বৃহস্পতিবার, ২১শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং
কমাশিসা পরিবারবিজ্ঞাপন কর্নারযোগাযোগ । সময়ঃ রাত ৮:০৬
Home / এশিয়া / সিরিয়ায় রুশ হামলা নিয়ে তীব্র বিতর্ক, সুন্নীদের নিশ্চিহ্ন করতে শিয়াদের পাশে রাশিয়া !

সিরিয়ায় রুশ হামলা নিয়ে তীব্র বিতর্ক, সুন্নীদের নিশ্চিহ্ন করতে শিয়াদের পাশে রাশিয়া !

rusia jetকমাশিসা ডেস্ক: সিরিয়ায় সুনি্নপন্থী জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেটের (আইএস) বিরুদ্ধে রাশিয়া বুধবার থেকে যে বিমান হামলা শুরু করেছে, তার প্রকৃত উদ্দেশ্য নিয়ে তীব্র বিতর্ক শুরু হয়েছে। আমেরিকার দাবি, আইএস নয়, প্রথম দিনেই আমেরিকা-সমর্থিত আসাদবিরোধী বিদ্রোহীদের ওপর হামলা করেছে রাশিয়া। তবে এমন অভিযোগ অস্বীকার করেছে রাশিয়া। এদিকে আইএসবিরোধী অভিযান চালানোর সময় যাতে ভুলক্রমে রুশ ও আমেরিকান বাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষ না বাধে, সেজন্য খুব দ্রুত সময়ে আলোচনায় বসতে যাচ্ছে দুই দেশ। অন্যদিকে রাশিয়া বৃহস্পতিবার দ্বিতীয়দিনের মতো সিরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় অন্তত তিনটি এলাকায় হামলা চালিয়েছে বলে জানা গেছে। সিরিয়ার সরকারি সূত্র জানিয়েছে, আল-কায়েদা সংশ্লিষ্ট সশস্ত্র সংগঠন জাবাত আল-নুসরার ওপর এই হামলা চালানো হয়েছে। সংবাদসূত্র : বিবিসি, আল-জাজিরা
আমেরিকার দৈনিক নিউ ইয়র্ক টাইমস ও ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল বুধবার রাশিয়ার হামলার প্রথম দিনটিতেই জানায়, আইএস নয়, আমেরিকা সমর্থিত আসাদবিরোধীদের ওপরই হামলা চালাচ্ছে রাশিয়া। সিরিয়ায় চলমান গৃহযুদ্ধ পর্যবেক্ষণকারী মানবাধিকার সংস্থা ‘সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস’ জানিয়েছে, ‘সিরিয়ার পশ্চিমাঞ্চলীয় হোমস প্রদেশে রুশ বিমান হামলা হয়েছে। হোমসের উত্তরপ্রান্তে গ্রামীণ অঞ্চলে রাশিয়ার বিমান হামলায় ২৭ জন প্রাণ হারিয়েছে। নিহতদের মধ্যে ছয় শিশুও আছে।’

বিতর্কের মূল উৎস, হোমসে আইএস নয়, বরং সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের বিরোধী অন্য গোষ্ঠীগুলোর প্রাধান্য রয়েছে। অসমর্থিত সূত্রে খবর, রাশিয়া বিমান ‘জয়েস আল-ফাতা’ গোষ্ঠীর ওপরেও হামলা চালিয়েছে। আসাদবিরোধী এই গোষ্ঠীটি ক্রমেই শক্তিশালী হয়ে উঠলেও এদের সঙ্গে আইএসের কোনো যোগ নেই। পাশাপাশি আরেকটি অসমর্থিত সূত্র জানায়, আমেরিকাসহ পশ্চিম বিশ্ব সমর্থিত আসাদবিরোধী গোষ্ঠী ‘ফ্রি সিরিয়ান আর্মি’-র অংশ ‘তাজামৌ আল-ইজ্জা’র ওপরেও হামলা হয়েছে। সিরিয়ার বিদ্রোহীদের একটি জোট দাবি করেছে, হোমস, হামা এবং লাতাকিয়ায় বিমান হামলা হয়েছে। অথচ আইএস জঙ্গিদের শক্ত ঘাঁটি রাকাতেই কোনো হামলা হয়নি।
মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম প্রভাবশালী রাষ্ট্র সৌদি আরবও হামলার বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। জাতিসংঘে নিযুক্ত সৌদি রাষ্ট্রদূত আবদুল্লাহ আল-মুয়াল্লেমি এক সাক্ষাৎকারে বুধবার রাশিয়ার এই হামলা বন্ধের দাবি জানিয়ে বলেন, রাশিয়া যেখানে হামলা চালিয়েছে, সেখানে আইএসের কোনো ঘাঁটিই ছিল না।
তবে হামলার পর রাশিয়ার প্রতিরক্ষা কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সিরিয়ায় বুধবার আইএসের বিরুদ্ধে তারা প্রায় ২০ দফা বিমান হামলা চালিয়েছে। ক্রেমলিনের পক্ষ থেকে দেয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়, সুপরিচিত অনেক সন্ত্রাসী সংগঠনের ঘাঁটির ওপর এই হামলা চালানো হয়েছে। বিমান হামলাগুলো চালানোর আগে ভূমিতে সক্রিয় সশস্ত্র বাহিনীগুলোর সঙ্গেও সমন্বয় করা হচ্ছে বলে দাবি করা হয়। এছাড়া বুধবারের হামলায় রুশ প্রেসিডেন্ট ভস্নাদিমির পুতিন সন্তুষ্ট কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে পুতিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেশকভ বলেন, ‘এমন কোনো জবাব এখনই দেয়া সম্ভব নয়।’
বিদ্রোহীদের ওপর হামলা চালানোর খবর গুজব বলে উড়িয়ে দিয়েছেন রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভও। সিরিয়ায় রুশ বিমান হামলার খবর জানতে পেন্টাগন নয় বরং রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করার জন্য আমেরিকার সাংবাদিকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। নিউইয়র্কে আমেরিকার পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরির সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ল্যাভরভ বলেন, ‘রাশিয়ার বিমান হামলা নিয়ে পেন্টাগনের বক্তব্য শোনার দরকার নেই; বরং এ বিষয়ে জানতে হলে রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়কেই প্রশ্ন করুন।’ এছাড়া জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে এ সংক্রান্ত তথ্য প্রকাশ করা হয় বলে জানান তিনি।rusia attack
এদিকে পশ্চিমাদের সামরিক জোট ন্যাটো জানিয়েছে, সিরিয়ায় আমেরিকা নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক জোট যে বিমান হামলা চালাচ্ছে, তার সঙ্গে রাশিয়ার সমন্বয় খুব কমই রয়েছে। আমেরিকার কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বুধবার রাশিয়া যে হামলা চালিয়েছে, তার মাত্র এক ঘণ্টা আগে সে বিষয়ে রাশিয়ার কর্মকর্তারা তাদের জানিয়েছেন। এছাড়া হামলার আগে আমেরিকা এবং ইসরাইলকে তথ্য দিলেও ফ্রান্সকে কোনো আগাম সতর্কতা দেয়া হয়নি অভিযোগ করেছেন ফ্রান্সের পররাষ্ট্রমন্ত্রী লরাঁ ফেবিয়াস। তবে সমন্বয়ের এই সমস্যা খুব দ্রুত কাটিয়ে ওঠার জন্য অচিরেই আলোচনা চালানোর ঘোষণা দিয়েছেন আমেরিকা ও রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী। বৃহস্পতিবার রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ জানান, যে কোনো ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে দুই দেশের মধ্যে যোগাযোগের চ্যানেল স্থাপন জরুরি। আমেরিকার পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরিও জানিয়েছেন, যত দ্রুত সম্ভব দুই দেশের মধ্যে আলোচনা শুরু করা হবে। সম্ভব হলে তা বৃহস্পতিবারের মধ্যেই শেষ করা হবে।

সুত্র: যায়যানদিন

About Islam Tajul

mm

এটাও পড়তে পারেন

কওমি মাদরাসা কল্যাণ ট্রাস্ট, বাংলাদেশ

খতিব তাজুল ইসলাম ট্রাস্টের প্রয়োজনীয়তাঃ কওমি অংগন একটি স্বীকৃত ও তৃণমূল প্লাটফর্ম। দেশ ও জাতির ...