বৃহস্পতিবার, ২৫শে এপ্রিল, ২০২৪ ইং
কমাশিসা পরিবারবিজ্ঞাপন কর্নারযোগাযোগ । সময়ঃ বিকাল ৩:৪৮
Home / পরামর্শ / ফেসবুক-প্রোফাইলে ফ্রান্সের পতাকা থাকা না থাকা নিয়ে আমাদের কা কা

ফেসবুক-প্রোফাইলে ফ্রান্সের পতাকা থাকা না থাকা নিয়ে আমাদের কা কা

Badrul Fahimফাহিম বদরুল হাসান ::
অনেক আগে একটা কৌতুক পড়েছিলাম। সন্ত্রাসীর গুলি মাথায় লেগে এক লোক নিহত হয়ে রাস্তায় পড়ে আছে। লোকজন লাশটি দেখে দেখে যাচ্ছে। এরমধ্যে হঠাৎ একজন পথচারী চিৎকার দিয়ে বলল, “আল্লাহ বাঁচাইছে। গুলিটা কপালে লেগেছে, চোখে লাগে নি”। একথা শুনে আরেকজন ঐ লোকটিকে লক্ষ্য করে বলল, “ব্যাটা বলদ! লোকটি মরে গেছে আর তুমি আছো চোখে নিয়ে”। আমাদের অবস্থা ঠিক ঐ পথচারীর মতোই। ফ্রান্সে এই হামলায় কে লাভবান হল, কে ক্ষতিগ্রস্হ হল; বারবার এরকম আত্মঘাতী হামলায় মুসলমানদের কী আসছে কী যাচ্ছে। কারা ইসলামের নামে “আল্লাহু আকবার” বলে গুলি করে কয়েকজন মানুষকে মারার কারণে কত লক্ষ মানুষের “আল্লাহু আকবার”এ বিঘ্ন ঘটাচ্ছে। কারা মুখ-আবৃত করে কয়েকজন মানুষের মাথা কেটে কারা কয়েক লক্ষ নারীর মুখ-মাথা আবৃত করতে বাঁধা দিচ্ছে। এসব চিন্তা রেখে ফেসবুকের প্রোফাইলে ফ্রান্সের পতাকা দেয়া না দেয়া নিয়ে টানাটানি শুরু করেছি। কেউ মানবতার স্বপক্ষে দাঁড়ানোর নামে, কেউ শুধু কালের স্রোতে ভাসতে প্রোফাইলে ফ্রান্সের পতাকা সেট করছেন। এটার বিরুদ্ধে আবার বিরাট ঈমানদ্বীপ্ত ভাষণ দিচ্ছেন অনেকে।
এই পতাকা উড্ডয়নকে ইয়াহুদী খৃস্টানদের প্রতি মোহাব্বাতের নিশানা ধরে পতাকাবাহীদেরকে মোনাফেক সাভ্যস্ত করেই ফেলেছেন! আপনারা যারা ফেসবুকে প্রোফাইলে ফ্রান্সের পতাকা সেটকারীদেরকে “মোনাফেক’’ ইয়াহুদী, খৃস্টানদের দোসর” ইত্যাদি ট্যাগ লাগিয়ে দিচ্ছেন, দয়া করে একটু চিন্তা করুন। ফ্রান্সের পতাকা প্রোফাইলে দিতে কিন্তু কোনো রাষ্ট্র বলে নি, বলেছে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ। চাইলে কেউ দিতে পারে, না চাইলে নাই। এখানে পতাকা লটকাতে কেউ জবরদস্তি করছে না। অবশ্যই প্রশ্ন আসতে পারে যে, কেন শত হাজার মানুষ মরার পরও মুসলিম দেশগুলোর পতাকা লটকাতে বলে না। কিন্তু ফ্রান্সের পতাকা দেয়ার কারণেই ফেসবুক কিংবা Mark Zuckerbergকে গালাগালি করা কতটুকু যুক্তিযুক্ত! কীভাবে জোকারবার্ককে ডিরেক্ট শত্রু আখ্যায়িত করছেন!
ফেসবুকের কি ইসলামের পক্ষে/মুসলমানের পক্ষে কোনো অবদান নেই! এই তো সেদিন জোকারবার্কের মাত্র একটি ফেবু স্ট্যাটাসের কারণে আমেরিকার সেই মুসলিম “ঘড়ি বালক” (আহমাদ মুহাম্মাদ) পুরোপুরি হিরো বনে গিয়েছিল। সারা বিশ্ব কাঁপিয়ে দিয়েছিল। ফেসবুক কি ইসলাম প্রচারের বিশাল একটা প্লাটফর্ম করে দেয় নি!? এই ফেসবুক কি অনেকের জীবনকে ইসলামের আলোয় আসতে সাহায্য করে নি? এমনও লোক পাওয়া যায়,যারা এই সামাজিক সাইটের বদৌলতে ইসলাম সম্পর্কে অনেক কিছুই শিখেছেন এবং শিখছেন। আমাদের কি উচিত নয়, যে লোকটি আমাদেরকে এই সুযোগ করে দিয়েছে, তার হিদায়াতের জন্য দোয়া করা? নাকি বিষয়টা কৌতুক কৌতুক লাগে? যদি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উমর (রাঃ) এবং আবু জাহলের হিদায়াতের জন্য দোয়া করতে পারেন এবং কবুলও হয়, তাহলে আমাদের দোয়া কবুল হতে অবিশ্বাস কোথায়! আরেকটা কথা! আমরা যে এতো শত্রু শত্রু বলি, হঠাত একদিন যদি ফেসবুক কর্তৃপক্ষ বলে, “আজ থেকে সকলের প্রোফাইলে ফ্রান্সের ফ্ল্যাগ বাধ্যতামূলক করা হয়েছে”। আমাদের কী করার আছে? আছে আমাদের alternative platform, নাকি প্রয়োজন নেই? দেয়ালে বল ছোঁড়ে মারার পূর্বে উচিত নয় কি, বলটির প্রত্যাবর্তণের গতি এবং ফলাফল সম্পর্কে অবগত হওয়া??
লেখক : অনলাইন এক্টিভিস্ট

About Islam Tajul

mm

এটাও পড়তে পারেন

বিকৃত যৌনতায় দিশেহারা জাতি: সমাধান কোন পথে?

শাইখ মিজানুর রাহমান আজহারী: বাংলাদেশে প্রায় প্রতিদিন কোথাও না কোথাও ধর্ষণ হচ্ছে। নারীকে বিবস্ত্র করা ...