শুক্রবার, ২৯শে মার্চ, ২০২৪ ইং
কমাশিসা পরিবারবিজ্ঞাপন কর্নারযোগাযোগ । সময়ঃ বিকাল ৫:৫১
Home / অনুসন্ধান / দুষ্টুচক্রের কবলে রোহিঙ্গা শিবির

দুষ্টুচক্রের কবলে রোহিঙ্গা শিবির

হাবিবুর রহমান মিছবাহ::

কবি মুহিব ভাই আগে কখনো রোহিঙ্গা শিবিরে যাননি। তাই টেকনাফ সফর উপলক্ষ্যে তাকে নিয়ে চললাম তাকওয়া কমপ্লেক্সের দিকে। বিকেল পাঁচটার পর রোহিঙ্গা শিবিরে প্রবেশ নিষেধ। কিন্তু আমাদেরও সময় নেই। ভাবলাম, দেখেই চলে আসবো। মুহিব ভাই অভিভূত হলেন আমাদের ক্যাম্প দেখে। ওদের সাথে ফুটবল খেলেছি। আগের সফরে খেলা সামগ্রি ক্রয়ের টাকা দিয়ে এসছিলাম। ওদের আনন্দ দেখে চোখে পানি এসে পড়েছিলো। প্রথমদিকে হৃদয়টা ক্ষতবিক্ষত হয়েছিলো ওদের করুণ চাহনীতে। এই সময়ে এসে সেই ওদের মুখে চাঁদের হাসি। নেপথ্যের খাদেমদের গাল বেয়ে আনন্দাশ্রু গড়ে পড়াটাই স্বাভাবিক। বাংলা পড়ানো নিষেধ, তাই ইলমে নববীর পাশাপাশি আলাদা আলাদা শিক্ষকেদর মাধ্যমে চলছে বার্মিজ ও ইংরেজি শিক্ষাও। মহিলা হিফজখানা, মসজিদ, কিতাবখানা, কবরস্থান, নূরানী বিভাগ, স্কুল ও পুরুষ হিফজখানা ঘুরে ঘুরে দেখলাম আমরা। এ যেনো পাহাড়ীয় অরণ্যে পূর্ণিমার আলো!

এবার বের হতে হবে। কিন্তু মাগরিবের ওয়াক্তও চলে এলো। সিদ্ধান্ত নিলাম মাগরিব পড়েই বের হবো। নামায শেষে কিতাবখানা ও হিফজখানার রাত্রিকালীন পড়ালেখার দৃশ্য অবলোকনের লোভ সামলাতে পারিনি। যা দেখলাম, পুরো কলিজা ঠান্ডা। শ্রদ্ধেয় বড়ভাই জাগ্রত কবি Muhib Khan যে আবেগাগ্লুত ছিলেন, তা আমার চোখ এড়ায়নি। তাকওয়া কমপ্লেক্সের সেই আলোচিত কিশোর ‘জহিরুল ইসলাম’র তিলাওয়াতও শোনালাম তাকে। সেসব দৃশ্যের ভিডিও সালাহুদ্দীন মাসউদ দোস্তের টাইমলাইনে গেলে পাবেন। সফরসঙ্গী মাওলানা কে.এম ইয়াসিন রাশেদসানী, মাওলানা আনোয়ার আল নোমান, মাওলানা আফসার উদ্দীন ভাই-সহ সবাই মুগ্ধ হয়েছিলেন তাকওয়া কমপ্লেক্সের শৃংখলা দেখে। আমার গর্ব হয় এই ভেবে, তাকওয়া কমপ্লেক্স ভিজিটকারী প্রত্যেকের মন্তব্য ‘রোহিঙ্গা শিবিরে এতো সুন্দর গোছালো ও সুশৃংখল কমপ্লেক্স দ্বিতীয়টি নেই’ শুনে।

এবার বের হতেই হবে। গাড়ির কাছে যেতেই এক যুবক পথ আগলে দাঁড়ালো। পরিচয় দিলো গোয়েন্দা সদস্য হিসেবে। নাম জানতে চাইলাম কিন্তু বললো না। আইডেন্টি কার্ডও দেখাইনি। ফ্রট মনে হলো। কানে মোবাইলের হেডফোন লাগানো। কথা বলছিলো আপত্তিকর ভঙ্গিমায়। ভাষা ও ব্যবহারও কোনো সরকারী দায়িত্বশীলদের মতো ছিলো না। আমি কাউন্টার দিলাম, ‘আপনি ভাষা ব্যবহারে সংযত হোন! আমি উর্ধ্বোতন কর্মকর্তাকে ফোন দিচ্ছি। আমাদের সন্দেহ হলে আপনি রিপোর্ট দিবেন, কিন্তু আপনি যথারীতি হুমকি দিচ্ছেন! আমরা দেশের পরিচিত মুখ, আপনি চাইলেই যেনোতেনো আচরণের অধিকার রাখেন না’। আমার এ কথার পরই উনি কৌশলে কেটে পড়লো! আমরা চলে এলাম। পরবর্তিতে জানতে পারি, এনজিওদের কিছু চক্র হুজুরদের দেখলে প্রশাসনের পরিচয় দিয়ে এভাবে হয়রানী করে। চাঁদাও দাবী করে কারো কারো কাছে! আমাদের ক্যাম্পও নাকি একবার দখল করতে এসছিলো। দুষ্টুচক্র প্রতিরোধে সরকারকে কার্যকরি ভূমিকা পালন করতে হবে এখনি। নাহয় এরা আমাদের দেশের জন্য বুমেরাং হয়ে ওঠবে নিশ্চিত।

About Islam Tajul

mm

এটাও পড়তে পারেন

কওমি মাদরাসা কল্যাণ ট্রাস্ট, বাংলাদেশ

খতিব তাজুল ইসলাম ট্রাস্টের প্রয়োজনীয়তাঃ কওমি অংগন একটি স্বীকৃত ও তৃণমূল প্লাটফর্ম। দেশ ও জাতির ...