রবিবার, ৬ই অক্টোবর, ২০২৪ ইং
কমাশিসা পরিবারবিজ্ঞাপন কর্নারযোগাযোগ । সময়ঃ সকাল ১১:০৬
Home / অনুসন্ধান / হায়! রাজনীতির নামে আমরা যা করছি!

হায়! রাজনীতির নামে আমরা যা করছি!

মাসুম আহমদ

ইসলাম একতায় বিশ্বাসী। সেই হিসেবে ইসলামের নামে রাজনীতি বা ইসলামী রাজনীতিতে ঐক্য অপরিহার্য ছিলো। কিন্তু গণতন্ত্রের ফাঁদে পড়ে আমরা নানা দলে বিভক্ত হয়ে পড়েছি। তবুও বিষয়টি সহনীয় যে, বিভিন্ন দলে বিভক্ত আমরা ইসলামের স্বার্থে রাজনীতি করছি। কিন্তু চালচলন আর কর্মপদ্ধতি দেখলে মনে হয় ইসলামকে আমরা শুধু টাইটেল হিসেবেই ব্যবহার করছি।
ইসলাম সহনশীলতার শিক্ষা দেয়। অথচ রাজনৈতিক মঞ্চে আমাদের অসহিষ্ণু আচরণ সাধারণ মানুষকেও লজ্জা দিবে। কুরআন হাদিসের শিক্ষা অর্জনের পর আমরা “আমার নেতা সবচেয়ে যোগ্য, আমার দল সবচেয়ে বড়, আমার আদর্শ সবচেয়ে মহান” বলার পাশাপাশি যখন নির্দ্বিধায় বলি; “ঐ দলের নেতা খারাপ, ঐ দল ভ্রষ্ট, ঐ দল আদর্শ বিচ্যুত” তখন স্পষ্ট হয়ে যায় আমাদের রাজনীতি ইসলামের জন্য নয় স্বার্থের জন্য। আমাদের চেঁচামেচি দ্বীনের জন্য নয় নেতৃত্বের জন্য। আমরা শঠ ধোঁকাবাজ ছাড়া কিছু নই।

রাজনৈতিক বিরোধ ফিক্বহী বিরোধের মতো নয় যে, নিজের ইমামকে বিশ্বাসের পাশাপাশি অন্যদেরকেও সত্যের অনুসারী হিসেবে বিশ্বাস করতে হবে। কিন্তু একই লক্ষ্য উদ্দেশ্য নিয়ে রাজনীতি করে একজন অপরজনকে প্রতিনিয়ত কুৎসিত কথা বলবেন এমনটি নিশ্চয় ধর্ম ও সমাজ সমর্থিত নয়!

রাজনীতিতে কতভাবে আমরা প্রতারণা করছি হিসেব নেই। শুধুমাত্র অনলাইনের মিথ্যাচার হিসেব করে শেষ করা যাবে না। সক্রিয় রাজনীতিবিদ হয়ে কখনো নিরপেক্ষতার বেশ ধরে অন্য দলের সমালোচনা করছি। এক আইডিতে নিরপেক্ষতার ভাব করে অন্য আইডি দিয়ে গালিবাজি করছি। কখনো প্রমাণ ছাড়া অন্য দলের নেতার নামে কুৎসা রটাচ্ছি। কখনো নিজের দলকে হাতি দাবী করে অন্যদলকে পিঁপড়ে ভাবছি। নির্বাচনের আগে গ্যারান্টি দিয়ে বিজয়ের ঘোষণা দিচ্ছি। বিপক্ষ দলের নাম বিকৃত করছি। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ হওয়াতে মানুষকে “ষাঁড়” বলে ডাকছি। কি অদ্ভুত আমাদের আচরণ।

এসব আচরণ শুধুমাত্র রাজনৈতিক স্বার্থে, ইসলামের স্বার্থে এমন আচরণ নয় নিশ্চিতভাবে বলা যায়। অথচ সঠিক বিবেচনায় তো ইসলামী দলগুলোর একটিও বিবেচনায় আসার যোগ্য নয়। ২/১ বার বিএনপি, আওয়ামিলীগের হাত ধরে ৩/৪ টি সংসদ সদস্যপদ প্রাপ্তি, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে কিছু জায়গায় বিজয় আর কয়েক হাজার ভোট লাভ করা ছাড়া দেশীও রাজনীতিতে ইসলামী রাজনৈতিক দলগুলোর কি এমন অবদান আছে যে চিৎকার করে অনলাইন গরম করে তুলতে হবে। আহা এই গালিবাজির বদলে যদি একজন বিএনপি/জামায়াত/লীগের কর্মীকে দাওয়াত দিয়ে নিজের দলে নিয়ে আসতেন তবে কতোই না ভালো হতো। যদি একজনের গালির বদলে অন্যজন সহনশীল আচরণ দেখিয়ে প্রতিপক্ষকে মুগ্ধ করতো! যদি প্রতিপক্ষকে রাজনৈতিক কর্মী পরিচয়ের বদলে একজন মুসলিম ভাই হিসেবে ভাবতো! কিন্তু আমাদের স্বভাব যে এই মানসিকতা গ্রহনে অক্ষম।
সাধারণ মানুষ তো জানে, ইসলামী দলগুলোর ভোট হাতে গুনা যাবে। তবে কেন এই বিরোধ? স্বঘোষিত বড়ত্বের তীব্র বাসনা? অন্যকে ছোট করার কুৎসিত মানসিকতা?

আসলে পিঁপড়া যতোই নিজেদের সমাজে ঝগড়া করুক, বনের রাজত্ব তার কপালে নেই। তার বিতর্ক তার মতো আরেকটি পিঁপড়ের সাথেই হবে। এভাবে বিতর্ক করতে করতে একসময় জীবন ফুরিয়ে যাবে। পরবর্তী প্রজন্মের পিঁপড়া আগের মতো বিতর্কে লিপ্ত হবে। কখনো দলবেঁধে হাতি মেরে রাজত্ব অর্জনের ইচ্ছে তার নেই। সবসময় দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক হয়েই জীবন যাপিত হবে। তবুও বিতর্ক চলবে। কিসের রাজত্ব। বিতর্কের মতো মধুর কিছু আছে কি!!!

About Abul Kalam Azad

mm

এটাও পড়তে পারেন

কওমি মাদরাসা কল্যাণ ট্রাস্ট, বাংলাদেশ

খতিব তাজুল ইসলাম ট্রাস্টের প্রয়োজনীয়তাঃ কওমি অংগন একটি স্বীকৃত ও তৃণমূল প্লাটফর্ম। দেশ ও জাতির ...