বুধবার, ১৭ই এপ্রিল, ২০২৪ ইং
কমাশিসা পরিবারবিজ্ঞাপন কর্নারযোগাযোগ । সময়ঃ রাত ১:৩০
Home / কওমি অঙ্গন / নেতৃত্ব ও আলেমসমাজ

নেতৃত্ব ও আলেমসমাজ

ড. আহমদ আবদুল কাদের :

নীতিগতভাবে উলামায়ে কেরাম হচ্ছেন নবীগণের উত্তরাধিকার। তারা কিসের উত্তরাধিকার? তারা নবী আ:-এর রেখে যাওয়া জ্ঞানের উত্তরাধিকার। শেষ নবী সা:-এর রেখে যাওয়া জ্ঞান কুরআন ও সুন্নাহ- তার জীবনাদর্শ, তারই উত্তরাধিকারী হচ্ছেন উলামায়ে কেরাম। উলামায়ে কেরাম মহানবী সা:-এর রেখে যাওয়া জ্ঞান অর্জন করবেন, ধারণ করবেন এবং সে জ্ঞানের আলোকে ব্যক্তি, সমাজ ও রাষ্ট্রকে গড়ে তুলবেন এবং পরিচালনা করবেন। তাহলেই উত্তরাধিকারের পুরো হক আদায় হবে।
মহানবী সা:-এর পর তাঁর উত্তরাধিকারীগণ পরিপূর্ণভাবে উত্তরাধিকারের দায়িত্ব পালন করেন। পরে ধীরে ধীরে সমাজ ও রাষ্ট্রব্যবস্থায় বিকৃতি আসে। সে বিকৃতি প্রতিরোধে সত্যপন্থী উলামায়ে কেরাম সাধ্যমতো ভূমিকা পালন করেন। উলামাসমাজের ভূমিকার কারণেই জালেম-ফাসেক শাসকগণ মুসলিমসমাজকে পুরোপুরি বিকৃত করতে সক্ষম হয়নি।

মুসলিমসমাজে অতীতে আলেমগণ ছিলেন বুদ্ধিবৃত্তিক নেতৃত্বের সর্বোচ্চ আসনে। তারা যেমন ছিলেন বিচার ও শিক্ষা বিভাগের নেতৃত্বে, তেমনি ছিলেন প্রশাসনিক দায়িত্বেও। দেশ ও সমাজের সব গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব তারাই পালন করতেন। আজকে আমরা সে সময়ে যাদের বিজ্ঞানী, দার্শনিক, কবি-সাহিত্যিক বলে জানি; তারাও কিন্তু আলেমই ছিলেন। এক কথায় ইসলামি সভ্যতার স্বর্ণযুগে যে শিক্ষাব্যবস্থায় ইমাম, খতিব, মুফতি, ফকিহ, মুহাদ্দিস মুফাসসির তৈরি হতো, সে শিক্ষাব্যবস্থার অধীনে বিজ্ঞানী, দার্শনিক, প্রযুক্তিবিদ, সমাজবিজ্ঞানী, প্রশাসক, অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপক, সরকারি কর্মকর্তা ও শাসক ইত্যাদি তৈরি হতো। সমাজের সর্বস্তরের নেতৃত্ব এমনকি মূল শাসকগণও আলেম হতেন বেশির ভাগ ক্ষেত্রে। সাহাবা যুগের পর যেসব শাসক বিখ্যাত হয়েছিলেন, তারা সবাই আলেম ছিলেন। উদাহরণস্বরূপ- উমাইয়া খলিফা আবদুল মালেক ইবনে মারওয়ান (৬৪৬-৭০৫) ও ওমর ইবনে আবদুল আজিজ রহ: (৬৮২-৭২০), আব্বাসীয় খলিফা মনসুর (৭১৪-৭৭৫), হারুন-আর-রশিদ (৭৬৩-৮০৯) ও আল মামুন (৭৮৬-৮৩৩), কর্ডোভা বা স্পেনের খলিফা তৃতীয় আবদুর রহমান (৯১২-৯৬১), আফ্রিকার আল মুহাহদুন খলিফা আবদুল মোমেন (১০৯৪-১১৬৩), গজনির সুলতান মাহমুদ (৯৭১-১০৩০), সেলজুক সুলতান আলপ আরসালান (১০২৯-১০৭২), সেলজুক শাসক (প্রধান উজির) আবু আলী হাসান নিজামুল মুলক (১০১৮-১০৯২), আলেপ্পোর সুলতান নুরুদ্দিন জঙ্গি (১১১৮-১১৭৪) ও ক্রুসেড বিজয়ী সুলতান সালাহউদ্দিন আইয়ুবি (১১৩৭-১১৯৩), অটোমান সুলতান মুহাম্মদ আল ফাতিহ (১৪৩২-১৪৮১) ও সুলতান সোলেমান কানুনি (১৪১৯-১৫৬৬), ইরানের শাহ আব্বাস (১৫৬১-১৬২৯), মোগল সম্রাট আওরঙ্গজেব (১৬১৮-১৭০৭), সকোতো খলিফা উসমান ডিন ফডিও (১১৫৪-১৮১৭) প্রমুখ সবাই আলেম ছিলেন। এক কথায়, শিক্ষিত লোক মাত্রই আলেম হতেন। কেউ উচ্চপর্যায়ের আবার কেউ বা নিম্নপর্যায়ের আলেম। মুসলমান সমাজে আলেম ছাড়া কোনো শিক্ষিত লোক হতো না, হওয়া সম্ভবও ছিল না। কারণ গোটা শিক্ষাব্যবস্থার ভিত্তি ছিল ইসলাম। একজন ভাষা, সাহিত্য, বিজ্ঞান যাই পড়–ক না কেন, প্রথমে তাকে ইসলামি জ্ঞানার্জন করতে হতো। ইসলামি মূল্যবোধের ভিত্তিতে তাকে যাবতীয় জ্ঞান অর্জন করতে হতো। সে শিক্ষাব্যবস্থায় দ্বীনি শিক্ষা ও জাগতিক শিক্ষা উভয়ের সমন্বয় ঘটেছিল। সমন্বিত শিক্ষাব্যবস্থাই ছিল মুসলমানদের স্বর্ণ যুগের শিক্ষাব্যবস্থা।

পরবর্তী সময়ে মুসলিম বিশ্ব উপনিবেশবাদী যড়যন্ত্র ও আগ্রাসনের শিকার হয়। আলেম ও তাদের অনুসারীগণ এসব ষড়যন্ত্র ও আগ্রাসন মোকাবেলায় প্রাণান্তকর প্রয়াস চালান। কিন্তু অসংখ্য আলেম ও তাদের অনুসারীদের অত্মদান সত্ত্বেও ঔপনিবেশিক শক্তির আগ্রাসনকে প্রতিরোধ করা যায়নি। ফলে উনিশ শতকের মধ্যেই মুসলিম জাহানের বেশির ভাগ অঞ্চল ঔপনিবেশিক শক্তির দখলে চলে যায়। পশ্চিমা ঔপনিবেশিক শক্তি তখন মুসলিম বিশ্বের শিক্ষা, সংস্কৃতি ও সমাজকে ইসলামবিহীন করার কর্মসূচি গ্রহণ করে। তাদের পলিসির কারণেই দ্বীন ও দুনিয়া সম্পর্কহীনভাবে পৃথক হয়ে যায়, পৃথক হয়ে যায় দ্বীনি শিক্ষা ও জাগতিক শিক্ষা। ফলে জাগতিক শিক্ষায় শিক্ষিত লোকেরা জাগতিক প্রতিযোগিতায় এগিয়ে যায়, আর দ্বীনি শিক্ষায় শিক্ষিত লোকেরা জাগতিক প্রতিযোগিতায় পেছনে পড়ে সমাজের প্রান্তিক অবস্থানে চলে যায়। তা ছাড়া উপনিবেশবাদীরা ইসলামের ধারক-বাহক উলামায়ে কেরামের প্রভাব ও ভূমিকাকে দুর্বল করার জন্য নানাভাবে চক্রান্ত চালায়। তখনকার পরিস্থিতিতে উলামায়ে কেরাম মুসলমানদের দ্বীন ও সংস্কৃতিকে বাঁচানোর জন্য আত্মরক্ষামূলক ব্যবস্থা অবলম্বন করতে বাধ্য হন। ক্রমান্বয়ে আলেমগণ বিচার বিভাগ, প্রশাসনিক বিভাগ, রাষ্ট্রীয় শিক্ষা বিভাগ এবং বুদ্ধিবৃত্তিক কার্যক্রম থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন। তাদের কার্যক্রম প্রধানত মসজিদ-মাদরাসার চৌহদ্দিতে আবদ্ধ হয়ে পড়ে। সেই সাথে পীর-মুরিদি ও খানকা-কেন্দ্রিক কিছু তৎপরতা এবং ওয়াজ মাহফিল ও তাবলিগি তৎপরতার মাধ্যমে সাধারণ জনগণের মধ্যে ইসলামের শিক্ষা ও সংস্কৃতির প্রসারের চেষ্টা অব্যাহত থাকে। ঔপনিবেশিক শক্তি বিদায় হওয়ার পরও এসব প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। অন্য দিকে মুসলিম দেশের শাসকগণ ঔপনিবেশিক যুগের শাসনব্যবস্থা ও শিক্ষা-সংস্কৃতি চালু রাখে। ফলে অবস্থার তেমন কোনো উন্নতি ঘটেনি, বরং অনেক দেশের পরিস্থিতিই ঔপনিবেশিক যুগের চেয়েও খারাপ হয়ে যায়। এ অবস্থায় আলেমসমাজের আত্মরক্ষামূলক ভূমিকা পরিবর্তন করে দেশ, জাতি ও সমাজের কল্যাণের জন্য কার্যকর ইতিবাচক ভূমিকা পালনের প্রশ্নটি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। সমাজ ও রাষ্ট্রকে আবার ইসলামের আলোকে পুনর্গঠনের প্রয়াস, সমাজের সর্বস্তরে আলেমগণের কার্যকর নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ আজ অপরিহার্য বলে বিবেচিত হচ্ছে। এ ক্ষেতে নবীন আলেমসমাজকে সর্বাধিক ভূমিকা পালনে এগিয়ে আসতে হবে। নবীন আলেমরাই পারেন আজকের বিপদসঙ্কুুল পরিবেশ ও যাবতীয় ষড়যন্ত্র-চক্রান্তকে মোকাবেলা করে ইসলামের পতাকাকে ঊর্ধ্বে তুলে ধরতে। তারাই পারেন আজকের বৈরী পরিবেশে জনগণকে নেতৃত্ব প্রদান করতে। নবীনেরাই ঝুঁকি নিয়ে কাজ করতে সক্ষম। শুধু আজকের যুগে নয়, সর্বযুগেই নবীনেরা সর্বাধিক কার্যকর ভূমিকা পালন করেছেন। আজকের যুগেও তারাই পারেন অবস্থার পরিবর্তন করতে। আজকের দিনে সমাজের সর্বস্তরের নেতৃত্বে যারা সত্যপন্থী ও দুর্নীতিমুক্ত, তাদের এগিয়ে আসতে হবে। সমাজের নেতৃত্ব থেকে দুর্নীতিবাজ, ধান্দাবাজ, জালেম ও ইসলামবিরোধী, দেশবিরোধী লোকদের সরিয়ে দিয়ে ইসলামের অনুসারীদের নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে হবে।

মনে রাখা প্রয়োজন, ইসলামবিরোধী ঔপনিবেশিক শক্তির ষড়যন্ত্রে ও কারণেই আলেমসমাজ তার নেতৃত্বের অবস্থান থেকে দূরে সরে যেতে বাধ্য হন। কালক্রমে তারা প্রান্তিক অবস্থানে চলে যান। তারা বর্তমানে সমাজের সীমিত ধর্মীয় চাহিদাই পূরণ করছেন। বৃহত্তর সমাজ ও রাষ্ট্রের নীতি-পলিসি ও পরিচালনায় তাদের কোনো ভূমিকা নেই। এখনো উলামাসমাজের আত্মরক্ষামূলক অবস্থানের তেমন কোনো পরিবর্তন হয়নি। অথচ নবী সা:-এর উত্তরাধিকারের দায়িত্ব পালন করতে হলে আলেমগণকে সমাজে ইসলামি জ্ঞানের ব্যাপক প্রসার এবং ইসলামের আলোকে সমাজ ও রাষ্ট্র গঠনের কাজে এগিয়ে আসতে হবে। জনগণের কল্যাণ ও উন্নয়নের লক্ষ্যে সমাজ থেকে জালেম-ফাসেক শ্রেণীর নেতৃত্বের অবসান ঘটিয়ে আলেমসমাজ ও ইসলামি চেতনাসম্পন্ন সৎ লোকদের এগিয়ে আসতে হবে। আজকের নিপীড়িত সাধারণ জনগণ তাদের অধিকার ও নিরাপত্তা এবং কল্যাণ ও উন্নয়নের স্বার্থে আলেমসমাজের কাছে সেই কাক্সিত ভূমিকা প্রত্যাশা করেন। জাতি সেদিনের প্রত্যাশায়, যেদিন আলেমগণ সমাজের হাল ধরবেন, সমাজের সর্বস্তরের নেতৃত্ব থেকে দুর্নীতিবাজ, ফাসেক-ফাজেরকে উৎখাত করে সৎ মুত্তাকি লোকদের নেতৃত্ব কায়েম করবেন এবং জনগণকে কল্যাণ ও উন্নয়ন তথা দুনিয়া ও আখেরাতে মুক্তির পথ দেখাবেন। তাই নবীন আলেমদের জনগণের শুধু ধর্মীয় নেতৃত্ব নয়, বরং সামাজিক ও রাজনৈতিক নেতৃত্ব দেয়ার জন্য এগিয়ে আসতে হবে। এটিই সময়ের দাবি।

আজ আলেমসমাজ ইসলামের কোনো মৌলিক বিষয় আক্রান্ত হলে বা ইসলামের অবমাননা করা হলে তা প্রতিরোধে ঝাঁপিয়ে পড়েন। ইসলামবিদ্বেষী মহলের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর জন্য জনগণকে আহ্বান জানান। জনগণও আলেমগণের আহ্বানে সাড়া দিয়ে মাঠে নামে। আলেমসমাজ ও জনগণের প্রতিরোধের মুখে বিরোধী মহল প্রায়ই পেছনে হঠতে বাধ্য হয়। বাংলাদেশের ইতিহাসে দাউদ হায়দার, তসলিমা নাসরিন, নাস্তিক ব্লগার ও মুরতাদবিরোধী আন্দোলনসহ এজাতীয় সব আন্দোলনেই এটা প্রমাণিত হয়েছে। তবে এসব আন্দোলন মূলত তাৎক্ষণিক দাবি পূরণ করার জন্য, সমাজ ও রাষ্ট্রের কাঠামোগত বা নেতৃত্ব পরিবর্তনের জন্য নয়। তাই দেখা যায় কিছু দিন পরই আবার ইসলামবিদ্বেষী প্রতিক্রিয়াশীল চক্র মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। তখন আবার আলেমসমাজকে নতুন করে আন্দোলনের ডাক দিতে হয়। বিগত বহু দশক ধরে এটাই চলে আসছে। এ চক্রাকার পরিস্থিতির পরিবর্তন প্রয়োজন। আর এ জন্য সমাজে ধর্মীয় নেতৃত্ব দানের পাশাপাশি সামাজিক ও রাজনৈতিক নেতৃত্ব দেয়ার জন্য আলেমদের এগিয়ে আসতে হবে। আজকে সময় হয়েছে মুসলিম বিশ্বের রাজনৈতিক-সাংস্কৃতিক-অর্থনৈতিক নেতৃত্বে আলেমসমাজ ও ধার্মিকদের এগিয়ে যাওয়ার। সুদূর অতীতে হজরত ইউসুফ আ: যেমনভাবে দুর্ভিক্ষপীড়িত, দুর্দশাগ্রস্ত, বিপর্যস্ত মিসরের জনগণকে বাঁচানোর জন্য দায়িত্বভার কাঁধে তুলে নিয়েছিলেন, ঠিক তেমনিভাবে আজকেও নবীগণের উত্তরাধিকার প্রকৃত ও যোগ্য আলেমগণকে জনগণের নেতৃত্ব দানের দায়িত্ব কাঁধে নিতে হবে। যারা আলেম নন, যারা সত্যপন্থী নন- যারা দুর্নীতিপরায়ণ, ইসলামবিদ্বেষী, জালেম-শোষক তাদের হাতে সমাজ ও রাষ্ট্রের সব দায়িত্ব ছেড়ে দিয়ে শুধু সীমিত ধর্মীয় দায়িত্ব নিয়ে সন্তুষ্ট থাকা আজ কাক্সিত নয়। সমাজ আদর্শিক ও জাগতিক ব্যবস্থাপনার দিক থেকে দিনদিন মন্দের দিকে ধাবিত হচ্ছে। এ অবস্থায় আলেমসমাজের দায়িত্ব হচ্ছে গোটা সমাজকে সত্যের দিকে, কল্যাণের দিকে, সুবিচারের দিকে ফেরাতে এগিয়ে আসা। আর সমাজ ও রাষ্ট্রের নেতৃত্ব হাতে না নিলে সমাজে সত্য, ন্যায়, সুবিচার, কল্যাণ প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব নয়। কাজেই সাধারণ ধর্মীয় শিক্ষার প্রসার ও জনগণকে সচেতন করার পাশাপাশি সামাজিক রাজনৈতিক নেতৃত্ব দানের বিষয়টিকে অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে গ্রহণ করতে হবে। এর জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে। সামাজিক, রাজনৈতিক নেতৃত্ব দানের বিষয়কে এড়িয়ে যাওয়া নয়; বরং তাকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিতে হবে। তাহলেই সমাজ ও রাজনীতিতে গুণগত পরিবর্তন আসার সম্ভাবনা দেখা দেবে।

এ প্রসঙ্গে এটাও মনে রাখা প্রয়োজন যে, সামাজিক ও রাজনৈতিক নেতৃত্বের দায়িত্বটি সব আলেমই করবেন, এমনটি নয়। আলেমদের মধ্য থেকে যে অংশটি এ কাজের উপযোগী ও যোগ্যতার অধিকারী, তারাই এ কাজে এগিয়ে আসবেন। বাকিরা নিজ নিজ অবস্থান থেকে সহযোগিতা করে যাবেন। মনে রাখা প্রয়োজন, নীতিগতভাবে আলেমগণই সমাজ ও রাষ্ট্রের নেতৃত্ব দেবেন; কিন্তু ব্যক্তিগতভাবে হয়তো সবাই এ ভূমিকা পালন করতে পারবেন না। যারা পারবেন না, তাদের কমপক্ষে ইসলাম ও আলেমদের মর্যাদার খাতিরে তাদের অবস্থান আলেমদের সংগ্রামের পক্ষেই থাকতে হবে; ফাসেক-ফাজেরদের পক্ষে নয়।
আমরা মনে করি, আলেমসমাজ যদি সমষ্টিগতভাবে আজ জেগে ওঠে, তাহলে জনগণকে সংগঠিত ও সঞ্চালিত করা সম্ভব। তাই সর্বাগ্রে প্রয়োজন আলেমসমাজের মধ্যে জাগরণ। জনগণ ও জাতিকে নেতৃত্ব দেয়ার দৃঢ় অঙ্গীকার নিয়ে এগিয়ে যাওয়া। অন্যায়ের মোকাবেলায় রুখে দাঁড়ানোর মতো দৃঢ় মানসিকতা ও সাহসিকতা। সাথে নিজেদের সঙ্ঘবদ্ধ করে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার আলোকে সংগ্রাম করে যাওয়া। আজ জাতি সেদিকেই তাকিয়ে আছে।

About Abul Kalam Azad

mm

এটাও পড়তে পারেন

কওমি মাদরাসা কল্যাণ ট্রাস্ট, বাংলাদেশ

খতিব তাজুল ইসলাম ট্রাস্টের প্রয়োজনীয়তাঃ কওমি অংগন একটি স্বীকৃত ও তৃণমূল প্লাটফর্ম। দেশ ও জাতির ...