কমাশিসা বিশেষ প্রতিবেদন: বেফাকের উদ্দেশ্য কি আমরা জানিনা। বেফাক জাতিকে কি বুঝাতে চায় তাও পরিস্কার নয়। আল্লামা ফরিদ উদ্দিন মাসুদ সাহেব যখন নড়াচড়া করেন বেফাক তখন একটু নড়েচড়ে বসে। আচ্ছা বেফাককে আমরা কি এজন্য বোর্ড বানিয়েছি? সে শুধু মাসুদ সাহেবের পিছনে ঘুর ঘুর করে ফিরবে? উনি যা করবেন তার বিপরীত কাজ করাই তাদের নিত্যদিনের কর্মসুচি? আমরা কমাশিসার পক্ষথেকে বছর দেড়েক আগে বেফাকের অফিসে গিয়ে আনুষ্টানিক ভাবে কথা বলেছি। কমাশিসার ২য় সিরিজ হাতে তুলে দিয়ে দীর্ঘ দুই ঘন্টার ইন্টারভিউ নিয়েছি। বলেছি সিলেবাস সংস্কারের কাজ আগাইয়া নিতে। গবেষণা পরিষদ গঠন করতে। কওমির মেধাবী তরুণদের কাজে লাগাতে। প্রয়োজনে আমরা ফান্ড দেবো। উনারা আশ্বাস দিলেন। সব বিষয়ে মহাসচিব সাহেব ডিপ্লোমেসি জবাব দিতে দেখেছি। ফিরে এসে বার বার ফোনে যোগাযোগ করে জানার চেষ্টা করেছি যে কাজ এগুলো কিনা? না তিনি চিন্তা করার সময় পাননি। কামাশিসা সিরিজ যা ছিলো আমাদের গবেষণা কর্ম তা খোলে দেখার সময় হয়ে উঠেনি। ঠিক আছে আমাদেরটা নাই খোললেন, আমাদের পরামর্শ হয়তো খুব পছন্দ লাগেনি। তাহলে কি করে চলেছেন উনারা? আবুল তাবুল বকে চলেছেন। যখন যেখানে যা খুশি যা সুবিধা সেভাবে বক্তব্য দেয়া। বোর্ডকে গুছিয়ে আনা জরুরি কাজ। সিলেবাস সংস্কার একটি অপরিহার্য্য বিষয়। দেশে চলমান স্যাকুলার শিক্ষাব্যবস্থায় বেফাক কার্যকর কোন ভুমিকা রাখা তো দুরে থাক কারো যেন শিখন্ডি হয়ে কাজ করতে লাগলো। আমরা দেশের অপরাপর বোর্ড গুলোকে তেমন গুরুত্ব দেইনি যেমন করে বেফাককে দিলাম। বেফাকের ভুলগুলো ধরে শুধারানোর আহ্বান জানালাম।হিতে বিপরীত হলো। তারা কওমির দুশমন বলে আমাদের দোষারোপ করে মিডিয়ায় বিবৃতি দিলেন। মানে ভুলকে আকড়াইয়া ধরা, গোমরাহির দিকে ধাবিত হওয়াকে বেফাক নিজের কর্তব্য মনে করে বসলো। সংস্কার স্বীকৃতি হয়ে উঠলো বেফাকের চক্ষুশুল। কিন্তু তরুণরাতো বসে থাকতে পারেনা।আমরা খুঁচাতে লাগলাম। একের পর এক প্রতিবেদন দিয়ে বেফাকের টনক নাড়ানোর চেষ্টা করি। কিন্তু বেফাক ততটুকু দুরে সরে যায় বাস্তবতা থেকে যতটুকু কাছে টানার চেষ্টা করি আমরা। আমরা সংস্কার এবং স্বীকৃতির জন্য বিরামহীন লিখছি সেমিনার করে প্রবন্ধ সিরিজ বই প্রকাশ করে আসছি। কিন্তু বেফাক ভাবে এসব তাদের বিরুদ্ধে দুশমনি। আমাদের আন্দোলনের একপর্যায়ে আল্লামা ফরিদ উদ্দিন মাসুদ সাহেবকে ময়দানে নিরলস ভাবে কাজ করতে দেখি। প্রথম ভাবছিলাম হয়তো লোকদেখানো হবে কিছু। কিন্তু গভীরে গিয়ে পেলাম বা্স্তবতা। দীর্ঘ ৩২ বছর আগে যার একটি বই আমি পড়েছিলাম, নাম ছিলো ইসলামে শ্রমিকের অধিকার। ছোট বয়সে বুঝার জন্য তিন তিনবার পড়তে হয়েছে। আর সেই তিনি কি না এখন কওমি সনদের স্বীকৃতির বিষয়ে কাজ করছেন। পরে উনার কাছে লোকমারফত প্রস্তাব দিলাম যে, অন্য কোন নির্ভরযোগ্য আলেমকে চেয়ারম্যান বানানো যায় কিনা? তিনি প্রস্তাবটি সাদরে গ্রহন করে একে একে ৫-৬ জন দেশের সেরা উলামার কাছে স্ববিনয়ে পদ গ্রহন করার আকুতি জানালেন। সকলে বললেন দেখুন মাসুদ সাহেব আপনার উপর আমাদের আস্থা আছে অতএব আপনি কাজ করতে থাকুন। আমি খুব আশা করেছিলাম হজরত আহমদ শফী দামাত বারাকাতুহুম উনাকে ডেকে এনে সকলের সাথে মিলে মিশে কাজ করার কথা বলবেন। কিন্তু তা হলোনা।
বেফাকের অফিস কোথায় মিটিং কেন হয় চট্টলায়?
বেফাকের আজগুবি অভিনয় আমাদের হতবাক করে দিচ্ছে। যে বোর্ডের নিজস্ব অফিস আছে ঢাকায়। জনবল সবকিছু ঢাকায়। এই সমস্তকে জলাঞ্জলি দিযে চট্টলায় বার বার যাওয়ার কারণ কি? হজরত আহমদ শফী হুজুর অসু্স্থ। তাকে প্রয়োজনে বিমানে ঢাকায় নিয়ে আসা যায়না? ডজনের ডজনকে বিমানের টিকেট দিয়ে সেখানে নেওয়ার চেয়ে একজনকে আনা কি মুশকিল বাত? ভিডিও কন্ফারেন্সে কি মিটিং করা যেতোনা উনার সাথে? না, নিছক একটা ভেলকিবাজি মনো হলো। সময়ের অপচয় চলমান স্বীকৃতিকে বাধাগ্রস্ত করা। কেন ? কেন ? কেন ? জাতি জানতে চায়? বেফাকের কার্যকরি কমিটির সকল সদস্যকে নিয়ে মিটিং না করার কারণ কি? বেফাক কেন মজলিসে শুরা সদস্যদের ডাকেনা। তাদের সংগে কেন মশওয়ারা করেনা? নিজের বোর্ডের লোকবলকে ঘুমে রেখে ফাঁকি দিয়ে এড়িয়ে চলে লাল কালির ক্রস দিয়ে বেফাক মহাসচিব ও কিছু সাথীগণ কি করতে চান? এখনো সময় আছে সুজা পাথে চলে আসুন। শিক্ষা নিয়ে নাটকের রিহার্সেল আর দিবেন না। লোককে আর হাসাবেন না প্লীজ।
আমরা দেখতে পাচ্ছি যে বেফাক এখন একটি ডুবন্ত জাহাজ। সুনামের উচ্চ শিখরে পৌছে মানুষ যে দুর্নামের অতল গহবরে এতো তাড়াতাড়ি পতিত হতে পারে তার জ্বলন্ত উদাহরণ বেফাক্। বেফাক এখনো বুঝতে পারছেনা যে সে ঘোড়ার উপর সওয়ার হযেছে নাকি গাধার উপর। আল্লাহ তায়ালা আমাদের সকলের সুমতি দান করুন।আমীন।