ভূমিকা
শিক্ষাই জাতির মেরুদণ্ড। জাতির আলোর পথের দিশারী। আদর্শ জাতি ও সভ্য সমাজ গঠনে খোদা প্রদত্ত জ্ঞান-বিজ্ঞান তথা মাদরাসা শিক্ষার কোনো বিকল্প নেই। কারণ তার গ্যারান্টি এক-দুই যুগের নয়; বরং শত-সহস্র যুগের। এর চেয়েও বেশি। কিন্তু একসময় ইংরেজদের আগ্রাসনের কবলে পড়ে এ দ্বীনী শিক্ষাব্যবস্থা পাক-ভারত উপমহাদেশ থেকে বিলীন হওয়ার উপক্রম হয়ে পড়েছিলো। দ্বীনী শিক্ষার ঐ চরম দুর্দিনে মুসলিম জাতিকে রক্ষা এবং দ্বীনি শিক্ষার পুনর্জাগরণের দ্বীপ্ত প্রত্যয় নিয়ে ১৮৬৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় বিশ্ববিখ্যাত ইসলামী বিদ্যাপীঠ “দারুল উলূম দেওবন্দ”। ফলে গড়ে উঠে পাক-ভারতসহ বিশ্বের আনাচে-কানাচে শত-সহস্র দ্বীনী শিক্ষাগার। এসব মাদরাসাকেই মাদারিসে ক্বাওমিয়া বা দেওবন্দী মাদরাসা হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। এ সূত্র ধারায় খলীফায়ে মাদানী রাহ. হযরত শায়খে রেঙ্গা রাহ.’র স্মৃতি বিজড়িত বাংলাদেশের ঐতিহাসিক দ্বীনি বিদ্যাপীঠ, সিলেট বিভাগের বৃহত্তম ক্বওমী মাদরাসা “জামেয়া তাওয়াক্কুলিয়া রেঙ্গা” ১৯১৯ সালে প্রতিষ্ঠা লাভ করে। যার বানী হলেন হযরত মাওলানা শায়খ আরকান আলী রাহ.।
জামেয়ার অবস্থান
আধ্যাত্মিক রাজধানী সিলেটের দক্ষিণ সুরমা উপজেলা ও মোগলা বাজার থানার অন্তর্গত বিভাগীয় শহর সিলেট থেকে মাত্র ১৩ কি.মি. দূরত্বে রেলপথ ও বিশ্বরোড সংলগ্ন ঐতিহ্যবাহী রেঙ্গা এলাকায় জামেয়া অবস্থিত। মাদরাসার উত্তরে মোগলা বাজার ও দক্ষিণ সুরমা উপজেলা ভবন, দক্ষিণে হাজীগঞ্জ বাজার ও কুশিয়ারা নদী, উত্তর-পূর্ব কোণে দাউদপুর ইউনিয়ন এবং পশ্চিমে জালালপুর ইউনিয়ন ও গহরপুর মাদরাসা অবস্থিত।
দাওরায়ে হাদীসের সূচনা
হযরত শায়খে রেঙ্গা রাহ.’র নিপূণ পরিচালনা এবং এলাকাবাসীর সার্বিক সহযোগিতায় জামেয়া হাটি হাটি পা পা করে উন্নতির দিকে যাত্রা করে। তখন বৃহত্তর সিলেটের চতুর্দিকে জামেয়ার সুনাম-সুখ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে। পার্শ্ববর্তী এলাকার ছাত্রসমাজ ছাড়াও বহু দূর-দূরান্ত থেকে হেরার বাণী আহরণে ছাত্ররা দলে দলে আসতে থাকে। একসময় প্রয়োজন দেখা দেয় টাইটেল ক্লাস খোলার। তখন এলাকার কতিপয় নেতৃস্থানীয় লোকেরা শায়খে রেঙ্গা রাহ’র নিকট দ্বীনি শিক্ষার সর্বোচ্চস্তর টাইটেল ক্লাস খোলার আবেদন জানান। তাঁদের আহবানে সাড়া দিয়ে হযরত শায়খে রেঙ্গা রহ. ১৩৮৮ হিজরি সনে এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করেন এবং দেশবরেণ্য উলামায়ে কেরামের উপস্থিতিতে দাওরায়ে হাদীস তথা টাইটেল ক্লাসের শুভ উদ্ভোধন করেন। প্রথম শায়খুল হাদীস হিসেবে আল্লামা কমরুদ্দীন রাহ. কে নিয়োগ দেয়া হয়। তিনি নিষ্টার সাথে প্রায় দু’বছর যাবত এ দায়িত্ব পালন করেন। অতঃপর দ্বিতীয় শায়খুল হাদিস হিসেবে শায়খে কৌড়িয়া রাহ.’র আজল্লে খলীফা উস্তাযুল আসাতিযা আল্লামা শিহাব উদ্দিন দা.বা. কে নিযুক্ত করা হয়। তিনি ১৩৯০ হিজরি থেকে অদ্যাবধি প্রায় ৪৭ বছর যাবত এ গুরু দায়িত্ব আনজাম দিয়ে যাচ্ছেন। আমরা তার দীর্ঘায়ূ কামনা করি।
শিক্ষা প্রকল্প
জামেয়ার শিক্ষা প্রকল্প মোট ছয়টি বিভাগে বিভক্ত (১) তাকমিল ফিল হাদিস (২) ফযিলত (৩) সানোবিয়্যাহ (৪) মুতাওয়াসসিতাহ (৫) ইবতিদাইয়্যাহ তথা মক্তব (৬) তাহফীযুল কুরআন।
বর্তমান মুহতামিম
জামেয়ার স্থপতি হযরত মাওলানা শায়খ আরকান আলী রাহ. ১৯১৯ ঈসায়ি সনে প্রথম মুহতামিম নিযুক্ত হন। দ্বিতীয় মুহতামিম হিসেবে হযরত আল্লামা বদরুল আলম শায়খে রেঙ্গা রাহ. দায়িত্ব পালন করেন এবং প্রথম নায়েবে মুহতামিম হিসেবে দায়িত্ব আনজাম দেন হযরত মাওলানা সিকন্দর আলী রাহ.। অতঃপর শায়খে রেঙ্গা রাহ. যখন বৃদ্ধ হয়ে পড়েন, তখন মাদরাসার এহতেমামের দায়িত্ব আনজাম দেয়ার লক্ষে হযরত মাওলানা শামছুল ইসলাম খলীল সাহেব দা.বা কে নিযুক্ত করা হয়। তিনি ১৯৭৭ ঈসায়ী সন থেকে শুরু করে ২০১২ ইং পর্যন্ত মোট ৩৫ বছর এ গুরু দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করেন। তিনি মাযূর হয়ে পড়লে এলাকাবাসীর পরামর্শের ভিত্তিতে সাহেবজাদায়ে হযরত শায়খে রেঙ্গা রাহ. হযরত মাওলানা মুহিউল ইসলাম বুরহান সাহেবকে মুহতামিম হিসেবে নিযুক্ত করা হয়। বর্তমানে তিনি দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন।
কুতুবখানা
কুতুবখানা একটি আদর্শবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। এ বিভাগে গড়ে উঠে জাতির আশান্বিত কাণ্ডারী। বর্তমানে জামেয়ার গ্রন্থাগারে কয়েক হাজার কিতাবাদি ও বই-পুস্তক বিদ্যমান রয়েছে।
ফাতওয়া ও ফরায়েয বিভাগ
মুসলিম উম্মাহ দৈনন্দিন জীবনে ও প্রাত্যহিক বিষয়ে শরীয়ত মোতাবেক আমল করতে গিয়ে যেসব সমস্যার সম্মুখীন হন, যেমন- বিয়ে-তালাক, লেনদেন, মীরাস বণ্টন ও অন্যান্য মাসআলা-মাসাইল। সেই সব সমস্যার সমাধান ও সেবা করার লক্ষে জামেয়ার ফাতওয়া বিভাগ কাজ করে যাচ্ছে। চলতি বছর ডিসকভারী হজ্জ কাফেলা কর্তৃক প্রদত্ত তিনটি জটিল প্রশ্নের যুগোপযোগী সুন্দর সমাধান পেশ করেছে জামেয়ার ফাতওয়া বিভাগ। এ ভাবে প্রায়ই করে থাকে।
ছাত্র সংসদ পাঠাগার
বই-পুস্তক হচ্ছে ছাত্রদের মূল্যবান সম্পদ। জ্ঞানের প্রধান উৎস। জামেয়ার বিরাট কুতুবখানা থাকা সত্ত্বেও ছাত্রদের জন্য স্বতন্ত্রভাবে একটি পাঠাগার রয়েছে। দারসিয়্যাত পড়াশোনার ফাঁকে ফাঁকে ছাত্রদের বহুমূখী প্রতিভা বিকাশের লক্ষে জামেয়া ‘ছাত্র পাঠাগার’ চালু করেছে।
আল আরকান
কলম সৈনিক ও আদর্শ লেখক গড়ে তোলার লক্ষে সহিত্য চর্চার জন্য নিয়মিত প্রকাশিত হচ্ছে আরবী বাংলা দেয়ালিকা ‘আল-আরকান’। ছাত্রদের কাঁচা হাতকে পাকা এবং ভাঙ্গা কলমে চাঙ্গা করার নিমিত্ত্বে জামেয়া থেকে আরবী-বাংলা এ দু’টি ধারায় দেয়ালিকা প্রকাশ করা হয়।
আল আরকান আরবী সাহিত্য পরিষদ
ছাত্রদেরকে জাদীদ আরবীর সাথে নিবিড় সম্পর্ক কায়েম করার লক্ষে অভিজ্ঞ শিক্ষকম-লী দ্বারা আরবী সাহিত্য চর্চার উদ্যোগ নিয়েছে জামেয়া। গঠন করেছে ‘আল আরকান আরবী সাহিত্য পরিষদ’। এর অধীনে প্রতি মাসে দু’টি আরবী সাহিত্য সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। এবং প্রতি দুই মাস পর পর ‘আল বদরুল মুনীর’ নামে একটি আরবী সাহিত্য ম্যাগাজিন প্রকাশিত হয়।
কমপিউটার ও ইন্টারনেট বিভাগ
চলতি বছর থেকে জামেয়ায় কমপিউটার ও ইন্টারনেট শাখা চালু হয়েছে। প্রাথমিকভাবে জামেয়ার তরুণ আসাতিযায়ে কেরাম ছাড়াও ছাত্ররা আইটি প্রশিক্ষণে অংশ নিচ্ছেন। ১২টি কমপিউটার দ্বারা এ বিভাগটি চালু রয়েছে।
মুনাযারা ও মুবাহাসা
সর্বপ্রকার ফিতনা-ফাসাদ ও বাতিল মতবাদের মুখোশ উন্মোচন এবং তার প্রমাণ ভিত্তিক দাঁতভাঙ্গা জবাব দেবার মত ব্যক্তিত্ব তৈরি করতঃ ঘুমন্ত প্রতিভাকে জাগ্রত করার লক্ষে জামেয়ার বিজ্ঞ শিক্ষকমণ্ডলী নিজেদের তত্ত্বাবধানে ছাত্রদের মধ্যে ফান্নী ও গায়রে ফান্নী বিভিন্ন বিষয়ের উপর বাহাস-মুবাহাসা ও বির্তক অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা করে থাকেন।
দারুল ইক্বামা
দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে আগত ইলম পিপাসু ছাত্রদেরকে কলুষিত সমাজ ও বল্গাহীন পরিবেশ থেকে মুক্ত রাখার লক্ষে জামেয়ায় ছাত্রাবাসের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। বর্তমানে প্রায় ৫০০ জন ছাত্র দারুল ইক্বামায় অবস্থান করছে।
ছাত্র সংখ্যা
তাকমীল ফিল হাদীস ১৪৬ জন। ফযিলত বিভাগ ১৬২ জন। সানাবিয়্যাহ বিভাগ ১৯৪ জন। মুতাওয়াসসিতা বিভাগ ২৩১ জন। ইবতিদাইয়্যাহ বিভাগ ৩৮৫ জন। হিফয বিভাগ ১৫৬ জন সর্বমোট ১২৭৪ জন।
উল্লেখ্য, ৪০জন সুদক্ষ শিক্ষকম-লীর মাধ্যমে ছাত্রদেরকে দারস প্রদান করা হচ্ছে। এছাড়াও ৭ জন কর্মচারি জামেয়ার খেদমতে নিয়োজিত আছেন।
জামেয়ার ফান্ড
জামেয়ার মোট পাঁচটি ফান্ড রয়েছে- (১) জেনারেল ফান্ড (২) গরীব ফান্ড (৩) বিল্ডিং ফান্ড (৪) কিতাব ফান্ড (৫) বৃত্তি ফান্ড। জেনারেল ফান্ড-এর আয় থেকে আসাতিযায়ে কেরাম ও কর্মচারিদের বেতন-ভাতা প্রদান করা হয়। নির্মাণ খাতে বিল্ডিং ফান্ডের টাকা-পয়সা এবং দরিদ্র ছাত্রদের অন্ন ও চিকিৎসা খাতে গরীব ফান্ডের অর্থ খরচ করা হয়। কিতাব ফান্ড থেকে গরীব ছাত্রদের জন্য বই পুস্তক সরবরাহ করা হয়। এবং বৃত্তি ফান্ডের আয় থেকে মেধাবী ছাত্রদের মেধানুসারে বৃত্তি প্রদান করা হয়।
জামেয়ার লক্ষ্য-উদ্দেশ্য
(১) মহান আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি অর্জন এবং সুন্নতে নববীর পদাংক অনুসরণ। (২) সাহাবায়ে কেরাম ও আইম্মায়ে দ্বীনের গবেষণাপ্রসূত জ্ঞানের আলোকে কুরআন-সুন্নাহর পরিপূর্ণ শিক্ষা প্রদান। (৩) আকাঈদে আহলুস সুন্নাত ওয়াল জামাত ও ফিকহে হানাফীর সংরক্ষণ এবং দেওবন্দী সিলসিলার তালীম ও তারবিয়্যাতের যথাযথ বাস্তবায়ন। (৪) ইলমে দ্বীন হাসিলের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের জীবনে নেক আমল ও সুন্দর আখলাক ফুটিয়ে তোলা। (৫) শিক্ষার্থীদের দেশ, জাতি ও ধর্মের জন্য আত্মানিবেদিতপ্রাণ, সুযোগ্য আলেম, বিজ্ঞ মুহাদ্দিস, প্রাজ্ঞ মুফাসসির, যোগ্য মুফতী, হাফেজ, ওয়ায়েজ, বিদগ্ধ কলম সৈনিক, মুবাল্লিগ ও বীর মুজাহিদরূপে গড়ে তোলা।
জমেয়ার অবদান
জামেয়ার বয়স প্রায় ৯৬ বছর। একে একে নয়টি দশক পাড়ি দিয়ে জামেয়ার তরী আজ শতকের তীরে। এরই মধ্যে জমেয়া কতই-না খেদমাত আনজাম দিয়েছে। গঠন করেছে কতই-না ব্যক্তি, তার কোনো ইয়ত্তা নেই। বিশেষ করে রেঙ্গা এলাকাকে সমগ্র দেশবাসীর কাছে পরিচিত করে তুলেছে। ১৩৮৮ হিজরী থেকে শুরু করে ১৪৩৭ হিজরী অবধি প্রায় দু’হাজার আলেম-উলামা জন্মদান করেছে। এইসব আলেম-উলামা জামেয়া থেকে ফারিগ হয়ে স্বদেশসহ বহির্বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে দ্বীন ইসলামের বহুমুখী খিদমাত আনজাম দিয়ে যাচ্ছেন। সূচনালগ্ন থেকেই জামেয়া কৃতিত্বের সাথে কেন্দ্রীয় পরীক্ষায় সম্মানজনক স্থান লাভ করতঃ ভালো ফলাফল করে আসছে। সর্বদিক বিবেচনায় এ জামেয়া আলেম-উলামা ও সূধী মহলের কাছে সমাদৃত।
যাদের পদধুলিতে জামেয়া ধন্য
দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের উন্নতির অন্যতম সোপান হল মহামনীষীদের নেক তাওয়াজ্জুহ ও তাদের আন্তরিক দোয়া। আলহামদুলিল্লাহ! জামেয়া প্রতিষ্ঠার পর থেকে এখানে দেশি-বিদেশি খ্যাতিমান বহু পীর-মাশায়েখ, আলেম-উলামা তাশরীফ এনেছেন, জামেয়ার মকবুলিয়াতের জন্য আল্লাহর দরবারে দোয়া করেছেন এবং জামেয়া সম্পর্কে নিজেদের অভিব্যক্তি তুলে ধরেছেন। তন্মধ্যে কয়েকজন হলেন- শায়খুল ইসলাম আল্লামা সায়্যিদ হুসাইন আহমদ মাদানী রাহ., আল্লামা সুলায়মান নদভী রাহ., আল্লামা আসআদ মাদানী রাহ., আল্লামা সাঈদ আহমদ পালনপুরী দা.বা., আল্লামা তক্বী উসমানী দা.বা., আল্লামা আরশাদ মাদানী দা.বা., আল্লামা আব্দুল হক আযমী দা.বা., আল্লামা মুফতি সালমান মনসুরপুরী দা.বা., মাওলানা মাহমুদ মাদানী দা.বা., আল্লামা আব্দুল করীম শায়খে কৌড়িয়া রাহ., আল্লামা আতহার আলী রাহ., আল্লামা মুশাহিদ বায়ুমপুরী রাহ., আল্লামা রিয়াছত আলী চৌঘরী রাহ., আল্লামা শায়খে গাজীনগরী রাহ., আল্লামা গহরপুরী রাহ., আল্লামা বশির আহমদ শায়খে বাঘা রাহ., আল্লামা শায়েখ আব্দুল্লাহ হরীপুরী রাহ., আল্লামা কাতিয়া রাহ. প্রমুখ উলামাগণ।
[সংগৃহীত……]