বৃহস্পতিবার, ১০ই অক্টোবর, ২০২৪ ইং
কমাশিসা পরিবারবিজ্ঞাপন কর্নারযোগাযোগ । সময়ঃ দুপুর ১:০১
Home / প্রতিদিন / অতীত! তুমি এতো নিষ্টুর?

অতীত! তুমি এতো নিষ্টুর?

editorial

ইলিয়াস মশহুদ ::
এক. একটি দুঃসংবাদ : জীবন যেখানে পরাজিত- গল্পে গল্পে আড্ডা মারছিলাম আমরা ক’জন বন্ধু। বেশ জমছিলো আড্ডাটা। ঈশিরাত পাড়ি দিয়ে তখন নিঝুম- নিস্তব্দ নিশিচর। এদিকে কারো কোনো খেয়ালই নেই। গল্প আড্ডায় মেতে আছি সবাই। চায়ের কাপে চুমুক দিতে ঠোট লাগিয়েছি মাত্র। তর্জন- গর্জন করে হঠাৎ কেঁপে উঠল পকেটে থাকা ১১১০ মডেলের মোবাইল ফোনটা। হ্যালো বলে রিসিভ করতেই ওপার থেকে ভেসে এলো কান্নার ধ্বনি। হতভম্ভ আমি।
কোনো মতে নিজেকে সামলে নিয়ে বোনটি আমার বললো- ভাইয়া! আব্বু…।  আর বলতে পারলো না কিছুই। ফুপিয়ে ফুপিয়ে ডুকরে কাঁদতে লাগলো। বুঝতে আর অসুবিধা হলো না ঘটনা কী? আমি যেনো তখন শান্তনা দেবার ভাষা হারিয়ে ফেলেছিলাম।
আমার এক খালু। পেটের ফিকিরে থাকতেন মধ্যপ্রাচ্যে। নাড়ির টানে গাট্টিগুট্টি বেঁধে এয়ারপোর্ট পর্যন্ত এসেছিলেনও। তবুও আসা হলো না আর। নিয়তির কাছে পরাজিত তিনি। ফ্লাইট মিস হল। হোটেলে ফিরলেন। অখানেই তাঁর জীবন প্রদীপ নিভে গেলো। দেশে আর আসা হলো না। শেষ বারের মত  দু’টো মেয়ের মুখ দেখা হলো  না। আল্লাহ তাঁকে শান্তিতে রাখুন। আমীন।

দুই. বিবেক। বিবেক। বিবেক  অত:পর আবেগ-
কথায় অছে- একমন আবেগের অন্তত তিনমন বিক থাকতে হয়। শুধু আবেগ দিয়ে কোনো কাজে শতভাগ সফলতা আসে না। হীতে বিপরীত হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। এ যদিও আমার উপলব্দি, তবুও আমি ভুক্তভোগী। সীমাহীন আবেগী এই আমি। 

তিন. বাজার : এই দুনিয়ার সবচে’ নীচস্থান! তবুও আমরা বাজারে যাই। কারণ, সামাজিক প্রয়োজন, পেটের তাগিদ ইত্যাদি নানাবিধ জরুরত মেটাতে। তাইতো বাজার দুনিয়ার সবচে’ বাজে স্থান হওয়া সত্ত্বেও আমরা বাজারে যাই।

চার. বই পোঁকা এই আমি’র আশাটা যেনো পুরণ হয়।
জীবনে যা কিছু চাওয়ার আছে, শখের জিনিস আছে, তারমধ্যে সবচে’ অগ্রগণ্য শখ হচ্ছে- দেশি-বিদেশি নানান রকমের বইয়ের সমাহার দিয়ে একটা ব্যক্তিগত সংগ্রহশালা বা লাইব্রেরি প্রতিষ্ঠা করা।
ইচ্ছে আছে বাড়িতে পৃথক একটা রুম তৈরি করে তাতে তরে তরে সাজিয়ে রাখব আমার প্রিয় লেখকদের প্রিয় সব বই।

পাঁচ. শক্তির  জয় হোক! 
মনটা ভীষন খারাপ। ক্রোধ, রাগ আর গোস্বা মাথায় কিলবিল করছে। শক্তি নেই, সামর্থ নেই, সাহসও নেই; নয়ত…?
ব্যক্তিস্বার্থ, অহমিকা, মনচায় ক্ষমতার প্রয়োগ, আত্মগরিমা কাউকে আকাশচুম্বি জনপ্রিয়তায় পৌঁছাতে পারে না। তবে ক্ষমতার দাপটে, ভয়ে তটস্থ হয়ে বাহ্যিক সম্মান পাওয়া এদেশে নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার। আর আড়ালে ঠিকই থুথু ফেলে।

ছয়. আজ বছর দুয়েক হলো- সৃষ্টিশীল কিছু লেখা হয়ে ওঠেনি। ভাবছিলাম, পাঠ অভাবে হয়ত এমনটা হচ্ছে। গেল রমযানে বেশ সময় নিয়েই পাঠ করলাম সাহিত্য গবেষক সৈয়দ হককে। ‘মার্জিনে মন্তব্য’ নামক ঐতিহাসিক তার সাহিত্যকর্মকে। পাঠান্তে ক্ষণিক বিশ্বাস জন্মেছিলো- আমি পারবো! কিছু একটা হতে পারব!! কিন্তু না, রবিন্দ্রণাথ থেকে শুরু করে কালের গর্ব মুসা আল হাফিজ পর্যন্ত আমাকে আরো বেশি করে পাঠ করতে হবে।

সাত. আহ্, খয়েরখাহ্!
সম্মানিত অথচ দোষিত, কর্মতৎপরতা এবং নানা প্রতিভায় প্রতিভিম্বিত, দোষেগুণে গুণান্বিত, পরিচিত বা চিহ্নিত; ভিন্নধারায় আলোচিত বা সমালোচিত মহান ব্যক্তিত্ব…?
সাহিত্য সমালোচক হতে হলে সাহিত্যিক হতে হয়। জ্ঞানীর স্খলন ধরিয়ে দিতে জ্ঞানী হতে হয়। আর পাগলকে পাগল বলে জানতে, চিনতে হলে নিজে পাগল হতে হয়???
সত্যিই অদ্ভূত! সত্যিই সেলুকাস!! বিনা মেঘে বজ্রপাত!!!
আমরা বাঙ্গালী। উপকারিকে লাথি দেই। অন্যের মাথায় কাঁঠাল ভেঙ্গে খেতে ভারি মজা।

আট. …অত:পর অধ:পতন অবধারিত। অহেতুক অবিচার অসহনীয়। অকর্মণ্য, অবিশ্বাস, অসদাচরণ অকল্পনীয় অন্তঙ্গ অনিমেষ। অসৌজন্য, কুলিন আত্মগরিমা ধ্বংশ আনে বেশ।
যত্ত দোষ নন্দঘোষ। প্রতিহিংসার জয় হোক। এই আমার ‘আমিত’কে সবাই জানুক। সহযাত্রীর অহোরাত্রি দাম্ভিকতায় পূর্ণ হোক !

নয়. সেই দু’হাজার এগারো সাল থেকে স্বপ্ন দেখা। লালন করা। অত:পর দু’হাজার বারোয় সূর্য ওঠা। মাঝে মাঝে বৃষ্টি হয়, বিজলি চমকে। আলো আধাঁরির খেলা চলে। চলছে…! চলবে….! স্বপ্ন পূরণ হবেই। সাথে থাকুন। পাশে থাকুন। সবসময়। সবখানে।

দশ. জীবনকে এবার সাজাতে হবে! ভাবতে হবে!
সমাজে কিছু লোক আছে এমন, যারা অন্যকে কষ্ট দিয়ে, ব্যাথা দিয়ে, মানসিক আঘাত দিয়ে, কৌশলে প্রতারিত করে অন্তরে প্রশান্তির হাওয়া অনুভব করে- প্রকৃতপক্ষে তারাই দুনিয়ার সর্বশ্রেষ্ট বুদ্ধিমান!
একঘেয়েমি, স্বার্থপরতা, আত্মকেন্দ্রিক অহমিকা, স্বজনপ্রীতি, কপট, হিংসুক, অযোগ্য- তবে থোথাবাজ ও চাটুকার যারা; অন্যের পদলেহন, চামচামি করে যারা- তারাই আজ দেশ সমাজের কর্ণধার!! মুতলাকান প্রতিটি ডিপার্টমেন্টেই এরা মূল চালিকাশক্তি!!!
অন্যায়ের জয় হোক।

এগারো. মাত্র কয়েকটা মশার ভ্যাঁন ভ্যাঁন শব্দ, আচমকা শুঁড়ের খোঁচা- না, আর পারলাম না। বাধ্য হয়ে খাঁচায় প্রবেশ করতে হল। মশার কাছে আমরা পরাজিত! এটুকুনই বুঝি আমাদের শক্তি!! মশার কাছে পরাজিত এই আমি ও আমরা।

বারো. জীবনের জয়গানে, তারুণ্যের সাময়িক উচ্ছলতার জোয়ারে গা ভাসিয়ে এই আমি আজ এক নব অধ্যায়ের দিকে যাত্রা করছি।
ইথারে নিন্দুকদের বিশ্রী হাসি আমাকে আরো এবং আরো বেশি তাড়িত ও আলোড়িত করে। কালান্তরের বিয়োগান্তে, স্বার্থের পিছু হেঁটে এই আমি আজ স্বার্থপর!
অত:পর…?
রক্ত দেখে হাসবো আমি, কাঁদবো সবার সুখে!

তেরো. নদীর প্রবাহ থেমে গেলে বলা হয় মরা নদী। তেমনি পড়ালেখায় সময়ের সাথে এগিয়ে না চললে আমরাও পিছিয়ে পড়ব। ক্রমাগত এই এই গতিটা মরা গাঙের মত হারিয়ে যাব।
… চলমান নিত্যনতুন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় এগিয়ে এসেছে কমাশিসা। নিয়েছে ভিবিন্ন কর্মসূচী। জেগে উঠুন। জেগে তুলুন। কমাশিসা আলোর পথ দেখাবেই।

চৌদ্দ. অতীত!
ফেলে আসা দিনগুলি মোর!
সুখ স্মৃতির হারিয়ে যাওয়া প্রহরগুলি মোর!
তুমি এতো নিষ্টুর?
এতো রোমাঞ্চকর?
হে অতীত!
হে অতীত!!
হে অতীত!!!
তোমাকে মনে পড়ে খুব। খু-উ-ব।

About Islam Tajul

mm

এটাও পড়তে পারেন

কওমি মাদরাসা কল্যাণ ট্রাস্ট, বাংলাদেশ

খতিব তাজুল ইসলাম ট্রাস্টের প্রয়োজনীয়তাঃ কওমি অংগন একটি স্বীকৃত ও তৃণমূল প্লাটফর্ম। দেশ ও জাতির ...