বৃহস্পতিবার, ২৫শে এপ্রিল, ২০২৪ ইং
কমাশিসা পরিবারবিজ্ঞাপন কর্নারযোগাযোগ । সময়ঃ রাত ১:২৭
Home / কওমি অঙ্গন / প্রসঙ্গঃ দাওরায়ে হাদীস (মাস্টার্স) পরিক্ষায় ছাত্রীদের ছবির ব্যবহার!

প্রসঙ্গঃ দাওরায়ে হাদীস (মাস্টার্স) পরিক্ষায় ছাত্রীদের ছবির ব্যবহার!

সৈয়দ আনোয়ার আবদুল্লাহ.::
অযথা বির্তক কাম্য নয়। কওমি মাদরাসা সনদের সরকারী স্বীকৃতি নিয়েতো কম কথা বলেন নি। বুঝেছেন সবই তবে একটু পরে। জল গোলাটে করে। অন্তত এখন দেখুন বড়রা কী করেন। তাদের উপর আস্থা রাখুন।ফেসবুকে সমালোচনার ঝড় তুলে লাভ নেই।

আসন্ন দাওরায়ে হাদীস পরিক্ষায় মহিলা মাদরাসার ছাত্রীদেরও রেজিস্টেশনে ছবি ব্যবহার করা লাগবে মর্মে আল হাইয়াতুল উলিয়া লিল জামিআতুল কওমিয়া বাংলাদেশ নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এতেই দেখলাম সবাই গেল গেল সব গেল বলে হৈ হুল্লুড় করে উঠছেন। জনাব! একটু অপেক্ষা করা যায় না?

এক্ষেত্রে আমার বিকল্প #প্রথম প্রস্তাবনা হল, ছাত্রীদের নিবন্ধনের জন্য সতন্ত্র মহিলা শাখা খোলা হোক কেন্দ্র থেকে জেলা পর্যন্ত। আর যদি মহিলা শিক্ষিকা কতৃক সত্যায়িতের ব্যাবস্থা করা যায় তাহলেতো সমস্যার কিছু থাকবে না। আর হলের নেগরান বা ডিউটি শিক্ষকতো পুরুষ থাকার কথা নয়। মহিলা শিক্ষিকা থাকবেন। তাহলে সমস্যাটি কোথায়?

আপনি একটি মানসম্মত পরীক্ষা দিতে যাচ্ছেন। একটি সরকারি সাটিফিকেট পাবেন। এটা দিয়ে সরকারি কিছি জায়গায় চাকুরি করা যাবে (যেমন প্রস্তাবিত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ধর্মিয় শিক্ষক নিয়োগ)। যদি সঠিকভাবে সচ্ছতার সাথে রেজিস্টেশন বা নিবন্ধন না হয় তখন এনিয়ে নানা ধরনের দুর্নীতি হতে পারে। সচ্ছতার জন্য কিছু পক্রিয়াতো অবলম্বন করা হতেই পারে।

সুতরাং এমন পরিস্থিতিতে পূর্বেকার হতে একটু ব্যতিক্রম বিষয়াদি আসতেই পারে। ভারত পাকিস্তানে একই প্রদ্ধতিতে মহিলা মাদরাসার নিবন্ধন হয়ে থাকে। তাহলে আমাদের সমস্যা কোথায়? এটা প্রযোজনেই হচ্ছে। বিষয়টিকে পজিটিভ ভাবে দেখলেই সবকিছু সহজ হয়ে যায়।

আচ্ছা হজ্ব উমরা বিদেশ সফরের সময় কী আমাদের আলেমদের মা বোন বিবিগন প্রযোজনে ছবি তুলেন না? তখনতো ছবি জেলা প্রশাশক থেকে শুরু করে নানা স্থরে কয়েক ডজ্জন মানুষ দেখে। সেখানে কী শরিয়ত অমান্য হয় না। বলবেন প্রযোজনে। এটাও কিন্তু প্রযোজনে। তবে সর্তকতার সাথে। তাছাড়া মাস্তুরাতের সফরের হাজার হাজার দ্বীনদ্বার মহিলা কাকরাইলের তত্বাবধানে এখন বাংলাদেশ থেকে বিদেশ সফর করছেন।

অনেক আলেম স্থায়ীভাবে পরিবার পরিজন নিয়ে বিদেশে আছেন। সংখ্যায় লক্ষাধিক হবে। তারা নিয়মিত দেশে আশা যাওয়া করছেন। তারা কী পার্সপোটে ছবি ব্যবহার ছবি ব্যবহার করছেন না? বা মাসালা তাহকীক করছেন না? নিশ্চয় করেছেন।তবে আপনি এর পক্ষে না থাকাটা আপনার ব্যক্তিগত বিষয়। অযথা কল্পনার ডানা মেলে জাতিকে বিভ্রান্ত করার কোন মানে হয় না।

আমি ব্যক্তিগতভাবে কখনোই ডালাওভাবে পুরুষদ্বারা ছবি সত্যায়িত করে নিবন্ধনের পক্ষে নই। হয়ত এটা কার্যকর নাও হতে পারে বলে আশা করছি। তবু যদি করতেই হয় তাহলে, আমরা উপরের বিষয়গুলা ও প্রথম প্রস্তাবনা মেনে নিয়ে করতে পারি। আশা করি শরিয়া কোন সমস্যা হবে না। বড়রা সেটা বুঝে শুনেই করবেন বলে আশা করি।

দ্বীতিয় আরেকটি বিকল্প প্রস্তাবনা দিচ্ছি, যা অনেকটা প্রযুক্তি নির্ভর এবং আরো আধুনিক। তাহল “ফিঙ্গারপ্রিন্ট সফ্টওয়ার ব্যবহার করলেই সমস্যার সমাধান হয়ে যায়। একটি কেন্দ্রিয় ওয়েবসাইট থাকবে যেখানে ছাত্রীরা প্রবেশ করে ফিঙ্গারপ্রিন্টসহ অন্যান্য তথ্য দিবে। তারপর পরীক্ষার হলে প্রবেশের সময় মোবাইলের সাথে সংযুক্ত একটি ছোট্ট ফিঙ্গারপ্রিন্ট ডিভাইসে সবাই ফিঙ্গারপ্রিন্ট দিয়ে হলে প্রবেশ করবে। ব্যক্তি শনাখতের ক্ষেত্রে ছবির চেয়ে ফিঙ্গারপ্রিন্ট অধিক শক্তিশালী।”

কুতবে আলম মাদানী রহ এর খলিফা শায়খুল ইসলাম আহমাদ শফী দা.বা. কী শরিয়তের বিধি নিষেধ না বুঝে করবেন? যতদূর জানি উম্মতের ব্যাপক অংশ ভ্রান্তির উপর এক মত হন না।যদি তাকওয়ার কারনে কোন ছাত্রী ছবি তুলতেই না চান তবে মেশকাত পর্যন্ত পড়ে দাওরা বাবা,ভাই,দাদা,স্বামী, মামা, চাচা বা যেকোন মাহরামের কাছে পড়ে নিলেই হল। প্রশ্ন হলো যাদের মাহরাম আলেম নয় তারা কী করবে? আলেম বিয়ে করে তার কাছে পড়লেই হল। ছবি তোলার কোন দরকার হল না।

আরেকটি কথা, যারা ছবি তুলতে চান না তারা নিশ্চয় সার্টিফিকেটের জন্য উদ্বিগ্ন হবেন না। ফেসবুকে অপ্রয়োজনীয় লেখালেখি এবং বিপরীতের লাইক, কমেন্ট ইত্যাদি কুড়ানো অার অন্যদিকে প্রয়োজনের জন্য ছবি তোলা কোনটি বেশি নিন্দনীয় তা ব্যাপক আলোচনার অপেক্ষা রাখে।

মহিলা মাদরাসার ছাত্রীদের দাওরায়ে হাদীস পরিক্ষায় ছবি তুলা নিয়ে অযথা বির্তক তৈরি কাম্য হতে পারে না। এতে করে একটি বৃহৎ কাজ কেবল বাধাগ্রস্থ হতে পারে। আল্লাহ, আমাদের সবাইকে বুঝ দান কর। এক ও নেকের সাথে দ্বীনের উপর অঢল থাকার তাওফিক দান কর। আমিন

About Islam Tajul

mm

এটাও পড়তে পারেন

কওমি মাদরাসা কল্যাণ ট্রাস্ট, বাংলাদেশ

খতিব তাজুল ইসলাম ট্রাস্টের প্রয়োজনীয়তাঃ কওমি অংগন একটি স্বীকৃত ও তৃণমূল প্লাটফর্ম। দেশ ও জাতির ...