এহসান বিন মুজাহির : ১৪ ফেব্রুয়ারি বিশ্ব ভালোবাসা দিবস। ভালোবাসা শব্দটি পবিত্র। ভালোবাসা এমন এক অনুভূতি, যা মানুষের মনের গহিনে প্রবাহমান থাকে।
ভালোবাসা সব মাখলুকাতের মাঝে রয়েছে। পরস্পরের মধ্যে প্রীতি স্থাপনের জন্য আল্লাহ প্রতিটি প্রাণীর মধ্যেই ভালোবাসা তৈরি করে দিয়েছেন। ভালোবাসার কারণেই শ্রদ্ধাময়ী মা গর্ভে সন্তান ধারণ করেন। পিতা কঠোর পরিশ্রম করে সন্তানকে গড়ে তোলার চেষ্টা করেন।
ভালোবাসা আল্লাহর দান। তাই ভালোবাসার জন্য কোনো ক্ষণ, দিবস-রজনী নির্দিষ্ট নেই বা প্রয়োজনও হয় না। ভালোবাসার স্রোত সব সময় বহমান। ভালোবাসার মধ্যে যখন দুনিয়াবি কোনো চাওয়া-পাওয়া থাকে না, তখন সে ভালোবাসার মাধ্যমে মানবজীবনের চূড়ান্ত লক্ষ্য অর্থাৎ আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ করা যায়।
হজরত মুয়াজ ইবনে জাবাল (রা.) থেকে বর্ণিত-‘আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি, যারা আল্লাহর সন্তুষ্টির আশায় পরস্পরকে ভালোবাসে, আমার রেজামন্দির আশায় পরস্পর বৈঠকে মিলিত হয়, আমার সন্তুষ্টির কামনায় পরস্পর দেখা-সাক্ষাৎ করে এবং আমার ভালোবাসার জন্যই নিজেদের ধন-সম্পদ ব্যয় করে, তাদেরকে ভালোবাসা আমার জন্য ওয়াজিব হয়ে যায়। (মুসলিম)
হজরত আবু হুরাইরা (রা.) থেকে বর্ণিত-‘রাসূলুল্লাহ (সা.) এরশাদ করেছেন, আল্লাহ তায়ালার বান্দাগণের মধ্যে এমন কিছু লোক রয়েছে, যারা নবীও নয়, আর শহীদও নয়। কিন্তু বিচার দিবসে তাদের মর্যাদা দেখে নবী ও শহীদগণ তাদের ওপর ঈর্ষা করবেন। জিজ্ঞেস করা হল- হে আল্লাহর রাসূল! তারা কারা?
উত্তরে তিনি বললেন-তারা হচ্ছে সেসব লোক, যারা শুধু আল্লাহর মহব্বতে একে অপরকে মহব্বত করেছে। তাদের মধ্যে নেই কোনো রক্তের সম্পর্ক, নেই কোনো বংশের সম্পর্ক। তাদের মুখমণ্ডল হবে জ্যোতির্ময় এবং তারা নূরের মিম্বরের ওপর অবস্থান করবে। কিয়ামতের বিভীষিকাময় অবস্থায় মানুষ যখন ভীত-সন্ত্রস্ত থাকবে, তখন তারা ভীত হবে না। আর মানুষ যখন দুঃখে থাকবে, তখন তাদের কোনো দুঃখ থাকবে না।
মনে রাখতে হবে ভালোবাসা নির্ধারিত তারিখে সীমাবদ্ধ নয়। বিয়েশাদীর পূর্বে তরুণ তরুণীদের অবৈধ ভালোবাসা ইসলামে অবৈধ। শরীয় গর্হীত অশ্লীল বিনোদন ইসলামে বড় গোনাহ। কাজেই এসব অপসংস্কৃতি থেকে আমাদের দূরে থাকতে হবে।