মাসুদ মজুমদার ::
কওমি মাদরাসার সাথে সরকারি সনদের কোনো সম্পর্ক ছিল না। বরং ঔপনিবেশিক ইংরেজ সরকারের কর্তৃত্ব চ্যালেঞ্জ করেই এর যাত্রা শুরু। তাই সনদ বিতর্কও অনেক পুরনো নয়। বিতর্ক সৃষ্টির সূচনায় কিছু কওমি আলেমের ভূমিকা অস্বীকার করা যাবে না। আবার সরকারও দেশী-বিদেশী চাপে কওমি মাদরাসাকে নিয়ন্ত্রণ ও সংস্কারের একটি অসাধু ইচ্ছা পোষণ করে। সরকারের উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে আলেমদেরই একটি গণবিচ্ছিন্ন খণ্ডিত অংশ সমর্থন জোগায়।
কওমি মাদরাসাগুলো স্থানীয় জনগণের দান-অনুদানে পরিচালিত হয়। এই শিক্ষাব্যবস্থা মূলত দ্বীনি শিক্ষাকেই প্রাধান্য দিয়ে শুরু হয়েছে। এটা ছিল একটি পরিকল্পিত শিক্ষা আন্দোলনের ফল। প্রচলিত রাজনীতির সাথে এর সংশ্রব একেবারে কম বা গৌণ। প্রতিষ্ঠালগ্নে এর উদ্যোক্তা প্রাণপুরুষেরা চেয়েছিলেন সাম্রাজ্যবাদী ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে শিক্ষা আন্দোলনের মাধ্যমে এমন একটি ধারা সৃষ্টি করবেন, এখান থেকে ফারেগ বা শিক্ষা শেষে বের হওয়ার পর শিক্ষার্থীরা হবেন ঈমানি চেতনায় সমুজ্জ্বল এবং আজাদির মূর্ত প্রতীক ও দ্বীনি এলেম চর্চার পথিকৃৎ।
ব্রিটিশরা ক্ষমতা কেড়ে নিয়েছিল মুসলিম শাসকদের হাত থেকে। মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্য থেকে আলেমসমাজই প্রথমে এর বিরুদ্ধে সোচ্চার হন। স্মর্তব্য আলেমসমাজ মুঘল শাসনের বিচ্যুতি সম্পর্কে সজাগ ছিলেন এবং সময়মতো জোর প্রতিবাদও করেছেন। শাসকদের কারণে অনেক দুর্গতি নেমে এলেও বিজ্ঞ আলেমসমাজ তাৎক্ষণিকভাবে ব্রিটিশ আধিপত্য ও দুঃশাসনকেই টার্গেট বানিয়েছিলেন। তাদের বিরুদ্ধে সশস্ত্র সংগ্রাম করেছেন; কিন্তু সফল হতে না পেরে কৌশল পাল্টানোর কথা চিন্তা করেছেন। তাদের সেই দূরদর্শী চিন্তার ফসল ছিল দারুল উলুম দেওবন্দকেন্দ্রিক শিক্ষা আন্দোলন। এটা কোনো সাধারণ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ ছিল না। বরং এটা ছিল সামগ্রিক দ্বীনি মর্যাদা অক্ষুণ্ণ রাখা এবং ব্রিটিশ শাসন থেকে মুক্তির আজাদি আন্দোলনের নতুন মাত্রায় গতি সৃষ্টির একটি মহতী প্রচেষ্টা। এখন যেভাবে কওমি ধারাকে শিক্ষার মূল ধারা থেকে আলাদা করে ভাবা হয়Ñ বাস্তবে এটা তা ছিল না। একসময় এটাই ছিল মূল ধারা। টোল ও মাদরাসাকে আলাদা করে সাধারণ মুসলিম ও হিন্দু সেন্টিমেন্টকে ইংরেজরা সহানুভূতির চোখে দেখতে চায়নি। বরং তারা চেয়েছে অনুগত ‘গোলাম’ সৃষ্টি করতে। তারা প্রজাদের ইসলামের পূর্ণাঙ্গ ও মূল ধারা থেকে ঠেলে বাইরে রাখার উদ্যোগ নিয়েছিল। লর্ড ম্যাকলে যে শিক্ষা নীতি ও ব্যবস্থা চাপিয়ে দিলেন তাতেই স্পষ্ট ছিল, সীমিত ধর্মকর্ম নিয়ে যারা থাকবেন-তারা কেরানি হবেন না। প্রশাসক হবেন না। শিক্ষার সামগ্রিক ব্যবস্থাকে দ্বিখণ্ডিত করে বলা হলো একটা হবে দ্বীনি বা ধর্ম শিক্ষা, অন্যটি হবে ‘আধুনিক শিক্ষা’। শিক্ষার উৎসে এরূপ কোনো বিভাজন মুসলমানদের কাছে গ্রহণযোগ্য ছিল না। আলেম বললেই ভাবা হতো, তিনি গ্রহণযোগ্য পারদর্শী মানুষ।
ভারতীয় উপমহাদেশে এখন দরসে নিজামি নামে যে ধারা প্রচলিত রয়েছে, সেটা ছিল ১৮৬৬ সালের একটি মহৎ উদ্যোগ। এর প্রায় ১০ বছর আগেই ঐতিহাসিক সিপাহি বিপ্লবের পরবর্তী প্রেক্ষাপটে এ ধরনের একটি ভাবনার ভ্রুণ জন্ম নিয়েছিল ১৮৫৭ সালে। মাওলানা ইমদাদউল্লাহ মোহাজিরে মক্কি ছিলেন একজন আধ্যাত্মিক ও মুজাহিদ নেতা। তার অনুসারী মোহাম্মদ ইয়াকুব নানুতুভি ও রশিদ আহমদ গাঙ্গুহিসহ অন্যরা থানা ভবন নামের জায়গায় একত্র হয়ে ইংরেজ শাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ এবং আজাদির সংগ্রাম সফল না হওয়া পর্যন্ত সংগ্রামের অঙ্গীকার করেছিলেন। এই রাজনৈতিক অঙ্গীকারের একটি অংশ হিসেবেই ১৮৬৬ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের সাহরানপুর জেলার দেওবন্দে মাদরাসা প্রতিষ্ঠিত হয়। এর প্রাণপুরুষ ছিলেন- সব মহলে সম্মানিত মোহাম্মদ কাসিম নানুতুভি, রশিদ আহমদ গাঙ্গুহি ও আবিদ হোসাইন- তারা প্রত্যেকেই ছিলেন ইসলামি ব্যক্তিত্ব ও বিশেষজ্ঞ এবং আলেমে দ্বীন। নানুতুভির ছাত্র মাওলানা মাহমুদুল হাসান ছিলেন আজাদি আন্দোলনের একজন সিপাহসালার। তিনি ‘রেশমি রুমাল আন্দোলন’ করে গ্রেফতার হয়েছিলেন। সুদূর মাল্টায় নির্বাসিত ছিলেন। আমরা ইংরেজ আমলের রাউলাট কমিটি সম্পর্কে জানি, রেশমি রুমাল আন্দোলনের খবর রাখি না। এই শিক্ষা উদ্যোগে উর্দু ছিল সাধারণ পাঠ্য, আরবির প্রাধান্য ছিল- কুরআন-সুন্নাহর কারণেই। ফার্সির সহপাঠ ছিল ইসলামি জ্ঞানের উৎস ও দীর্ঘ দিনের রাষ্ট্রভাষার সুবাদে।
এটা মানতেই হবে ব্রিটিশদের প্রণীত শিক্ষানীতি অনুসরণ করে যারা পরে প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন এবং আজাদি আন্দোলনেও নিয়মতান্ত্রিক ধারার নেতৃত্ব দিয়েছেন তারা দ্বীনি শিক্ষায় অনেক পেছনে ছিলেন। আবার যেসব আলেম ও ইসলামি ব্যক্তিত্ব আজাদি আন্দোলনের ভ্রুণ সৃষ্টি করেছেন, তারা ইংরেজ প্রবর্তিত কথিত আধুনিক শিক্ষা ধারায় বাস্তব কারণেই পেছনে পড়ে গিয়েছিলেন। এ দু’টি ধারার মধ্যে কখনো আজাদি বা স্বাধীনতা ইস্যুতে সমন্বয় হয়েছে, কখনো হয়নি। যারা ভাবেন বা বলেন- দেওবন্দ ধারার সাথে একেবারেই রাজনীতির কোনো সংশ্রব নেই, তারা পুরো সত্য বলেন না। কারণ জমিয়তে ওলামায়ে হিন্দ যারা গঠন করেছিলেন, তারা কেউ দেওবন্দ ধারার বাইরে ছিলেন না। আবার উপমহাদেশের আজাদি ইস্যুতে একমত হলেও দ্বিজাতিতত্ত্ব ইস্যুতে মওলানা হোসাইন আহমদ মাদানীর মতের সাথে মাওলানা আশরাফ আলী থানভির মতের মিল ছিল না। মাওলানা জাফর আহমদ ওসমানী ও মাওলানা শিব্বির আহমদ ওসমানীসহ অনেকের মতের থানভি ধারার সাথে মিল ছিল। এ ধারাবিভক্তি কিছু বিব্রতকর রাজনৈতিক পরিস্থিতির জন্ম দিলেও দেওবন্দ শিক্ষাধারাকে কমই স্পর্শ করেছে। কারণ, দেওবন্দকেন্দ্রিক শিক্ষা আন্দোলনকে এর উদ্যোক্তা এবং সুহৃদ-পৃষ্ঠপোষকেরা আজাদি ছাড়া বাকি প্রশ্নে সম্পৃক্ত করতে চাননি। ইমাম আবু হানিফা রহ.-এর মাজহাব ও আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের আকিদাকেই তারা ঐক্যের ও প্রেরণার সূত্র বানিয়েছিলেন। এ ধারার ওপর প্রতিষ্ঠিত থাকার ব্যাপারে তারা এখনো দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। এই ইস্যুতে আলেমসমাজ ‘দরবারি ধারা’র সাথে সহাবস্থান ও সমঝোতা মেনে নিতে সম্মত; কিন্তু আকিদার প্রশ্নে ছাড় দিতে রাজি নন।
এখন কওমি শিক্ষার সনদের প্রশ্নটি গৌণ নয়। কারণ এই সময়ে এসে শুধু আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিতরা দেশ চালাবেন, আর আলেমসমাজ মাদরাসা-মক্তব ও মসজিদ নিয়ে থাকবেন- এটা অনেকেই মানতে চান না। এই মতের অনুসারীরা চান, শিক্ষানীতির মৌলিকত্ব ক্ষুণ্ণ না করে মূলধারার শিক্ষায় কিছু অংশ নিয়ে নিজেরা প্রতিযোগিতায় আসতে। তারা মনে করেন, কওমি আলেমরা মন-মননে আধুনিক। যোগ্যতায় কারো চেয়ে কম নন। মেধা তাদেরও রয়েছে। যারা কুরআন-সুন্নাহ চর্চায় পারদর্শিতা দেখাতে পারেন তারা বিজ্ঞানের নানা শাখায় অবদান রাখার মতো যোগ্যতা রাখেন। এর প্রমাণ ও দৃষ্টান্ত ইসলামের ইতিহাসজুড়ে রয়েছে। এই যুক্তি খণ্ডানো কঠিন। তাই এমন কোনো ব্যবস্থা থাকা সঙ্গতÑ যারা ইচ্ছে করবেন তারা যেন যেকোনো প্রতিযোগিতায় নিজ যোগ্যতা বলে অংশ নিতে পারেন। মাদরাসার আলিয়া নেছাব এখন আর ধর্মীয় শিক্ষার সনাতনী ধারায়ও নেই। শুরু থেকেই এটা ছিল ইংরেজ শাসকদের চাপানো মর্জিমতো একটা ব্যবস্থা। পরে সংস্কারের ছোঁয়া লেগে এটা যতটা আধুনিক হওয়ার দাবিদার, ততটাই দ্বীনি মৌলিকত্বহীন হয়ে পড়েছে। এটা এখন মিশ্র ধারা। একসময়ের ‘হাই মাদরাসা’ ধারণার সাথে এর মিলই এখন বেশি। তাই আলেমসমাজ শিক্ষাব্যবস্থার যে স্বায়ত্তশাসনে স্বকীয়তা রক্ষা করতে ভরসা পান, সেটাই করা উচিত। তাদের ডিগ্রিগুলোর একটা সমতার মান নির্ধারণ করে সমন্বয় করা হলে সমাধান সহজ। দেওবন্দপড়ুয়া অনেক আলেম কলকাতা আলিয়া মাদরাসা থেকে সনদ পাওয়ার মতো লেখাপড়া করে আলিয়া পরিচালনা করেছেন। তারা কেউ অখ্যাত নন এবং কম বুজুর্গ ছিলেন না। আলেমসমাজ কোনো অযৌক্তিক দাবি করেছেন বলে মনে করি না। তাদের দায়িত্ব তারা নিতে সক্ষম এর প্রমাণ তারা অনেক ক্ষেত্রে রেখেছেন। তাই তাদের নিয়ন্ত্রণের ইচ্ছা পরিত্যাগ করা সবার জন্যই কল্যাণকর। আলেমদের বিভক্ত করে ‘দরবারি’ তৈরি করলে সরকারই ক্ষতিগ্রস্ত হবে, একটি সঙ্ঘবদ্ধ সামাজিক শক্তিকে বিনা কারণে প্রতিপক্ষে ঠেলে দেয়া হবে। আলেমসমাজ অদৃশ্য কিন্তু প্রভাবক সেই সামাজিক শক্তি গণশিক্ষায় ব্যাপক অবদান রাখছেন; নীতি নৈতিকতার চাষ করছেন। ধর্মীয় শিক্ষার একটি মৌলিক ধারা সরব ও সজীব রেখেছেন তারা। এখানে আঘাত করলে যে সামাজিক অস্থিরতা ও অবক্ষয় দেখা দেবে- তার প্রভাব পড়বে রাজনীতিতেও। এর কোনো ইতিবাচক সুফল নেই। বর্তমান সরকার নিজেকে মাদরাসা শিক্ষার বান্ধব মনে করে না। বাস্তবেও সরকার ইসলামের মৌলিক ধারাকে অবজ্ঞা করে এবং ‘মৌলবাদ’ সৃষ্টির জন্য অহেতুক দোষারোপ করে থাকে। এটা স্পষ্টত, এক ধরনের ইসলামফোবিয়া এবং ধর্মীয় শিক্ষার প্রতি অজ্ঞতাপ্রসূত অ্যালার্জির ফসল। অভিযোগ উঠেছে, সাধারণ শিক্ষাব্যবস্থায় ধর্মকে নির্বাসনে পাঠানো হয়েছে। সিলেবাসে এমন সব কাণ্ডকীর্তি ঘটানো হয়েছে- যা একটা স্বাধীন ও ধার্মিক জাতির জন্য অসম্মানজনক। এটা ধর্মীয় শিক্ষার শুধু শেকড় কাটা নয়; নীতি-নৈতিকতার বন্ধন মুক্ত হয়ে দেউলিয়া হয়ে যাওয়া কিংবা বস্তুবাদের উদরে হজম হয়ে যাওয়া ছাড়া আর কিছুই নয়। ধর্মীয় শিক্ষা যত সঙ্কুচিত হবে, জাতি হিসেবে আমাদের স্বকীয়তা ততটাই বিচ্যুতির গহ্বরে পড়বে।
এ দেশের আলেম-ওলামা, পীর-মাশায়েখ এবং দ্বীনদার বুদ্ধিজীবীদের সরকার ‘দালাল ও স্বাধীনতার শত্রু’র কাতারে নামিয়ে ভুল করেছে। ইসলামি লেবাস ও হিজাবকে কটাক্ষ করে যে অন্যায় করেছে তার খেসারত জাতি এখন দিতে বাধ্য হচ্ছে। সিলেবাস থেকে ইসলাম উচ্ছেদের যে অভিযোগ সেটা মাত্র ১০ ভাগ সত্য হলেও অদূরভবিষ্যতে আমরা এর কুফল দেখতে বাধ্য হবো। জঙ্গিবাদ, উগ্রপন্থা ও সন্ত্রাসসদৃশ যেসব উপসর্গ এখন দেখা দিচ্ছে তার দায় থেকে সরকারের নীতি ও ভুল কৌশলকে কিভাবে আলাদা করা যাবে!
সরকার চাইলে কিংবা নিষ্ঠাবান হলে কিছু কাজ করতে পারে। যেমন- আলেমসমাজ দেওবন্দ ধারার অনুসরণ করতে আগ্রহী। ভারত ও উত্তর প্রদেশের রাজ্য সরকারের নীতি অনুসরণ এ ক্ষেত্রে একটা পথ হতে পারে। দেশের গ্রহণযোগ্য আলেমদের নিয়ে গঠিত একটি কমিটির ওপর এ ব্যাপারে দায়িত্ব ছেড়ে দিতে পারে। কওমি মাদরাসা বোর্ড নামে কওমি ধারার স্বীকৃত ব্যবস্থাটিকে অনুমোদন দিতে পারে।
যুক্তির কথা হচ্ছে, সরকারের কাছে স্বীকৃতি চাইলে সরকার কিছু শর্ত পূরণের তাগিদ দেবেই। সেটা হতে হবে বিধিবদ্ধ ব্যবস্থা, যার আইনি স্বীকৃতির প্রয়োজন পড়বে। এই ‘যন্ত্রণা’ বা খবরদারি সহ্য না করতে চাইলে নিজেদের সনদের স্বীকৃতি নিজেদেরই দিতে হবে। স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ধর্মীয় শিক্ষকতা করতে হলেও একটা বিধিব্যবস্থায় না গেলে সম্ভব নয়। কওমি আলেমরা একসময় গর্ব করে বলতেন, তাদের স্বীকৃতির প্রয়োজন নেই। ’তাদের শিক্ষা আল্লাহর জন্য। নিজেদের নাজাতের জন্য। দ্বীনের জন্য।’ এখনো সে নীতির ওপর প্রতিষ্ঠিত থাকলে স্বীকৃতির প্রশ্ন অবান্তর।
সবার মেনে নেয়া উচিত, সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া। এর সাথে দ্বিমত পোষণ করা যায়; কিন্তু মানুষ নিজের অজান্তেই যুগজিজ্ঞাসার মুখোমুখি দাঁড়ায়। সংস্কার মানে যুগ জিজ্ঞাসার মুখোমুখি দাঁড়িয়ে নিজেকে প্রস্তুত করা। মানুষ ধীরে ধীরে পাল্টে যায়; কিন্তু সত্য-মিথ্যা ও হক বাতিলের সংজ্ঞা পাল্টায় না। মৌলিক বিশ্বাস পাল্টায় না। কওমি শিক্ষাধারায় কতটা সংস্কারের ছোঁয়া লাগালে মৌলিকত্ব ক্ষুণ্ণ হবে না- সেটাও নিশ্চিত করার দায়দায়িত্ব ওলামা নেতৃত্বকেই নিতে হবে। এ ক্ষেত্রে সুপরিচিত ইসলামিব্যক্তিত্ব ডক্টর তকি উসমানির একটা অভিমত নেয়া বোধ করি সবার জন্য কল্যাণকর হবে। কারণ তিনি আধুনিক মানসম্পন্ন একজন দ্বীনদার ও প্রজ্ঞাবান আলেমে দ্বীন। তার চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যটি এমন যে, পারলে সবার উপকার করেন, কারো ক্ষতির কথা ভাবেনও না।