কমাশিসা : বাংলাদেশে সরকারের নির্বাহী আদেশে হেফাজতে ইসলামের দাবি অনুযায়ীই ‘ধর্মকে অগ্রাধিকার দিয়ে’ পাঠ্যপুস্তকে পরিবর্তন আনা হয়েছে। বেসরকারি উদ্যোগে করা এক তদন্ত প্রতিবেদনে এমন মন্তব্য করা হয়েছে।
যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে আন্দোলনকারী একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির উদ্যোগে তাদের সমমনা পেশাজীবীদের নিয়ে গঠিত জাতীয় নাগরিক কমিশন আজ এই প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
প্রতিবেদনে সরকার ও হেফাজতের আপোষের দাবিও করা হয়। তবে হেফাজতে ইসলাম এ দাবি প্রত্যাখ্যান করে বলেছে, সরকারের সাথে আপোষের প্রশ্নই আসে না, কিছু মানুষ অহেতুক বিতর্ক সৃষ্টির চেষ্টা করছে।
“পাঠ্যপুস্তক সংশোধনের ক্ষেত্রে ধর্ম এবং সাম্প্রদায়িকতার প্রভাব এতটাই পড়েছে যে – তার কাছে অন্য সমস্যাগুলো গৌণ হয়ে গেছে” – বলেছেন জাতীয় নাগরিক কমিশনের সদস্য সচিব অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন।
ঢাকায় তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশের অনুষ্ঠান থেকে সাম্প্রদায়িকতার বিষয়গুলো বাদ দিয়ে পাঠ্যপুস্তক দ্রুত সংশোধনের দাবি করা হয় ।
পাঠ্যপুস্তকে ‘বানান ভুল’, ‘বিভ্রান্তিকর তথ্য বা ভুল তথ্য’ এবং ‘সাম্প্রদায়িকতা’, এই তিনটি সমস্যাকে চিহ্নিত করা হয়েছে জাতীয় নাগরিক কমিশনের তদন্ত প্রতিবেদনে। তবে বাংলা বইয়ে ‘ধর্ম এবং সাম্প্রদায়িক দৃষ্টিভঙ্গির প্রভাব বেশি পড়েছে’ বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
প্রাথমিক এবং মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থিদের জন্য এ বছর প্রকাশিত ৭৮টি বইতেই চিহ্নিত এই তিনটি সমস্যা পেয়েছেন বলে বলছেন তদন্তকারীরা।
কওমী মাদ্রাসাভিত্তিক সংগঠন হেফাজতে ইসলামের দাবির সাথে পাঠ্যপুস্তকে আনা সংশোধনীর কোথায় মিল আছে, তাও প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয়।
তবে এ নিয়ে সরকার এবং হেফাজতের যারা কথা বলছেন,তাঁরা বক্তব্য তুলে ধরছেন কৌশলে।
হেফাজতে ইসলাম এর যুগ্ম আহবায়ক মুফতি ফয়জুল্লাহ বলছিলেন, “এ দাবি শুধু হেফাজতের দাবি নয়। এটা ছিল সারাদেশের মানুষের । সরকার দেশের মানুষের অনুভুতিকে শ্রদ্ধা করে পাঠ্যপুস্তক প্রকাশ করেছে।”
তিনি আরও বলেন, “পাঠ্য বইয়ে কবিতা, নিবন্ধ, গল্প বা অন্য বিষয় ইসলামবিদ্বেষী হোক, একটা মহল তা চাইছে বলে তাঁরা মনে করেন।”
এ ব্যাপারে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ এটুকুই বলেছেন, পাঠ্যপুস্তক নিয়ে বিভিন্ন অভিযোগে ব্যাপারে গঠিত সরকারি তদন্ত কমিটির রিপোর্ট তাঁরা পেয়েছেন। সেটি তাঁরা পর্যালোচনা করে দেখছেন।
সূত্র : বিবিসি