে পড়ছে। এছাড়া আমাদের দেশে ইসলামী শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য আলেম সমাজ ও ইসলামী রাজনীতিবিদগণ দীর্ঘদিন থেকে যে আন্দোলন চালিয়ে আসছেন তাতে সাফল্য লাভের জন্য আমাদের ফারিগদের ইসলামী রাষ্ট্রনীতি, সমাজনীতি ও অর্থনীতি প্রভৃতি সম্পর্কে পূর্ণ ধারণা থাকা প্রয়োজন। তদ্রুপ গণিত, হিসাব বিজ্ঞান, ভূগোল, ইতিহাস প্রভৃতির ন্যায় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়াবলীর প্রতিও দরসে নিজামীতে কোন গুরুত্ব দেয়া হয় না। উল্লিখিত প্রয়োজনাবলীর প্রেক্ষাপটে আমাদের শুরার সদস্যবৃন্দ দরসে নেজামীর পাঠ্যক্রমে কিছুটা হ্রাস-বৃদ্ধি করতে বাধ্য হন। যার প্রয়োজনীয়তা শাইখুল ইসলাম হযরত মাদনী (রহ) ইতোপূর্বেই অনুভব করেছিলেন। (আঞ্জুমানে ইত্তিহাদুল মাদারিসের অনুমোদিত পাঠ্যক্রম ও প্রস্তাববলী থেকে গৃহীত, প্রকাশের তারিখ ১১ রমজানুল মুবারক-১৩৮৫ হিঃ) (সূত্রঃ আমার জীবনকথা- মাওলানা সুলতান যওক নদভী, পৃ. ১৮৩-১৮৪)