বৃহস্পতিবার, ২রা মে, ২০২৪ ইং
কমাশিসা পরিবারবিজ্ঞাপন কর্নারযোগাযোগ । সময়ঃ দুপুর ১২:৩১
Home / অনুসন্ধান / নয় দিনে রোহিঙ্গাদের ৮২০ বাড়িতে আগুন ; এইচআরডব্লিউ প্রতিবেদন

নয় দিনে রোহিঙ্গাদের ৮২০ বাড়িতে আগুন ; এইচআরডব্লিউ প্রতিবেদন

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় রোহিঙ্গা মুসলমানদের বাড়িঘরে নির্বিচারে অগ্নিসংযোগ করা হচ্ছে। গত কয়েক দিনে প্রায় এক হাজার বসতবাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ)।
স্যাটেলাইটে ধারণ করা দৃশ্য বিশ্লেষণ করে এইচআরডব্লিউ জানাচ্ছে, ১০ থেকে ১৮ নভেম্বরের মধ্যে রাখাইন রাজ্যের মংডুর পাঁচটি গ্রামে কমপক্ষে ৮২০টি বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। গতকাল সোমবার তাদের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশ করেছে মানবাধিকার সংস্থাটি। যদিও মিয়ানমার সরকার এ কথা অস্বীকার করেছে।
এর আগে আরও ৪৩০টি বাড়িঘরে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়েছিল। বাংলাদেশ সীমান্তের কাছাকাছি রাখাইন রাজ্যে গত অক্টোবর থেকে দেশটির সেনাবাহিনী অভিযান চালাচ্ছে। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে স্থানীয় লোকজন। রোহিঙ্গাদের বহু গ্রামে হামলা, লুণ্ঠন, নির্যাতন করা হচ্ছে। প্রাণভয়ে বাংলাদেশ সীমান্তের দিকে পালিয়ে আসছে রোহিঙ্গারা।
মিয়ানমারের সরকারি বাহিনীর অভিযানে রাখাইনে বসবাসরত রোহিঙ্গা মুসলমানদের নির্বিচারে হত্যা এবং নারী ও কিশোরীদের ধর্ষণ, তাঁদের বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের ব্যাপক অভিযোগও আছে। জাতিসংঘ বলছে, সহিংসতার ঘটনায় এ পর্যন্ত সেখানকার ৩০ হাজার মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়েছে।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচ ১০, ১৭ ও ১৮ নভেম্বরের স্যাটেলাইটে ধারণ করা দৃশ্য বিশ্লেষণ করে বলেছে, অগ্নিসংযোগে বিধ্বস্ত হওয়া বাড়িঘরের সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে। মংডুতে গাছের ঘনত্ব বেশি হওয়ায় আক্রান্ত অনেক বাড়ি শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি।
এইচআরডব্লিউর এশিয়াবিষয়ক পরিচালক ব্র্যাড অ্যাডামস বলেছেন, স্যাটেলাইটের নতুন দৃশ্যগুলো প্রমাণ করে দেশটির সরকার যতটুকু স্বীকার করেছে, এর থেকেও বেশি এলাকায় সহিংসতা ছড়িয়ে পড়েছে। রোহিঙ্গাদের পাঁচটি গ্রামে অগ্নিসংযোগের ঘটনা গভীর উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে। মিয়ানমার সরকারের উচিত এই ঘটনাগুলো তদন্ত করে দেখা এবং দায়ী লোকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া।
গত ৯ অক্টোবর বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী চৌকিতে এক হামলায় নয়জন পুলিশ সদস্য নিহত হন। এরপর থেকে সাঁড়াশি অভিযানে নেমেছে দেশটির সেনাবাহিনী। এর পাশাপাশি অমুসলিম বাসিন্দাদের অস্ত্র দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে পুলিশ। ফলে পরিস্থিতি ব্যাপক ঘোলাটে হয়ে পড়েছে। নির্বিচারে আক্রান্ত হচ্ছেন রোহিঙ্গা মুসলমানরা।
এইচআরডব্লিউ ৪৩০টি রোহিঙ্গা বাড়িঘর পুড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ করে ১৩ নভেম্বর। এরপর ১৫ নভেম্বর মিয়ানমার সরকার সংবাদ সম্মেলন করে অগ্নিসংযোগের কথা স্বীকার করে। বলা হয়, সেনাবাহিনী হেলিকপ্টার থেকে বিভিন্ন গ্রামে গুলি চালিয়েছে। তবে দাবি করে, প্রকৃত সংখ্যা আরও কম।
দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, এখন পর্যন্ত অভিযানে ৭০ জন নিহত হয়েছেন এবং চার শতাধিক নাগরিককে আটক করা হয়েছে। তবে মানবাধিকার সংগঠনগুলো বলছে, নিহত লোকের সংখ্যা আরও বেশি। রাখাইন রাজ্যে সেনাবাহিনীর অভিযান শুরুর পর থেকেই সেখান থেকে নাফ নদী পার হয়ে বাংলাদেশের টেকনাফে ঢোকার চেষ্টা করেন অনেকে।
২০১২ সালে সংখ্যালঘু মুসলিম রোহিঙ্গাদের ওপর রাখাইন বৌদ্ধের হামলা ও সংঘাতের ঘটনার পর ১৩ নভেম্বরের হতাহতের ঘটনাই সবচেয়ে বড়।
জাতিসংঘ, যুক্তরাষ্ট্রসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এই হামলার সুষ্ঠু বিচার দাবি করছে এবং আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের আক্রান্ত এলাকায় গিয়ে তদন্ত করতে দেওয়ার জন্য মিয়ানমার সরকারের কাছে অনুরোধ করেছে।
রাখাইন রাজ্যে হঠাৎ করে শুরু হওয়া এই সহিংসতা অং সান সু চির নেতৃত্বাধীন গণতন্ত্রপন্থী সরকারের জন্য বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ হয়ে দেখা দিয়েছে। ক্ষমতা নেওয়ার কয়েক মাসের মধ্যেই এই অস্থিরতা ও সহিসংতার মুখে পড়তে হচ্ছে সু চির সরকারকে। কিন্তু রোহিঙ্গা ও অন্যান্য মুসলিম সংখ্যালঘুদের ওপর নিপীড়নের বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হওয়ায় আন্তর্জাতিকভাবে সমালোচনার মুখে পড়েছেন সু চি ও তাঁর সরকার।

Rohingya migrants sit on a boat drifting in Thai waters off the southern island of Koh Lipe in the Andaman sea on May 14, 2015.  The boat crammed with scores of Rohingya migrants -- including many young children -- was found drifting in Thai waters on May 14, according to an AFP reporter at the scene, with passengers saying several people had died over the last few days.     AFP PHOTO / Christophe ARCHAMBAULT        (Photo credit should read CHRISTOPHE ARCHAMBAULT/AFP/Getty Images)

এইচআরডব্লিউপ্রতিবেদন

নয় দিনে রোহিঙ্গাদের ৮২০ বাড়িতে আগুন

বিবিসি : মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় রোহিঙ্গা মুসলমানদের বাড়িঘরে নির্বিচারে অগ্নিসংযোগ করা হচ্ছেগত কয়েক দিনে প্রায় এক হাজার বসতবাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ)

স্যাটেলাইটে ধারণ করা দৃশ্য বিশ্লেষণ করে এইচআরডব্লিউ জানাচ্ছে, ১০ থেকে ১৮ নভেম্বরের মধ্যে রাখাইন রাজ্যের মংডুর পাঁচটি গ্রামে কমপক্ষে ৮২০টি বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছেগতকাল সোমবার তাদের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশ করেছে মানবাধিকার সংস্থাটিযদিও মিয়ানমার সরকার এ কথা অস্বীকার করেছে

এর আগে আরও ৪৩০টি বাড়িঘরে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়েছিলবাংলাদেশ সীমান্তের কাছাকাছি রাখাইন রাজ্যে গত অক্টোবর থেকে দেশটির সেনাবাহিনী অভিযান চালাচ্ছেএর সঙ্গে যোগ হয়েছে স্থানীয় লোকজনরোহিঙ্গাদের বহু গ্রামে হামলা, লুণ্ঠন, নির্যাতন করা হচ্ছেপ্রাণভয়ে বাংলাদেশ সীমান্তের দিকে পালিয়ে আসছে রোহিঙ্গারা

মিয়ানমারের সরকারি বাহিনীর অভিযানে রাখাইনে বসবাসরত রোহিঙ্গা মুসলমানদের নির্বিচারে হত্যা এবং নারী ও কিশোরীদের ধর্ষণ, তাঁদের বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের ব্যাপক অভিযোগও আছেজাতিসংঘ বলছে, সহিংসতার ঘটনায় এ পর্যন্ত সেখানকার ৩০ হাজার মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়েছে

হিউম্যান রাইটস ওয়াচ ১০, ১৭ ও ১৮ নভেম্বরের স্যাটেলাইটে ধারণ করা দৃশ্য বিশ্লেষণ করে বলেছে, অগ্নিসংযোগে বিধ্বস্ত হওয়া বাড়িঘরের সংখ্যা আরও বেশি হতে পারেমংডুতে গাছের ঘনত্ব বেশি হওয়ায় আক্রান্ত অনেক বাড়ি শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি

এইচআরডব্লিউর এশিয়াবিষয়ক পরিচালক ব্র্যাড অ্যাডামস বলেছেন, স্যাটেলাইটের নতুন দৃশ্যগুলো প্রমাণ করে দেশটির সরকার যতটুকু স্বীকার করেছে, এর থেকেও বেশি এলাকায় সহিংসতা ছড়িয়ে পড়েছেরোহিঙ্গাদের পাঁচটি গ্রামে অগ্নিসংযোগের ঘটনা গভীর উদ্বেগের সৃষ্টি করেছেমিয়ানমার সরকারের উচিত এই ঘটনাগুলো তদন্ত করে দেখা এবং দায়ী লোকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া

গত ৯ অক্টোবর বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী চৌকিতে এক হামলায় নয়জন পুলিশ সদস্য নিহত হনএরপর থেকে সাঁড়াশি অভিযানে নেমেছে দেশটির সেনাবাহিনীএর পাশাপাশি অমুসলিম বাসিন্দাদের অস্ত্র দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে পুলিশফলে পরিস্থিতি ব্যাপক ঘোলাটে হয়ে পড়েছেনির্বিচারে আক্রান্ত হচ্ছেন রোহিঙ্গা মুসলমানরা

এইচআরডব্লিউ ৪৩০টি রোহিঙ্গা বাড়িঘর পুড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ করে ১৩ নভেম্বরএরপর ১৫ নভেম্বর মিয়ানমার সরকার সংবাদ সম্মেলন করে অগ্নিসংযোগের কথা স্বীকার করেবলা হয়, সেনাবাহিনী হেলিকপ্টার থেকে বিভিন্ন গ্রামে গুলি চালিয়েছেতবে দাবি করে, প্রকৃত সংখ্যা আরও কম

দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, এখন পর্যন্ত অভিযানে ৭০ জন নিহত হয়েছেন এবং চার শতাধিক নাগরিককে আটক করা হয়েছেতবে মানবাধিকার সংগঠনগুলো বলছে, নিহত লোকের সংখ্যা আরও বেশিরাখাইন রাজ্যে সেনাবাহিনীর অভিযান শুরুর পর থেকেই সেখান থেকে নাফ নদী পার হয়ে বাংলাদেশের টেকনাফে ঢোকার চেষ্টা করেন অনেকে

২০১২ সালে সংখ্যালঘু মুসলিম রোহিঙ্গাদের ওপর রাখাইন বৌদ্ধের হামলা ও সংঘাতের ঘটনার পর ১৩ নভেম্বরের হতাহতের ঘটনাই সবচেয়ে বড়

জাতিসংঘ, যুক্তরাষ্ট্রসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এই হামলার সুষ্ঠু বিচার দাবি করছে এবং আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের আক্রান্ত এলাকায় গিয়ে তদন্ত করতে দেওয়ার জন্য মিয়ানমার সরকারের কাছে অনুরোধ করেছে

রাখাইন রাজ্যে হঠাৎ করে শুরু হওয়া এই সহিংসতা অং সান সু চির নেতৃত্বাধীন গণতন্ত্রপন্থী সরকারের জন্য বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ হয়ে দেখা দিয়েছেক্ষমতা নেওয়ার কয়েক মাসের মধ্যেই এই অস্থিরতা ও সহিসংতার মুখে পড়তে হচ্ছে সু চির সরকারকেকিন্তু রোহিঙ্গা ও অন্যান্য মুসলিম সংখ্যালঘুদের ওপর নিপীড়নের বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হওয়ায় আন্তর্জাতিকভাবে সমালোচনার মুখে পড়েছেন সু চি ও তাঁর সরকার

About Abul Kalam Azad

mm

এটাও পড়তে পারেন

কওমি মাদরাসা কল্যাণ ট্রাস্ট, বাংলাদেশ

খতিব তাজুল ইসলাম ট্রাস্টের প্রয়োজনীয়তাঃ কওমি অংগন একটি স্বীকৃত ও তৃণমূল প্লাটফর্ম। দেশ ও জাতির ...